রেড জোনে হকার বসতে দেয়া হবে না

তৃতীয় দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান, হকারদের বিক্ষোভ

রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট ও বায়তুল মোকাররম এলাকা ও মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের আশপাশকে রেড জোন ঘোষণা করে তৃতীয় দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এ অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতনসহ জনপ্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। তবে, উচ্ছেদ অভিযানের সময় হকাররা বিক্ষোভ মিছিল করলেও তা আমলে নেয়নি ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ঢাকা দক্ষিণ (ডিএসসিসি) সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা দুপুর ১২টার দিকে অভিযান শুরু করি। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট থেকে গোলাপশাহ মাজার, ঢাকা ট্রেড সেন্টার ও সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্স পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়। কিন্তু বৃষ্টি ও অভিযানের খবর পেয়ে হকাররা আগেই ফুটপাত থেকে সরে যায়। তবে, অভিযানের সময় এক হকারকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও একটি বেকারির ভ্যান উচ্ছেদ করা হয়েছে।

উচ্ছেদ অভিযানের পর গুলিস্তান এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন হকাররা। তাদের দাবি, বার বার আশ্বাস দিয়েও কোন ধরনের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। তারা বলেন, আমাদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কথা। কিন্তু আমরা এখনও কোন দোকান পাইনি। আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার দাবি জানাই।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, গতকাল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান ছিল। আজ আবার উচ্ছেদ অভিযান চলবে। গতকাল সহ¯্রাধিক হকারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে কোন জরিমানা করা হয়নি। মূলত অভিযানের খবরে হকাররা আগেভাগেই চৌকি ও মালামাল সরিয়ে ফেলেছে। আমাদের এ অভিযান ততক্ষণ পর্যন্ত চলবে যতক্ষণ পর্যন্ত রেডজোন এলাকা পুরোপুরি ফাঁকা না হয়।

ওই কর্মকর্তা বলেন, উচ্ছেদ মানে কোনভাবেই রাস্তায় একটি পানের দোকানও বসতে পারবে না। পথচারী বা যানবাহন চলাচলের জায়গা পুরোপুরি দখলমুক্ত করা হবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গুলিস্তান, মতিঝিল দৈনিক বাংলাসহ আশপাশের এলাকা রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া সাইন্সল্যাব, নিউমার্কেট এলাকাও রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। মূলত প্রধান সড়ক এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক রোডকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি কমিটি রয়েছে। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা এ কমিটির সদস্য। প্রতিনিয়ত কমিটির মিটিং হচ্ছে।

আমরা বলেছি, রেডজোন এলাকায় কোনভাবেই ফুটপাতে কোন হকার বসতে পারবে না। তবে ইয়োলো জোনে সপ্তাহে শুক্রবার ও শনিবার নির্ধারিত সময়ের জন্য বসতে পারবে। আর গ্রীন জোনে তারা নিয়মিত বসতে পারবে। আমরা মিটিং করে শিল্পকলা এলাকা ও মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সামনের রাস্তাকে ইয়োলো ও ব্লু জোন করার প্রস্তাব করেছি। সেটি বাস্তবায়ন হলে হকাররা ওইসব এলাকায় সপ্তাহে নির্ধারিত সময়ের জন্য বসার সুযোগ পাবেন।

কাউন্সিলর রতন বলেন, গতকাল অভিযানের তৃতীয় দিন ছিল। কিছু ব্যক্তি হকারদের উস্কে দেয়ার চেষ্টা করেছিল। তবে সেটি সম্ভব হয়নি। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা তাদের অবস্থানে কঠোর। যেকোন মূল্যে রেড জোন এলাকায় ফুটপাতে কোন হকার বসতে দেয়া হবে না। বৃষ্টির কারণে অভিযানে কিছুটা বিঘœ সৃষ্টি হয়েছে। তবে কোন ঝামেলা হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক জনপ্রতিনিধি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০নং ওয়ার্ডের সভাপতি মনোয়ার হোসেন মনু এবং যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃৃত আবু হান্নান সিদ্দিকসহ কয়েকজন নেতা গুলিস্তান ও আশপাশের এলাকায় অবৈধ সুবিধার বিনিময়ে হকারদের বসতে মদদ দেয়। তাদের লোকজন হকারদের ফুটপাতে বসিয়ে নিয়মিত চাঁদা নেয়। এ চাঁদার ভাগ অনেক জায়গায় যায়। বছরের পর বছর চেষ্টা করেও হকারদের উচ্ছেদ করা যায়নি। তবে এবার সিটি করপোরেশন তাদের লক্ষ্যমাত্রায় অবিষ্ট। কোনভাবেই হকারদের ফুটপাতে বসতে দিব না।

বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৩০ ভাদ্র ১৪২৯ ১৭ সফর ১৪৪৪

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন

রেড জোনে হকার বসতে দেয়া হবে না

তৃতীয় দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান, হকারদের বিক্ষোভ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট ও বায়তুল মোকাররম এলাকা ও মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের আশপাশকে রেড জোন ঘোষণা করে তৃতীয় দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এ অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতনসহ জনপ্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। তবে, উচ্ছেদ অভিযানের সময় হকাররা বিক্ষোভ মিছিল করলেও তা আমলে নেয়নি ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ঢাকা দক্ষিণ (ডিএসসিসি) সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা দুপুর ১২টার দিকে অভিযান শুরু করি। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট থেকে গোলাপশাহ মাজার, ঢাকা ট্রেড সেন্টার ও সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্স পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়। কিন্তু বৃষ্টি ও অভিযানের খবর পেয়ে হকাররা আগেই ফুটপাত থেকে সরে যায়। তবে, অভিযানের সময় এক হকারকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও একটি বেকারির ভ্যান উচ্ছেদ করা হয়েছে।

উচ্ছেদ অভিযানের পর গুলিস্তান এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন হকাররা। তাদের দাবি, বার বার আশ্বাস দিয়েও কোন ধরনের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। তারা বলেন, আমাদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কথা। কিন্তু আমরা এখনও কোন দোকান পাইনি। আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার দাবি জানাই।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, গতকাল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান ছিল। আজ আবার উচ্ছেদ অভিযান চলবে। গতকাল সহ¯্রাধিক হকারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে কোন জরিমানা করা হয়নি। মূলত অভিযানের খবরে হকাররা আগেভাগেই চৌকি ও মালামাল সরিয়ে ফেলেছে। আমাদের এ অভিযান ততক্ষণ পর্যন্ত চলবে যতক্ষণ পর্যন্ত রেডজোন এলাকা পুরোপুরি ফাঁকা না হয়।

ওই কর্মকর্তা বলেন, উচ্ছেদ মানে কোনভাবেই রাস্তায় একটি পানের দোকানও বসতে পারবে না। পথচারী বা যানবাহন চলাচলের জায়গা পুরোপুরি দখলমুক্ত করা হবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গুলিস্তান, মতিঝিল দৈনিক বাংলাসহ আশপাশের এলাকা রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া সাইন্সল্যাব, নিউমার্কেট এলাকাও রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। মূলত প্রধান সড়ক এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক রোডকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি কমিটি রয়েছে। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা এ কমিটির সদস্য। প্রতিনিয়ত কমিটির মিটিং হচ্ছে।

আমরা বলেছি, রেডজোন এলাকায় কোনভাবেই ফুটপাতে কোন হকার বসতে পারবে না। তবে ইয়োলো জোনে সপ্তাহে শুক্রবার ও শনিবার নির্ধারিত সময়ের জন্য বসতে পারবে। আর গ্রীন জোনে তারা নিয়মিত বসতে পারবে। আমরা মিটিং করে শিল্পকলা এলাকা ও মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সামনের রাস্তাকে ইয়োলো ও ব্লু জোন করার প্রস্তাব করেছি। সেটি বাস্তবায়ন হলে হকাররা ওইসব এলাকায় সপ্তাহে নির্ধারিত সময়ের জন্য বসার সুযোগ পাবেন।

কাউন্সিলর রতন বলেন, গতকাল অভিযানের তৃতীয় দিন ছিল। কিছু ব্যক্তি হকারদের উস্কে দেয়ার চেষ্টা করেছিল। তবে সেটি সম্ভব হয়নি। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা তাদের অবস্থানে কঠোর। যেকোন মূল্যে রেড জোন এলাকায় ফুটপাতে কোন হকার বসতে দেয়া হবে না। বৃষ্টির কারণে অভিযানে কিছুটা বিঘœ সৃষ্টি হয়েছে। তবে কোন ঝামেলা হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক জনপ্রতিনিধি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০নং ওয়ার্ডের সভাপতি মনোয়ার হোসেন মনু এবং যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃৃত আবু হান্নান সিদ্দিকসহ কয়েকজন নেতা গুলিস্তান ও আশপাশের এলাকায় অবৈধ সুবিধার বিনিময়ে হকারদের বসতে মদদ দেয়। তাদের লোকজন হকারদের ফুটপাতে বসিয়ে নিয়মিত চাঁদা নেয়। এ চাঁদার ভাগ অনেক জায়গায় যায়। বছরের পর বছর চেষ্টা করেও হকারদের উচ্ছেদ করা যায়নি। তবে এবার সিটি করপোরেশন তাদের লক্ষ্যমাত্রায় অবিষ্ট। কোনভাবেই হকারদের ফুটপাতে বসতে দিব না।