‘ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন অবৈধ, জেল-জরিমানা হতে পারে’

ডিজিটাল মুদ্রা ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিময়, স্থানান্তর ও ট্রেড বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত নয়। এ ধরনের লেনদেন বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে বেআইনি। নির্দেশনা লঙ্ঘন করে এ ধরনের লেনদেন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কেউ এমনটি করে থাকলে হতে পারে জেল-জরিমানা। সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ব্যাংক, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস), আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব পক্ষকে সতর্ক করে। প্রজ্ঞাপনে গত বছরের জুলাইতে দেয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্কতামূলক গণবিজ্ঞপ্তির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, যে কোন ভার্চুয়াল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত নয়। অননুমোদিত এ ধরনের মুদ্রায় লেনদেন করলে, আর্থিক ক্ষতি বা আইনগত সমস্যায় পড়তে হতে পারে।

গত বৃহস্পতিবারের নতুন প্রজ্ঞাপনে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে কাজ করা ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের মতামত, ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্টের আওতায় অনুমোদিত মুদ্রায় লেনদেনের বিধানসহ বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করা হয়।

নতুন সতর্কতায় বলা হয়, যে কোন ভার্চুয়াল সম্পদ বা মুদ্রার বিনিময়, স্থানান্তর বা ট্রেডে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেই। নির্দেশনা অমান্য করে কেউ এ ধরনের লেনদেন করলে, তা হবে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৩ (১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধ করলে হতে পারে ৭ বছরের জেল বা আর্থিক জরিমানা অথবা উভয়দ-ে দ-িত করার বিধান রয়েছে।

সময়ের সঙ্গে বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল মুদ্রা ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার বাড়ছে। অনেক দেশ ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিও দিয়েছে। তবে দেশে এই মুদ্রার লেনদেন একেবারেই নিষিদ্ধ। অনলাইনে লেনদেনে বিটকয়েন বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার হয়ে আসছে বেশ কয়েক বছর ধরে এবং দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ‘ক্রিপটোকারেন্সি’। বাংলাদেশেও এর লেনদেনের তথ্য পাওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে।

ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রা কোন সম্পদ বা অর্থমূল্যের প্রতিনিধিত্ব করে যা দিয়ে লেনদেন সম্পন্ন করা যায়। কিন্তু অনুমোদন না থাকায় বাজারে ভার্চুয়াল বা ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে কোন লেনদেন সম্পন্ন হয় না। আর বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী এই মুদ্রা ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, অনুমোদন না থাকায় ভার্চুয়াল মুদ্রার বিপরীতে কোন আর্থিক দাবি স্বীকৃত নয়। এসব মুদ্রায় লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্য কোন নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনুমোদন করে না। এছাড়া এসব মুদ্রার দর ওঠা-নামা করে দ্রুত। এজন্য আর্থিক ঝুঁকি থাকে। এজন্য বাংলাদেশের কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোন সংস্থাকে ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেন বা কোন ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করা, বিনিময় করা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হয়।

এর আগে ২০১৭ সালে ভার্চুয়াল মুদ্রা হিসেবে বিটকয়েনসহ ইথেরিয়াম, রিপল ও লিটকয়েনের লেনদেন নিয়ে সতর্ক করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বিটকয়েন লেনদেনে অর্থ পাচারের আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়।

গত বছরের মাঝামাঝি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক চিঠির বরাত দিয়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন বাংলাদেশের আইনে ‘অপরাধ নয়’ বলা হলে এবিষয়ে ফের সতর্ক করা হয়। ওই বছর জুলাই মাসে দেয়া নির্দেশনায় সতর্ক করে জানানো হয়, ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর গণমাধ্যমে পাঠানো বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিটি বহাল আছে।

শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৩ আশ্বিন ১৪২৯ ১৯ সফর ১৪৪৪

‘ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন অবৈধ, জেল-জরিমানা হতে পারে’

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

ডিজিটাল মুদ্রা ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিময়, স্থানান্তর ও ট্রেড বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত নয়। এ ধরনের লেনদেন বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে বেআইনি। নির্দেশনা লঙ্ঘন করে এ ধরনের লেনদেন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কেউ এমনটি করে থাকলে হতে পারে জেল-জরিমানা। সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ব্যাংক, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস), আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব পক্ষকে সতর্ক করে। প্রজ্ঞাপনে গত বছরের জুলাইতে দেয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্কতামূলক গণবিজ্ঞপ্তির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, যে কোন ভার্চুয়াল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত নয়। অননুমোদিত এ ধরনের মুদ্রায় লেনদেন করলে, আর্থিক ক্ষতি বা আইনগত সমস্যায় পড়তে হতে পারে।

গত বৃহস্পতিবারের নতুন প্রজ্ঞাপনে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে কাজ করা ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের মতামত, ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্টের আওতায় অনুমোদিত মুদ্রায় লেনদেনের বিধানসহ বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করা হয়।

নতুন সতর্কতায় বলা হয়, যে কোন ভার্চুয়াল সম্পদ বা মুদ্রার বিনিময়, স্থানান্তর বা ট্রেডে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেই। নির্দেশনা অমান্য করে কেউ এ ধরনের লেনদেন করলে, তা হবে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৩ (১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধ করলে হতে পারে ৭ বছরের জেল বা আর্থিক জরিমানা অথবা উভয়দ-ে দ-িত করার বিধান রয়েছে।

সময়ের সঙ্গে বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল মুদ্রা ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার বাড়ছে। অনেক দেশ ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিও দিয়েছে। তবে দেশে এই মুদ্রার লেনদেন একেবারেই নিষিদ্ধ। অনলাইনে লেনদেনে বিটকয়েন বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার হয়ে আসছে বেশ কয়েক বছর ধরে এবং দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ‘ক্রিপটোকারেন্সি’। বাংলাদেশেও এর লেনদেনের তথ্য পাওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে।

ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রা কোন সম্পদ বা অর্থমূল্যের প্রতিনিধিত্ব করে যা দিয়ে লেনদেন সম্পন্ন করা যায়। কিন্তু অনুমোদন না থাকায় বাজারে ভার্চুয়াল বা ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে কোন লেনদেন সম্পন্ন হয় না। আর বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী এই মুদ্রা ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, অনুমোদন না থাকায় ভার্চুয়াল মুদ্রার বিপরীতে কোন আর্থিক দাবি স্বীকৃত নয়। এসব মুদ্রায় লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্য কোন নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনুমোদন করে না। এছাড়া এসব মুদ্রার দর ওঠা-নামা করে দ্রুত। এজন্য আর্থিক ঝুঁকি থাকে। এজন্য বাংলাদেশের কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোন সংস্থাকে ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেন বা কোন ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করা, বিনিময় করা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হয়।

এর আগে ২০১৭ সালে ভার্চুয়াল মুদ্রা হিসেবে বিটকয়েনসহ ইথেরিয়াম, রিপল ও লিটকয়েনের লেনদেন নিয়ে সতর্ক করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বিটকয়েন লেনদেনে অর্থ পাচারের আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়।

গত বছরের মাঝামাঝি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক চিঠির বরাত দিয়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন বাংলাদেশের আইনে ‘অপরাধ নয়’ বলা হলে এবিষয়ে ফের সতর্ক করা হয়। ওই বছর জুলাই মাসে দেয়া নির্দেশনায় সতর্ক করে জানানো হয়, ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর গণমাধ্যমে পাঠানো বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিটি বহাল আছে।