ইউনিয়ন পর্যায়ে দেশের প্রথম ট্যাক্স মেলা মাগুরায়

মাগুরা সদরের ১১নং বেরইল পলিতা ইউনিয়ন পরিষদে দেশে প্রথমবারের মতো ইউনিয়নের বসতবাড়ি ও ব্যবসায়ী ঘরের সপ্তাহব্যাপী ট্যাক্স মেলার আয়োজন করা হয়। ইউনিয়নের জনগণকে নিজ এলাকার উন্নয়নে অংশগ্রহণ করতে ট্যাক্স দিতে উদ্বুদ্ধ করতে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন বলে জানান আয়োজকরা। গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে বেরইল পলিতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এনামুল কবির রাজার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মাগুরা জেলা প্রশাসক ডক্টর আশরাফুল আলম । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলু, মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিফ-উল-হাসানসহ অন্যরা। জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব খরচ পরিচালনায় জনগণের কাছ থেকে হোল্ডিং ট্যাক্স নেয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ সময়ই তা হয়ে উঠে না। এ ধরনের মেলার আয়োজন করে জনগণের মাঝে হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদানের প্রবনতা দেশের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

সদর উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নাসির বাবলু বলেন, দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। ছোট ছোট গ্রামেই এখন শহরের সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। মানুষ তার সুযোগ সুবিধা বুঝে পেতে ইউনিয়ন পরিষদকে ট্যাক্স দিতে উৎসাহি। অনেকেই সিরিয়ালে দাড়িয়ে ট্যাক্স দিচ্ছেন। এরই উৎকৃষ্ট উদাহরণ আজকের এ ট্যাক্স মেলায় ব্যাপক উপস্থিতি। একাধিক ট্যাক্স প্রদানকারি জানান, বর্তমানে তাদের এলাকার অধিকাংশ রাস্তাই পাকা হয়ে গেছে। প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুতের সংযোগ স্থাপিত হয়েছে।

নানা রকম সরকারি বেসরকারি সুযোগ সুবিধা পেয়ে এলাকার মানুষে এখন আগের চেয়ে অনেক ভাল আছে।

এ অবস্থায় নিজেদের এলাকার উন্নয়নের কথা চিন্তা করেই তারা হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করতে আগ্রহী হয়েছেন। তাদের মতে ইউনিয়ন পরিষদ এখন আমাদের অনেক কাজে আসছে। আমরা অল্প অল্প টাকা দিয়ে যদি ইউনিয়নের উন্নয়নে কাজে আসতে পারি তাহলে তা প্রকারান্তরে আমাদেরই লাভ।

বেরইল পলিতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এনামুল কবির রাজা জানান, ইউনিয়নের সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষের কাছ থেকে বসতবাড়ি ও ব্যবসায়ী ঘরের ট্যাক্স হিসাবে সর্বনিন্ম ১৩৫টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১হাজার টাকা পর্যন্ত ট্যাক্স ধার্য করে মোট ১৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ট্যাক্স আদায় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্যাক্সদাতাদের জন্য বিশেষ সম্মান জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। জনগণ ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে এই ট্যাক্স প্রদান করছেন। তিনি দাবী করেন, দেশের মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে ট্যাক্স মেলার মাধ্যমে ট্যাক্স আদায় এটিই প্রথম। এর মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রথম দিনেই বিপুল সংখ্যক মানুষ এ মেলায় এসেছেন। প্রথম দিনেই ৫শ ১৯ জন করদাতা ২লাখ ২হাজার ৫৮৫টাকা কর দিয়েছেন।

অনুষ্ঠান শেষে ইউনিয়নের ত্রিশজন ছাত্রছাত্রীর মাঝে ৩০টি বাইসাইকেল বিতরণ ও ইউনিয়নের নারীদের তিন মাসব্যাপী সেলাইমেশিন প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিসহ অতিথিরা। মেলা উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।

রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৪ আশ্বিন ১৪২৯ ২০ সফর ১৪৪৪

ইউনিয়ন পর্যায়ে দেশের প্রথম ট্যাক্স মেলা মাগুরায়

প্রতিনিধি, মাগুরা

মাগুরা সদরের ১১নং বেরইল পলিতা ইউনিয়ন পরিষদে দেশে প্রথমবারের মতো ইউনিয়নের বসতবাড়ি ও ব্যবসায়ী ঘরের সপ্তাহব্যাপী ট্যাক্স মেলার আয়োজন করা হয়। ইউনিয়নের জনগণকে নিজ এলাকার উন্নয়নে অংশগ্রহণ করতে ট্যাক্স দিতে উদ্বুদ্ধ করতে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন বলে জানান আয়োজকরা। গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে বেরইল পলিতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এনামুল কবির রাজার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মাগুরা জেলা প্রশাসক ডক্টর আশরাফুল আলম । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলু, মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিফ-উল-হাসানসহ অন্যরা। জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব খরচ পরিচালনায় জনগণের কাছ থেকে হোল্ডিং ট্যাক্স নেয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ সময়ই তা হয়ে উঠে না। এ ধরনের মেলার আয়োজন করে জনগণের মাঝে হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদানের প্রবনতা দেশের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

সদর উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নাসির বাবলু বলেন, দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। ছোট ছোট গ্রামেই এখন শহরের সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। মানুষ তার সুযোগ সুবিধা বুঝে পেতে ইউনিয়ন পরিষদকে ট্যাক্স দিতে উৎসাহি। অনেকেই সিরিয়ালে দাড়িয়ে ট্যাক্স দিচ্ছেন। এরই উৎকৃষ্ট উদাহরণ আজকের এ ট্যাক্স মেলায় ব্যাপক উপস্থিতি। একাধিক ট্যাক্স প্রদানকারি জানান, বর্তমানে তাদের এলাকার অধিকাংশ রাস্তাই পাকা হয়ে গেছে। প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুতের সংযোগ স্থাপিত হয়েছে।

নানা রকম সরকারি বেসরকারি সুযোগ সুবিধা পেয়ে এলাকার মানুষে এখন আগের চেয়ে অনেক ভাল আছে।

এ অবস্থায় নিজেদের এলাকার উন্নয়নের কথা চিন্তা করেই তারা হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করতে আগ্রহী হয়েছেন। তাদের মতে ইউনিয়ন পরিষদ এখন আমাদের অনেক কাজে আসছে। আমরা অল্প অল্প টাকা দিয়ে যদি ইউনিয়নের উন্নয়নে কাজে আসতে পারি তাহলে তা প্রকারান্তরে আমাদেরই লাভ।

বেরইল পলিতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এনামুল কবির রাজা জানান, ইউনিয়নের সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষের কাছ থেকে বসতবাড়ি ও ব্যবসায়ী ঘরের ট্যাক্স হিসাবে সর্বনিন্ম ১৩৫টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১হাজার টাকা পর্যন্ত ট্যাক্স ধার্য করে মোট ১৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ট্যাক্স আদায় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্যাক্সদাতাদের জন্য বিশেষ সম্মান জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। জনগণ ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে এই ট্যাক্স প্রদান করছেন। তিনি দাবী করেন, দেশের মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে ট্যাক্স মেলার মাধ্যমে ট্যাক্স আদায় এটিই প্রথম। এর মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রথম দিনেই বিপুল সংখ্যক মানুষ এ মেলায় এসেছেন। প্রথম দিনেই ৫শ ১৯ জন করদাতা ২লাখ ২হাজার ৫৮৫টাকা কর দিয়েছেন।

অনুষ্ঠান শেষে ইউনিয়নের ত্রিশজন ছাত্রছাত্রীর মাঝে ৩০টি বাইসাইকেল বিতরণ ও ইউনিয়নের নারীদের তিন মাসব্যাপী সেলাইমেশিন প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিসহ অতিথিরা। মেলা উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।