ভারতকে উড়িয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

মেয়েদের সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়শিপের ভারতকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। জোড়া গোল করেন সিরাত জাহান স্বপ্না, একটি কৃষ্ণা রানী। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ ভুটানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

গতকাল নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে হওয়ার লড়াইয়ে টানা দুই জয়ে আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছিল দুই দল। গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকায় এ ম্যাচ ড্র করলে গ্রুপ সেরা হতো ভারত। মালদ্বীপকে ৩-০ গোলে হারিয়ে সাফের ষষ্ঠ আসরে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে গুড়িয়ে দিয়েছিল ৬-০ ব্যবধানে।

ম্যাচের শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ছিল বাংলাদেশ। ৭ম মিনিটে ভারতীয় জালে বল পাঠিয়ে গোল উদযাপন করলেও ফাউলের নির্দেশ দিয়ে গোলটি বাতিল করেন কর্তব্যরত রেফারি ওম চাকি।

তবে এতে দমে না গিয়ে আরও উজ্জীবিত হয়ে খেলতে থাকেন সাবিনা কৃষ্ণারা। ম্যাচের ১২তম মিনিটেই ফের গোল আদায় করে নেয় লাল সবুজের দল। এ সময় সাবিনার যোগান থেকে বল পেয়ে কৃষ্ণা বল পাঠিয়ে দেন ডি বক্সে স্বপ্নাকে। স্বপ্না প্লেসিং শটে গোল করেন (১-০)। ম্যাচের ২২ তম মিনিটে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। শিউলি আজিমের থ্রোয়ের বল নিয়ে কৃষ্ণা প্রথমে স্বপ্নাকে দেন। তার কাছ থেকে বলটি পেয়ে দারুণ শটে গোল করেন কৃষ্ণা (২-০)।

এর আগে ১৯ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ রচনা করেছিল ভারত। এ সময় তাদের প্রতিহত করতে গিয়ে ডি-বক্সের বাইরে ফাউল করে বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা। ফলে ফ্রি কিক পায় ভারত। কিন্তু চ্যাম্পিয়নদের হয়ে প্রিয়াঙ্কা দেবীর শটের বল বাংলাদেশের গোল পোস্টের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়।

ম্যাচের ৩১ ও ৩৬ মিনিটে সানজিদা ও মনিকার ভুলের কারণে ফিনিশিং টানতে পারেনি বাংলাদেশ। এই সময় বাংলাদেশ দলের আক্রমণ সামলাতে ডিফেন্ডার জুলিকি শানের পরিবর্তে মার্গারেট কাস্টানহাকে মাঠে পাঠায় ভারত। শেষ পর্যন্ত ২-০ ব্যবধানের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফেরার পর আবারও ভারতীয়দের চেপে ধরে বাংলাদেশ। সুফল পেতে এবারও খুব বেশি দেরি হয়নি। ৫৩ মিনিটে সাবিনার থ্রু পাসে বল নিয়ে স্বপ্না গোল রক্ষককে একা পেয়ে বাঁ-পায়ে বল জালে জড়ান (৩-০)।বাকি সময় আর কোন দলই গোল করতে পারেনি।

৩ গোলের জয়ে নতুন ইতিহাস গড়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েদের ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে ভারতের অপরাজেয় যাত্রার রাশ টেনে ধরল বাংলাদেশ। আগের পাঁচ আসরে শিরোপা জয়ী ভারত ২২ ম্যাচ খেলে জিতেছিল ২১টি, ড্র একটি। ওই একমাত্র ড্র ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে; ২০১৬ সালে শিলিগুড়ির আসরে।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ভারতের বিপক্ষে খেলা আগের ১০ ম্যাচে বাংলাদেশের হার ছিল ৯টি, ড্র ওই একটি। ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙার ইঙ্গিত মেয়েরা দিতে থাকে শুরু থেকে। আত্মবিশ্বাসী এক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে তাদের খেলায়।

বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৩০ ভাদ্র ১৪২৯ ১৭ সফর ১৪৪৪

ভারতকে উড়িয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

image

মেয়েদের সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়শিপের ভারতকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। জোড়া গোল করেন সিরাত জাহান স্বপ্না, একটি কৃষ্ণা রানী। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ ভুটানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

গতকাল নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে হওয়ার লড়াইয়ে টানা দুই জয়ে আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছিল দুই দল। গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকায় এ ম্যাচ ড্র করলে গ্রুপ সেরা হতো ভারত। মালদ্বীপকে ৩-০ গোলে হারিয়ে সাফের ষষ্ঠ আসরে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে গুড়িয়ে দিয়েছিল ৬-০ ব্যবধানে।

ম্যাচের শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ছিল বাংলাদেশ। ৭ম মিনিটে ভারতীয় জালে বল পাঠিয়ে গোল উদযাপন করলেও ফাউলের নির্দেশ দিয়ে গোলটি বাতিল করেন কর্তব্যরত রেফারি ওম চাকি।

তবে এতে দমে না গিয়ে আরও উজ্জীবিত হয়ে খেলতে থাকেন সাবিনা কৃষ্ণারা। ম্যাচের ১২তম মিনিটেই ফের গোল আদায় করে নেয় লাল সবুজের দল। এ সময় সাবিনার যোগান থেকে বল পেয়ে কৃষ্ণা বল পাঠিয়ে দেন ডি বক্সে স্বপ্নাকে। স্বপ্না প্লেসিং শটে গোল করেন (১-০)। ম্যাচের ২২ তম মিনিটে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। শিউলি আজিমের থ্রোয়ের বল নিয়ে কৃষ্ণা প্রথমে স্বপ্নাকে দেন। তার কাছ থেকে বলটি পেয়ে দারুণ শটে গোল করেন কৃষ্ণা (২-০)।

এর আগে ১৯ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ রচনা করেছিল ভারত। এ সময় তাদের প্রতিহত করতে গিয়ে ডি-বক্সের বাইরে ফাউল করে বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা। ফলে ফ্রি কিক পায় ভারত। কিন্তু চ্যাম্পিয়নদের হয়ে প্রিয়াঙ্কা দেবীর শটের বল বাংলাদেশের গোল পোস্টের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়।

ম্যাচের ৩১ ও ৩৬ মিনিটে সানজিদা ও মনিকার ভুলের কারণে ফিনিশিং টানতে পারেনি বাংলাদেশ। এই সময় বাংলাদেশ দলের আক্রমণ সামলাতে ডিফেন্ডার জুলিকি শানের পরিবর্তে মার্গারেট কাস্টানহাকে মাঠে পাঠায় ভারত। শেষ পর্যন্ত ২-০ ব্যবধানের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফেরার পর আবারও ভারতীয়দের চেপে ধরে বাংলাদেশ। সুফল পেতে এবারও খুব বেশি দেরি হয়নি। ৫৩ মিনিটে সাবিনার থ্রু পাসে বল নিয়ে স্বপ্না গোল রক্ষককে একা পেয়ে বাঁ-পায়ে বল জালে জড়ান (৩-০)।বাকি সময় আর কোন দলই গোল করতে পারেনি।

৩ গোলের জয়ে নতুন ইতিহাস গড়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েদের ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে ভারতের অপরাজেয় যাত্রার রাশ টেনে ধরল বাংলাদেশ। আগের পাঁচ আসরে শিরোপা জয়ী ভারত ২২ ম্যাচ খেলে জিতেছিল ২১টি, ড্র একটি। ওই একমাত্র ড্র ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে; ২০১৬ সালে শিলিগুড়ির আসরে।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ভারতের বিপক্ষে খেলা আগের ১০ ম্যাচে বাংলাদেশের হার ছিল ৯টি, ড্র ওই একটি। ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙার ইঙ্গিত মেয়েরা দিতে থাকে শুরু থেকে। আত্মবিশ্বাসী এক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে তাদের খেলায়।