রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কয়েক কক্ষে রহস্যজনক আগুন

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমআরআই, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি কক্ষে রহস্যজনক অগ্নিকা- সংঘটিত হয়েছে। এতে মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও মেশিনের ক্ষতি হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল ইসলাম অগ্নিকা-ের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। রংপুর ফায়ার সার্ভিস ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে হাসপাতালের নিচতলার এমআরআই, ইসিজি ও আল্ট্রাসনোগ্রাম কক্ষ থেকে হঠাৎ ধোঁয়া বের হতে দেখেন মেডিকেলের কর্মচারীরা। আগুন ছড়িয়েছে সন্দেহে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। এ অবস্থায় কয়েকজন কর্মচারী কক্ষের দরজার তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিদ্যুতের সার্কিটের সুইচ বন্ধ করে দেন। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট সেখানে এসে আধা ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও কি কারণে আগুন লাগলো, কোটি কোটি টাকা মূল্যের চিকিৎসা সামগ্রী ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কিছুই জানাতে রাজি হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

তবে এ ঘটনার পর হাসপাতালের এমআরআই, সিটি স্ক্যান মেশিনসহ সর্বাধুনিক মেশিনগুলো দীর্ঘদিন ধরে পুরোপুরি বিকল হয়ে পড়েছিল বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এসব মূল্যবান মেশিনপত্র ছিল অত্যন্ত নি¤œমানের। অনেকবার সচল করার চেষ্টা করেও বেশি দিন সচল রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে নি¤œমানের এসব মেশিনপত্র নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা থাকায় এটা বিশেষ মহলকে বাঁচাতে সাবোটাজও হতে পারে বলে তারা জানিয়েছেন। তবে কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি। এদিকে হাসপাতালের নিচতলার লিফটম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, সকালে হঠাৎ করে এমআরআই কক্ষ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখি। এটা দেখে অনেকেই ছুটাছুটি শুরু করেন। আমরা কয়েকজন ওই কক্ষের দরজায় থাকা তালাটি হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করে দেই। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার সদস্য সেলিম জানান, আমি গেটের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলাম। হঠাৎ দেখি লোকজন ভয়ে ছোটাছুটি করছে। জানতে পারি এমআরআই কক্ষে আগুন লেগেছে। আমি সেখান থেকে দৌড়ে ভেতরে এসে দেখি ধোঁয়ায় চারপাশ অন্ধকার। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রটি নিয়ে কক্ষের ভেতরে ঢুকে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। তখন পর্যন্ত আগুনের সূত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, এত বেশি ধোঁয়া সেখানে ছড়িয়ে পড়েছিল। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল ইসলাম বলেন, ভবনটি অনেক পুরোনো এবং বৈদ্যুতিক ওয়ারিং নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ কারণে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, আগুন লাগার কারণ এখন নিশ্চিত বলা সম্ভব নয়, তদন্ত করে বিস্তারিত জানা যাবে।

বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৩০ ভাদ্র ১৪২৯ ১৭ সফর ১৪৪৪

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কয়েক কক্ষে রহস্যজনক আগুন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, রংপুর

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমআরআই, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি কক্ষে রহস্যজনক অগ্নিকা- সংঘটিত হয়েছে। এতে মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও মেশিনের ক্ষতি হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল ইসলাম অগ্নিকা-ের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। রংপুর ফায়ার সার্ভিস ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে হাসপাতালের নিচতলার এমআরআই, ইসিজি ও আল্ট্রাসনোগ্রাম কক্ষ থেকে হঠাৎ ধোঁয়া বের হতে দেখেন মেডিকেলের কর্মচারীরা। আগুন ছড়িয়েছে সন্দেহে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। এ অবস্থায় কয়েকজন কর্মচারী কক্ষের দরজার তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিদ্যুতের সার্কিটের সুইচ বন্ধ করে দেন। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট সেখানে এসে আধা ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও কি কারণে আগুন লাগলো, কোটি কোটি টাকা মূল্যের চিকিৎসা সামগ্রী ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কিছুই জানাতে রাজি হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

তবে এ ঘটনার পর হাসপাতালের এমআরআই, সিটি স্ক্যান মেশিনসহ সর্বাধুনিক মেশিনগুলো দীর্ঘদিন ধরে পুরোপুরি বিকল হয়ে পড়েছিল বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এসব মূল্যবান মেশিনপত্র ছিল অত্যন্ত নি¤œমানের। অনেকবার সচল করার চেষ্টা করেও বেশি দিন সচল রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে নি¤œমানের এসব মেশিনপত্র নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা থাকায় এটা বিশেষ মহলকে বাঁচাতে সাবোটাজও হতে পারে বলে তারা জানিয়েছেন। তবে কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি। এদিকে হাসপাতালের নিচতলার লিফটম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, সকালে হঠাৎ করে এমআরআই কক্ষ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখি। এটা দেখে অনেকেই ছুটাছুটি শুরু করেন। আমরা কয়েকজন ওই কক্ষের দরজায় থাকা তালাটি হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করে দেই। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার সদস্য সেলিম জানান, আমি গেটের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলাম। হঠাৎ দেখি লোকজন ভয়ে ছোটাছুটি করছে। জানতে পারি এমআরআই কক্ষে আগুন লেগেছে। আমি সেখান থেকে দৌড়ে ভেতরে এসে দেখি ধোঁয়ায় চারপাশ অন্ধকার। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রটি নিয়ে কক্ষের ভেতরে ঢুকে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। তখন পর্যন্ত আগুনের সূত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, এত বেশি ধোঁয়া সেখানে ছড়িয়ে পড়েছিল। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল ইসলাম বলেন, ভবনটি অনেক পুরোনো এবং বৈদ্যুতিক ওয়ারিং নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ কারণে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, আগুন লাগার কারণ এখন নিশ্চিত বলা সম্ভব নয়, তদন্ত করে বিস্তারিত জানা যাবে।