ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক ট্যাংক দিতে নারাজ জার্মানি

ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক যুদ্ধের ট্যাংক দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জার্মানি। জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিন ল্যামব্রেখট কিয়েভের এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের কথা জানিয়েছেন। বার্লিনে জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেনকে এখন পর্যন্ত কোন দেশে পশ্চিমা নির্মিত লড়াইয়ের সামরিক যান বা যুদ্ধের ট্যাংক দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, আমরা মিত্রদের সঙ্গে একমত হয়েছি জার্মানি একতরফাভাবে এমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না। এর আগে আগস্টে জার্মানির কাছ থেকে তিনটি এমএআরএস টু এমএলআরএস-ও পেয়েছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত এম২৭০ মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেমের জার্মান সংস্করণ। গত ২৬ জুলাই জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিনা ল্যামব্রেখট কিয়েভকে এটি সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

এদিকে, ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠিয়ে জার্মানি চূড়ান্ত সীমা লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। বার্লিনে মস্কোর রাষ্ট্রদূত সের্গেই নেচায়েভ এ কথা জানান। তিনি বলেছেন, কিয়েভে অস্ত্র মস্কোর সঙ্গে দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক সমঝোতাকে ক্ষুণœ করেছে বার্লিন।

রুশ দূত বলেন, ‘ইউক্রেন সরকারকে জার্মানিতে তৈরি প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব অস্ত্র শুধু রাশিয়ান সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেই নয়, ডনবাসের বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধেও ব্যবহার হচ্ছে। এটা নিশ্চিতভাবে সীমা লঙ্ঘন।’

নাৎসি অপরাধের জন্য আমাদের জনগণের সামনে জার্মানির নৈতিক ও ঐতিহাসিক দায়িত্ব বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করছেন রুশ দূত।

তিনি বলেন, ‘তারা এমন একটা সীমা অতিক্রম করেছে, যেখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব না।’ ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে যোগদানে ‘সশস্ত্র সংঘাতের অঞ্চলে’ অস্ত্র না পাঠানোর দীর্ঘদিনের নীতি বাতিল করেছে বার্লিন। জার্মান সরকার বলছে, কিয়েভকে সমর্থন করার নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে তাদের, যেন তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আত্মরক্ষা করতে পারে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো মতো রুশ অর্থনীতিতে ধস নামানোর প্রচেষ্টায় যোগ দিয়েছে জার্মানিও। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের আগে থেকেই জার্মান ব্যবসাগুলো রাশিয়ান প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভর করছে।

রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জার্মান সরকার একতরফাভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ধ্বংস করার কাজ করছে।

এই সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। কয়েক দশক ধরে তা তৈরি হয়েছিল।’ এই কূটনীতিকের ভাষ্য, রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নিজেই ধুঁকছে জার্মানি। গ্যাস, বিদ্যুৎসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের পণ্যের দাম অনেক বেড়েছে। নেচায়েভ বলেন, ‘মস্কোর বিরুদ্ধে “নিষেধাজ্ঞার যুদ্ধ” এখন জার্মানিতে “নিজেকে পায়ে গুলি করা” হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৩০ ভাদ্র ১৪২৯ ১৭ সফর ১৪৪৪

ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক ট্যাংক দিতে নারাজ জার্মানি

ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক যুদ্ধের ট্যাংক দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জার্মানি। জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিন ল্যামব্রেখট কিয়েভের এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের কথা জানিয়েছেন। বার্লিনে জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেনকে এখন পর্যন্ত কোন দেশে পশ্চিমা নির্মিত লড়াইয়ের সামরিক যান বা যুদ্ধের ট্যাংক দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, আমরা মিত্রদের সঙ্গে একমত হয়েছি জার্মানি একতরফাভাবে এমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না। এর আগে আগস্টে জার্মানির কাছ থেকে তিনটি এমএআরএস টু এমএলআরএস-ও পেয়েছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত এম২৭০ মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেমের জার্মান সংস্করণ। গত ২৬ জুলাই জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিনা ল্যামব্রেখট কিয়েভকে এটি সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

এদিকে, ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠিয়ে জার্মানি চূড়ান্ত সীমা লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। বার্লিনে মস্কোর রাষ্ট্রদূত সের্গেই নেচায়েভ এ কথা জানান। তিনি বলেছেন, কিয়েভে অস্ত্র মস্কোর সঙ্গে দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক সমঝোতাকে ক্ষুণœ করেছে বার্লিন।

রুশ দূত বলেন, ‘ইউক্রেন সরকারকে জার্মানিতে তৈরি প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব অস্ত্র শুধু রাশিয়ান সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেই নয়, ডনবাসের বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধেও ব্যবহার হচ্ছে। এটা নিশ্চিতভাবে সীমা লঙ্ঘন।’

নাৎসি অপরাধের জন্য আমাদের জনগণের সামনে জার্মানির নৈতিক ও ঐতিহাসিক দায়িত্ব বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করছেন রুশ দূত।

তিনি বলেন, ‘তারা এমন একটা সীমা অতিক্রম করেছে, যেখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব না।’ ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে যোগদানে ‘সশস্ত্র সংঘাতের অঞ্চলে’ অস্ত্র না পাঠানোর দীর্ঘদিনের নীতি বাতিল করেছে বার্লিন। জার্মান সরকার বলছে, কিয়েভকে সমর্থন করার নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে তাদের, যেন তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আত্মরক্ষা করতে পারে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো মতো রুশ অর্থনীতিতে ধস নামানোর প্রচেষ্টায় যোগ দিয়েছে জার্মানিও। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের আগে থেকেই জার্মান ব্যবসাগুলো রাশিয়ান প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভর করছে।

রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জার্মান সরকার একতরফাভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ধ্বংস করার কাজ করছে।

এই সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। কয়েক দশক ধরে তা তৈরি হয়েছিল।’ এই কূটনীতিকের ভাষ্য, রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নিজেই ধুঁকছে জার্মানি। গ্যাস, বিদ্যুৎসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের পণ্যের দাম অনেক বেড়েছে। নেচায়েভ বলেন, ‘মস্কোর বিরুদ্ধে “নিষেধাজ্ঞার যুদ্ধ” এখন জার্মানিতে “নিজেকে পায়ে গুলি করা” হিসেবে দেখা হচ্ছে।