সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন

সাইকেলে বিশ্বভ্রমণকারী ও ভ্রমণকাহিনী লেখক রামনাথ বিশ্বাসের বাড়ি দখলের সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধন থেকে রামনাথ বিশ্বাসের হবিগঞ্জের বাড়ি দখলমুক্ত ও সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানানো হয়।

গতকাল বিকেলে সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এই মানববন্ধনে জেলার সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। রামনাথ বিশ্বাসের বাড়িটি উদ্ধার করে সেটি জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষণেরও দাবি জানান বক্তারা।

গত রোববার দুপুরে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার ২ নম্বর ইউনিয়নে রামনাথ বিশ্বাসের বাড়ির সামনে হামলার শিকার হন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের স্পেশাল অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর রাজীব নূর, বানিয়াচং প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের বানিয়াচং প্রতিনিধি মোশাহেদ মিয়া, হবিগঞ্জ সমাচার পত্রিকার বানিয়াচং প্রতিনিধি তৌহিদ মিয়া এবং দেশসেবা পত্রিকার বানিয়াচং প্রতিনিধি আলমগীর রেজা।

এই হামলার প্রতিবাদে সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কবি শাহেদ কায়েসের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শিল্পী রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়, বাংলাদেশ ট্রাভেল রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল, বাসদের জেলা সভাপতি নিখিল দাস, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, কবি আরিফ বুলবুল, শিল্পী অমল আকাশ, সাংবাদিক শরীফ উদ্দিন সবুজ, আফসার বিপুল প্রমুখ।

রফিউর রাব্বি বলেন, ‘ভূমিদস্যুরা ব্যক্তি মালিকানার জমির বাইরেও অসংখ্য সরকারি জমি আত্মসাৎ করেছে। নারায়ণগঞ্জে এইরকম দখলে নেয়া অসংখ্য সরকারি জমি রয়েছে। দুর্বৃত্তরা জনগণের স্বার্থবিপন্ন করে দখলদারিত্ব চালায়। এ জন্য তাদের সরকার ও প্রশাসনকে প্রয়োজন হয়। ফলে তারা সবসময় সরকার ও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় থাকে। রামনাথ বিশ্বাসের বাড়িটিও দখলে রাখতে সবসময় সরকারের ছত্রছায়ায় তারা থেকেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার কতদিন এই দুর্বৃত্তদের পুষবে? আর কতদিন তাদের ঘাড়ে পা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকবে? দুর্বৃত্তরা কখনই সরকারকে রক্ষা করতে পারে না। সরকার পাল্টালে দুর্বৃত্তরাও তাদের চরিত্র পাল্টায়।’

হামলাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ তুলে সরকার ও প্রশাসনের সমালোচনা করেন বক্তারা। তারা বলেন, ‘কীর্তিমান একজন মানুষ রামনাথ বিশ্বাস। তার বাড়িটি দখল করে রেখেছে প্রভাবশালীরা। দখলদার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। রামনাথ বিশ্বাস ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। তিনি কখনও ভাবেননি যে, যেই ভূখ- দখলমুক্ত করার জন্য তিনি লড়াই করেছেন সেই ভূখ-ে তার বাড়ি দখল হয়ে যাবে। গত ৬ সেপ্টেম্বরও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায় দখলদাররা। প্রশাসন কেবল ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলে। রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় ছাড়া কোন দখলদারিত্ব চালানো যায় না। যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় আছেন তারাও দখলদার। রাতের ভোটে তারা ক্ষমতায় এসেছে। এক দখলদার আরেক দখলদারকে সহযোগিতা করবে এটাই স্বাভাবিক।’

বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৩০ ভাদ্র ১৪২৯ ১৭ সফর ১৪৪৪

সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন

প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

image

সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন -সংবাদ

সাইকেলে বিশ্বভ্রমণকারী ও ভ্রমণকাহিনী লেখক রামনাথ বিশ্বাসের বাড়ি দখলের সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধন থেকে রামনাথ বিশ্বাসের হবিগঞ্জের বাড়ি দখলমুক্ত ও সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানানো হয়।

গতকাল বিকেলে সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এই মানববন্ধনে জেলার সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। রামনাথ বিশ্বাসের বাড়িটি উদ্ধার করে সেটি জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষণেরও দাবি জানান বক্তারা।

গত রোববার দুপুরে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার ২ নম্বর ইউনিয়নে রামনাথ বিশ্বাসের বাড়ির সামনে হামলার শিকার হন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের স্পেশাল অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর রাজীব নূর, বানিয়াচং প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের বানিয়াচং প্রতিনিধি মোশাহেদ মিয়া, হবিগঞ্জ সমাচার পত্রিকার বানিয়াচং প্রতিনিধি তৌহিদ মিয়া এবং দেশসেবা পত্রিকার বানিয়াচং প্রতিনিধি আলমগীর রেজা।

এই হামলার প্রতিবাদে সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কবি শাহেদ কায়েসের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শিল্পী রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়, বাংলাদেশ ট্রাভেল রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল, বাসদের জেলা সভাপতি নিখিল দাস, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, কবি আরিফ বুলবুল, শিল্পী অমল আকাশ, সাংবাদিক শরীফ উদ্দিন সবুজ, আফসার বিপুল প্রমুখ।

রফিউর রাব্বি বলেন, ‘ভূমিদস্যুরা ব্যক্তি মালিকানার জমির বাইরেও অসংখ্য সরকারি জমি আত্মসাৎ করেছে। নারায়ণগঞ্জে এইরকম দখলে নেয়া অসংখ্য সরকারি জমি রয়েছে। দুর্বৃত্তরা জনগণের স্বার্থবিপন্ন করে দখলদারিত্ব চালায়। এ জন্য তাদের সরকার ও প্রশাসনকে প্রয়োজন হয়। ফলে তারা সবসময় সরকার ও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় থাকে। রামনাথ বিশ্বাসের বাড়িটিও দখলে রাখতে সবসময় সরকারের ছত্রছায়ায় তারা থেকেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার কতদিন এই দুর্বৃত্তদের পুষবে? আর কতদিন তাদের ঘাড়ে পা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকবে? দুর্বৃত্তরা কখনই সরকারকে রক্ষা করতে পারে না। সরকার পাল্টালে দুর্বৃত্তরাও তাদের চরিত্র পাল্টায়।’

হামলাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ তুলে সরকার ও প্রশাসনের সমালোচনা করেন বক্তারা। তারা বলেন, ‘কীর্তিমান একজন মানুষ রামনাথ বিশ্বাস। তার বাড়িটি দখল করে রেখেছে প্রভাবশালীরা। দখলদার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। রামনাথ বিশ্বাস ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। তিনি কখনও ভাবেননি যে, যেই ভূখ- দখলমুক্ত করার জন্য তিনি লড়াই করেছেন সেই ভূখ-ে তার বাড়ি দখল হয়ে যাবে। গত ৬ সেপ্টেম্বরও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায় দখলদাররা। প্রশাসন কেবল ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলে। রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় ছাড়া কোন দখলদারিত্ব চালানো যায় না। যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় আছেন তারাও দখলদার। রাতের ভোটে তারা ক্ষমতায় এসেছে। এক দখলদার আরেক দখলদারকে সহযোগিতা করবে এটাই স্বাভাবিক।’