‘ঘংঘুর’-এর লন্ডন বইমেলা সংখ্যা

বিকল্প চিন্তার শ্রেষ্ঠ আশ্রয় লিটল ম্যাগাজিনের প্রকাশনা দিন দিন কমছে। তরুণ্যে ভর করেছে সমকালীন হাওয়া, তথ্যপ্রযুক্তির চোখ ধাঁধানো সব সুযোগ-সুবিধা। সহজেই পরিচিত হবার সুযোগ, নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ বানাবার নানা কৌশল-অপকৌশল। যে কারণে এখনকার একশ্রেণির তারুণ্যের মধ্যে মুদ্রিত লিটল ম্যাগাজিনের প্রতি অবজ্ঞা লক্ষ্য করা যায়।

তবু মেধাবী ও বুদ্ধিদীপ্ত তারুণ্যের মাঝে লিটল ম্যাগাজিন চর্চা, লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের ব্যাপারটা আগের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে কাজ করছে। তারুণ্য বলতে বয়সে তরুণ নয়, অশিতিপর মানুষের মাঝেও তারুণ্য থাকতে পারে, আবার একজন বিশ বছরের যুবকের মধ্যেও বার্ধক্য থাকতে পারে। লিটল ম্যাগাজিনের কাজ হচ্ছে তারুণ্যের জয়গান করা। বিকল্প চিন্তা, নতুন ধারার সাহিত্যকে প্রশ্রয় দেয়া। মানসম্পন্ন একটা লিটল ম্যাগাজিনের প্রধান কাজই হচ্ছে চিন্তার জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করা।

এই কাজটি পশ্চিমবঙ্গে প্রবলভাবে হতে থাকলেও; আমাদের এখানে বিরল। তবে এখানে বেশ কিছু লিটল ম্যাগাজিন বাংলা ভাষায় নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। তাদের চিন্তা-চেতনার নতুনত্ব ও ভাবনার গভীরতা আমাদেরকে আলোড়িত করছে।

কবি ও কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন কবির সম্পাদিত ‘ঘুংঘুর’ তেমন একটি পত্রিকা যা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে ও মানসম্মত লেখায় সমৃদ্ধ হচ্ছে।

২৪তম সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়েছে সেপ্টেম্বরের লন্ডন বইমেলা উপলক্ষে। এ সংখ্যার অতিথি সম্পাদক কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামান। সংখ্যাটিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু লেখা প্রকাশিত হয়েছে। অনেক কবি-লেখকের সমাগম ঘটেছে। প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু প্রবন্ধ, গল্প, একক কবিতা, দুটি করে কবিতা, তিনটি করে কবিতা, এবং গুচ্ছ কবিতা। রয়েছে অনুবাদ, বই আলোচনা ও ছোট কাগজ আলোচনা।

এ সংখ্যায় কবিতা লিখেছেন- মঈনউদ্দিন মুনশী, আতাউর রহমান মিলাদ, ওবায়েদ আকাশ, মাসুদ পথিক, মৃত্তিকা গুণ, এ কে এম আব্দুল্লাহ, নিলয় রফিক প্রমুখ।

প্রবন্ধ লিখেছেন- বিশ্বদেব মুখোপাধ্যায়, হিরন্ময় গঙ্গোপাধ্যায়, সেলিম জাহান প্রমুখ।

গল্প লিখেছেন- মোহিত কামাল, মনিজা রহমান, কাজী মোহাম্মদ আলমগীর, সানাউল্লাহ নূর, আনিফ রুবেদ প্রমুখ।

কবিতা, জীবনানন্দ দাশ, গ্রামীণ বাংলার সামাজিক রূপান্তর এবারের সংখ্যাটির প্রবন্ধের বিষয়।

ওলগা তোকারজুক, কেইট শোপ্যাঁন ও এনডি উইয়ারের গল্পের অনুবাদ করেছেন অনুবাদকগণ দক্ষ হাতে।

‘ঘুঘুর’ প্রতি তিন মাস অন্তর প্রকাশিত হয়। এটি কম ব্যাপার নয়। শিল্প-সাহিত্যের জন্য এমন নিবেদন একজন আমেরিকা প্রবাসী লেখকের কাছ থেকে যখন মেলে, তখন প্রত্যাশাও বাড়ে। এভাবে সম্পাদক আমাদের আরো দীর্ঘকাল সাহিত্যের সেবা দিয়ে যাবেন এটাই প্রত্যাশা।

বিপাশা হায়াতের ব্যতিক্রমী ও অসাধারণ প্রচ্ছদে সংখ্যাটি প্রথম দেখাতেই চোখ ভরে যায়। ধন্যবাদ পাবার যোগ্য ‘ঘুংঘুর’-এর সম্পাদনা পরিষদের সকলেই। কবি ফকির ইলিয়াস, শাহাব আহমেদ, কথাসাতিহ্যিক মিলন আশরাফ ও কবি খালেদ চৌধুরীর নিরলস পরিশ্রম না থাকলে এমন একটি সংখ্যা তিন মাসে প্রকাশ করা সম্ভব না। ঘুংঘুর-এর অব্যাহত প্রকাশনা ও লিটলম্যাগ আন্দোলনে তার অগ্রযাত্রা প্রত্যাশা করি।

- সাময়িকী প্রতিবেদক

বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০১ আশ্বিন ১৪২৯ ১৭ সফর ১৪৪৪

‘ঘংঘুর’-এর লন্ডন বইমেলা সংখ্যা

image

বিকল্প চিন্তার শ্রেষ্ঠ আশ্রয় লিটল ম্যাগাজিনের প্রকাশনা দিন দিন কমছে। তরুণ্যে ভর করেছে সমকালীন হাওয়া, তথ্যপ্রযুক্তির চোখ ধাঁধানো সব সুযোগ-সুবিধা। সহজেই পরিচিত হবার সুযোগ, নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ বানাবার নানা কৌশল-অপকৌশল। যে কারণে এখনকার একশ্রেণির তারুণ্যের মধ্যে মুদ্রিত লিটল ম্যাগাজিনের প্রতি অবজ্ঞা লক্ষ্য করা যায়।

তবু মেধাবী ও বুদ্ধিদীপ্ত তারুণ্যের মাঝে লিটল ম্যাগাজিন চর্চা, লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের ব্যাপারটা আগের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে কাজ করছে। তারুণ্য বলতে বয়সে তরুণ নয়, অশিতিপর মানুষের মাঝেও তারুণ্য থাকতে পারে, আবার একজন বিশ বছরের যুবকের মধ্যেও বার্ধক্য থাকতে পারে। লিটল ম্যাগাজিনের কাজ হচ্ছে তারুণ্যের জয়গান করা। বিকল্প চিন্তা, নতুন ধারার সাহিত্যকে প্রশ্রয় দেয়া। মানসম্পন্ন একটা লিটল ম্যাগাজিনের প্রধান কাজই হচ্ছে চিন্তার জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করা।

এই কাজটি পশ্চিমবঙ্গে প্রবলভাবে হতে থাকলেও; আমাদের এখানে বিরল। তবে এখানে বেশ কিছু লিটল ম্যাগাজিন বাংলা ভাষায় নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। তাদের চিন্তা-চেতনার নতুনত্ব ও ভাবনার গভীরতা আমাদেরকে আলোড়িত করছে।

কবি ও কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন কবির সম্পাদিত ‘ঘুংঘুর’ তেমন একটি পত্রিকা যা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে ও মানসম্মত লেখায় সমৃদ্ধ হচ্ছে।

২৪তম সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়েছে সেপ্টেম্বরের লন্ডন বইমেলা উপলক্ষে। এ সংখ্যার অতিথি সম্পাদক কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামান। সংখ্যাটিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু লেখা প্রকাশিত হয়েছে। অনেক কবি-লেখকের সমাগম ঘটেছে। প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু প্রবন্ধ, গল্প, একক কবিতা, দুটি করে কবিতা, তিনটি করে কবিতা, এবং গুচ্ছ কবিতা। রয়েছে অনুবাদ, বই আলোচনা ও ছোট কাগজ আলোচনা।

এ সংখ্যায় কবিতা লিখেছেন- মঈনউদ্দিন মুনশী, আতাউর রহমান মিলাদ, ওবায়েদ আকাশ, মাসুদ পথিক, মৃত্তিকা গুণ, এ কে এম আব্দুল্লাহ, নিলয় রফিক প্রমুখ।

প্রবন্ধ লিখেছেন- বিশ্বদেব মুখোপাধ্যায়, হিরন্ময় গঙ্গোপাধ্যায়, সেলিম জাহান প্রমুখ।

গল্প লিখেছেন- মোহিত কামাল, মনিজা রহমান, কাজী মোহাম্মদ আলমগীর, সানাউল্লাহ নূর, আনিফ রুবেদ প্রমুখ।

কবিতা, জীবনানন্দ দাশ, গ্রামীণ বাংলার সামাজিক রূপান্তর এবারের সংখ্যাটির প্রবন্ধের বিষয়।

ওলগা তোকারজুক, কেইট শোপ্যাঁন ও এনডি উইয়ারের গল্পের অনুবাদ করেছেন অনুবাদকগণ দক্ষ হাতে।

‘ঘুঘুর’ প্রতি তিন মাস অন্তর প্রকাশিত হয়। এটি কম ব্যাপার নয়। শিল্প-সাহিত্যের জন্য এমন নিবেদন একজন আমেরিকা প্রবাসী লেখকের কাছ থেকে যখন মেলে, তখন প্রত্যাশাও বাড়ে। এভাবে সম্পাদক আমাদের আরো দীর্ঘকাল সাহিত্যের সেবা দিয়ে যাবেন এটাই প্রত্যাশা।

বিপাশা হায়াতের ব্যতিক্রমী ও অসাধারণ প্রচ্ছদে সংখ্যাটি প্রথম দেখাতেই চোখ ভরে যায়। ধন্যবাদ পাবার যোগ্য ‘ঘুংঘুর’-এর সম্পাদনা পরিষদের সকলেই। কবি ফকির ইলিয়াস, শাহাব আহমেদ, কথাসাতিহ্যিক মিলন আশরাফ ও কবি খালেদ চৌধুরীর নিরলস পরিশ্রম না থাকলে এমন একটি সংখ্যা তিন মাসে প্রকাশ করা সম্ভব না। ঘুংঘুর-এর অব্যাহত প্রকাশনা ও লিটলম্যাগ আন্দোলনে তার অগ্রযাত্রা প্রত্যাশা করি।

- সাময়িকী প্রতিবেদক