একজন ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য তার শারীরিক স্বাস্থ্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা শারীরিক অসুস্থতার মতোই বাস্তব। সম্পর্কের টানাপোড়ন, পারিবারিক সমস্যা, অভাব অনটন থেকে শুরু মানসিক চাপ আর অশান্তি বেড়ে যায়। ফলে আত্মহননের দিকে পা বাড়াচ্ছে তরুণরা। সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আত্মহত্যা প্রবণতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দশম। পারিবারিক সম্পর্ক দৃঢ়করণ ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করতে হবে।
পড়ালেখা-খেলাধুলাও শখের বিষয় থেকে নিজে দূরে থাকা, মাদকাসক্তি বা ইন্টারনেটে মাত্রাতিরিক্ত আসক্তি, ঘুমের সময়ের পরিবর্তন, সারা রাত জেগে থাকা, প্রায়ই নিজের হাত-পা কাটা, বেশি বেশি ঘুমের ওষুধ খাওয়া, সম্প্রতি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়া বা নিকটজনের আকস্মিক মৃত্যু- যা তিনি মেনে নিতে পারছেন না, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মৃত্যু আর আত্মহত্যা নিয়ে নিজের ইচ্ছার কথা প্রকাশ করা, কথায় কথায় আড্ডায় মরে যাওয়ার কথা বলা, মনমরা হয়ে থাকা, সব কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলা, নিজেকে দোষী ভাবা- ইত্যাদি বিষণœতার লক্ষণ; যা থেকে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।
বিভিন্ন মনোবিজ্ঞানী ও গবেষকদের মতে আত্মহত্যারোধে নিম্নের কাজগুলো করা যেতে পারে। শিশু-কিশোরদের সামাজিক দক্ষতা বাড়াতে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দেওয়া। মনে রাখতে হবে, আত্মহত্যা কেবল কিশোর বা তরুণদের বিষয় নয়, যেকোনো বয়সের নারী-পুরুষ আত্মহত্যা করতে পারেন। কেউ পরিণত বয়স্ক বা বয়োবৃদ্ধ, তাই তিনি আত্মহত্যা করবেন না-এমনটা ভাবা চলবে না। আত্মহত্যার উপকরণ, যেমন ঘুমের ওষুধ ও কীটনাশকের সহজলভ্যতা কমানো, প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঘুমের ওষুধ বিক্রি বন্ধ করা। যেকোনো ধরনের মানসিক সমস্যা বা আত্মহত্যার ইঙ্গিত পেলে দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিকটজনকে নিয়ে যাওয়া। বিষণœতা, মাদকাসক্তি, ব্যক্তিত্বের বিকার, সিজোফ্রেনিয়াসহ সব মানসিক রোগের দ্রুত শনাক্ত করা ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা। খেলাধুলা, শখের বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব বাড়াতে হবে। মাদকাসক্তি বা ইন্টারনেটে মাত্রাতিরিক্ত আসক্তি রোধ করতে হবে।
আত্মহত্যাকে না বলে আত্মবল নিয়ে সামনে এগিয়ে চলার মানসিকতা তৈরিতে সরকারি ও সামাজিক সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিভিন্ন ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
ইকরাম হোসেন অভি
বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৩০ ভাদ্র ১৪২৯ ১৭ সফর ১৪৪৪
একজন ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য তার শারীরিক স্বাস্থ্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা শারীরিক অসুস্থতার মতোই বাস্তব। সম্পর্কের টানাপোড়ন, পারিবারিক সমস্যা, অভাব অনটন থেকে শুরু মানসিক চাপ আর অশান্তি বেড়ে যায়। ফলে আত্মহননের দিকে পা বাড়াচ্ছে তরুণরা। সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আত্মহত্যা প্রবণতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দশম। পারিবারিক সম্পর্ক দৃঢ়করণ ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করতে হবে।
পড়ালেখা-খেলাধুলাও শখের বিষয় থেকে নিজে দূরে থাকা, মাদকাসক্তি বা ইন্টারনেটে মাত্রাতিরিক্ত আসক্তি, ঘুমের সময়ের পরিবর্তন, সারা রাত জেগে থাকা, প্রায়ই নিজের হাত-পা কাটা, বেশি বেশি ঘুমের ওষুধ খাওয়া, সম্প্রতি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়া বা নিকটজনের আকস্মিক মৃত্যু- যা তিনি মেনে নিতে পারছেন না, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মৃত্যু আর আত্মহত্যা নিয়ে নিজের ইচ্ছার কথা প্রকাশ করা, কথায় কথায় আড্ডায় মরে যাওয়ার কথা বলা, মনমরা হয়ে থাকা, সব কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলা, নিজেকে দোষী ভাবা- ইত্যাদি বিষণœতার লক্ষণ; যা থেকে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।
বিভিন্ন মনোবিজ্ঞানী ও গবেষকদের মতে আত্মহত্যারোধে নিম্নের কাজগুলো করা যেতে পারে। শিশু-কিশোরদের সামাজিক দক্ষতা বাড়াতে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দেওয়া। মনে রাখতে হবে, আত্মহত্যা কেবল কিশোর বা তরুণদের বিষয় নয়, যেকোনো বয়সের নারী-পুরুষ আত্মহত্যা করতে পারেন। কেউ পরিণত বয়স্ক বা বয়োবৃদ্ধ, তাই তিনি আত্মহত্যা করবেন না-এমনটা ভাবা চলবে না। আত্মহত্যার উপকরণ, যেমন ঘুমের ওষুধ ও কীটনাশকের সহজলভ্যতা কমানো, প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঘুমের ওষুধ বিক্রি বন্ধ করা। যেকোনো ধরনের মানসিক সমস্যা বা আত্মহত্যার ইঙ্গিত পেলে দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিকটজনকে নিয়ে যাওয়া। বিষণœতা, মাদকাসক্তি, ব্যক্তিত্বের বিকার, সিজোফ্রেনিয়াসহ সব মানসিক রোগের দ্রুত শনাক্ত করা ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা। খেলাধুলা, শখের বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব বাড়াতে হবে। মাদকাসক্তি বা ইন্টারনেটে মাত্রাতিরিক্ত আসক্তি রোধ করতে হবে।
আত্মহত্যাকে না বলে আত্মবল নিয়ে সামনে এগিয়ে চলার মানসিকতা তৈরিতে সরকারি ও সামাজিক সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিভিন্ন ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
ইকরাম হোসেন অভি