১৫০ আসনে যন্ত্রে ভোট ‘২ লাখ ইভিএম ক্রয়’ প্রকল্প, চূড়ান্ত হতে পারে আগামী সপ্তাহে

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে যন্ত্রে ভোট করতে আরও দুই লাখ ইভিএম ক্রয় করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ লক্ষ্যে গৃহীত একটি প্রকল্প প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি কমিশন।

মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসির সপ্তম সভায় ‘ইভিএমের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সভা শেষে ইসি সচিব হুমায়ূন কবির খোন্দকার সাংবাদিকদের জানান, ইভিএমের বাজার যাচাইয়ে যে কমিটি করা হয়েছিল তারা আরও যাচাই-বাছাই করে আগামী সপ্তাহে কমিশনে রিপোর্ট দেবে, সেই অনুসারে নেয়া হবে সিদ্ধান্ত। ইসি সচিব বলেন, প্রতিটি ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) দাম কত হতে পারে, তার বাজারদর যাচাইয়ের জন্য একটি কমিটি করা হয়েছিল। তারা এখনও কাজ শেষ করতে পারেনি। ওই কমিটি বাজারদর যাচাই করবে। পরবর্তী কমিশন সভায় এটি তুলে ধরা হবে। তখন সব পর্যালোচনা করে কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী সোমবার কমিশনের সভায় এই সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানান সচিব।

প্রকল্পের ব্যয় সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হুমায়ূন কবির বলেন, এখনও এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। সোমবার কমিশন সভা হলে তখন বিস্তারিত জানানো হবে।

রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দেড়শ’ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। তাদের হাতে এখন দেড় লাখ ইভিএম আছে, যা দিয়ে ৭০ থেকে ৮০টি আসনে ভোট করা সম্ভব হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে প্রায় চার লাখ টাকার প্রকল্প নিয়ে এসব ইভিএম কেনা হয়েছিল। এখন এক দিনে ১৫০ আসনে ভোট করতে হলে আরও প্রায় ২ লাখ ইভিএম প্রয়োজন হবে।

ইসির সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকা প্রতি ইউনিট ধরে দুই লাখ ইভিএম কেনার পরিকল্পনা সাজায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। ট্রান্সপোর্ট, জনবল ও ওয়্যারহাউসসহ প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা।

ইসিতে প্রস্তাব অনুমোদিত হলে তা পরিকল্পনা কমিশনে ডিপিপির (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) জন্য পাঠানো হবে। চলতি মাসে ডিপিপি পাঠানো সম্ভব হলে সব প্রক্রিয়া শেষ করে ডিসেম্বরের ইভিএমের দ্বিতীয় প্রকল্পটি সরকারের অনুমোদন পেতে পারে বলে আশা করছেন ইসি সচিবালয় সংশ্লিষ্টরা।

বিরোধীদল বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের ইভিএম বিরোধী অবস্থানের মধ্যে সম্প্রতি দেশের ৩৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ইভিএম ক্রয়ে ‘বিশাল বাজেট’ ব্যয়ের যৌক্তিকতা নিয়েও ভেবে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা।

বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৩০ ভাদ্র ১৪২৯ ১৭ সফর ১৪৪৪

১৫০ আসনে যন্ত্রে ভোট ‘২ লাখ ইভিএম ক্রয়’ প্রকল্প, চূড়ান্ত হতে পারে আগামী সপ্তাহে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে যন্ত্রে ভোট করতে আরও দুই লাখ ইভিএম ক্রয় করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ লক্ষ্যে গৃহীত একটি প্রকল্প প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি কমিশন।

মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসির সপ্তম সভায় ‘ইভিএমের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সভা শেষে ইসি সচিব হুমায়ূন কবির খোন্দকার সাংবাদিকদের জানান, ইভিএমের বাজার যাচাইয়ে যে কমিটি করা হয়েছিল তারা আরও যাচাই-বাছাই করে আগামী সপ্তাহে কমিশনে রিপোর্ট দেবে, সেই অনুসারে নেয়া হবে সিদ্ধান্ত। ইসি সচিব বলেন, প্রতিটি ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) দাম কত হতে পারে, তার বাজারদর যাচাইয়ের জন্য একটি কমিটি করা হয়েছিল। তারা এখনও কাজ শেষ করতে পারেনি। ওই কমিটি বাজারদর যাচাই করবে। পরবর্তী কমিশন সভায় এটি তুলে ধরা হবে। তখন সব পর্যালোচনা করে কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী সোমবার কমিশনের সভায় এই সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানান সচিব।

প্রকল্পের ব্যয় সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হুমায়ূন কবির বলেন, এখনও এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। সোমবার কমিশন সভা হলে তখন বিস্তারিত জানানো হবে।

রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দেড়শ’ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। তাদের হাতে এখন দেড় লাখ ইভিএম আছে, যা দিয়ে ৭০ থেকে ৮০টি আসনে ভোট করা সম্ভব হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে প্রায় চার লাখ টাকার প্রকল্প নিয়ে এসব ইভিএম কেনা হয়েছিল। এখন এক দিনে ১৫০ আসনে ভোট করতে হলে আরও প্রায় ২ লাখ ইভিএম প্রয়োজন হবে।

ইসির সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকা প্রতি ইউনিট ধরে দুই লাখ ইভিএম কেনার পরিকল্পনা সাজায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। ট্রান্সপোর্ট, জনবল ও ওয়্যারহাউসসহ প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা।

ইসিতে প্রস্তাব অনুমোদিত হলে তা পরিকল্পনা কমিশনে ডিপিপির (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) জন্য পাঠানো হবে। চলতি মাসে ডিপিপি পাঠানো সম্ভব হলে সব প্রক্রিয়া শেষ করে ডিসেম্বরের ইভিএমের দ্বিতীয় প্রকল্পটি সরকারের অনুমোদন পেতে পারে বলে আশা করছেন ইসি সচিবালয় সংশ্লিষ্টরা।

বিরোধীদল বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের ইভিএম বিরোধী অবস্থানের মধ্যে সম্প্রতি দেশের ৩৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ইভিএম ক্রয়ে ‘বিশাল বাজেট’ ব্যয়ের যৌক্তিকতা নিয়েও ভেবে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা।