সদ্য গঠিত বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন পদবঞ্চিত নেতারা। অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এবং অগঠনতান্ত্রিকভাবে সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে।
গতকাল বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (বিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানায় বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি অংশ। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন পদবঞ্চিত নেতা ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। মিছিল শেষে অশ্বিনী কুমার হল সংলগ্ন জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে তারা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
প্রায় ১৪ বছর পর গত বৃহস্পতিবার নুরুল আমিনকে আহ্বায়ক ও রফিকুল ইসলামকে সদস্য-সচিব করে বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মজিবর রহমান, সদস্য-সচিব আকতার হোসেন এ কমিটি অনুমোদন দেন। আগামী দুই মাসের জন্য ৭ জন যুগ্ম আহ্বায়কসহ ৩৫ সদস্যের ওই কমিটি গঠন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঘোষিত কমিটির ১ নম্বর সদস্য জিয়াউল ইসলাম সাবু। তিনি বলেন বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির আহ্বায়ক মজিবর রহমান ও সদস্য-সচিব আকতার হোসেন কোন রকম আলাপ-আলোচনা ছাড়াই ১২ জুলাই সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করেন। এ নিয়ে তিনি ওই কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী এনায়েত হোসেনের সঙ্গে কোন আলোচনা করেননি। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিছ আক্তার জাহানসহ বিভিন্ন নেতাদের অনুরোধ ও পরামর্শ উপেক্ষা করে অসাংগঠনিকভাবে কমিটি বিলুপ্ত করেন।
পরে সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করার বিষয়টি ওই কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী এনায়েত হোসেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব, বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আবদুল আউয়াল মিন্টু মহাসচিবের বরাত দিয়ে সাংগঠনিক টিমের পরামর্শে সদর উপজেলা কমিটি করার লিখিত নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার দিকে বরিশাল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মজিবর রহমান তার ফেইসবুক একাউন্টে বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির ৩৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জিয়াউল ইসলাম বলেন, জামায়াত থেকে বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত নেতা নুরুল আমিনকে সদ্য ঘোষিত সদর উপজেলা বিএনপির কমিটির আহ্বায়ক ঘোষণা করা হয়েছে। যিনি সদ্য বিলুপ্ত উপজেলার বিএনপির সদস্যও ছিলেন না। এছাড়া নুরুল আমিন ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী কাজী এনায়েত হোসেনের সরাসরি বিরোধিতা করেন এবং তার ইউনিয়নে বিএনপির নেতাদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করান।
সংবাদ সম্মেলনে পদবঞ্চিত নেতারা বলেন, বিতর্কিত আহ্বায়ক কমিটিতে সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাদের সদস্য করা হয়েছে, যাদের অনেককে তারা চেনেন না।
এছাড়া কমিটিতে অনেককে যথাযথ স্থানে রাখা হয়নি, তাই কমিটি বিলুপ্ত দাবি করে সাবু বলেন, ঘোষিত কমিটিতে সদর উপজেলা বিএনপির পরীক্ষিত ত্যাগী জেল-জুলুম ও অত্যাচার সহ্যকারী নেতাকর্মীরা হতাশ, নিরাশ এবং হতবাক। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের অসন্তোষ চরম আকার ধারণ করেছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে নেতারা, আগামী তিন দিনের মধ্যে কমিটি বাতিলের দাবি জানান। দাবি না মানলে লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে অবাঞ্ছিত কমিটিকে হঠাতে বাধ্য করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
এছাড়া বরিশাল জেলা বিএনপির মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি পুনর্গঠনের দাবি জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চু, ঘোষিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মন্টু খান, সদস্য মামুন অর রশিদ, আনোয়ার হোসেন, আবদুর জব্বার শিকদার উপস্থিত ছিলেন।
রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৪ আশ্বিন ১৪২৯ ২০ সফর ১৪৪৪
প্রতিনিধি, বরিশাল
সদ্য গঠিত বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন পদবঞ্চিত নেতারা। অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এবং অগঠনতান্ত্রিকভাবে সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে।
গতকাল বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (বিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানায় বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি অংশ। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন পদবঞ্চিত নেতা ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। মিছিল শেষে অশ্বিনী কুমার হল সংলগ্ন জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে তারা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
প্রায় ১৪ বছর পর গত বৃহস্পতিবার নুরুল আমিনকে আহ্বায়ক ও রফিকুল ইসলামকে সদস্য-সচিব করে বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মজিবর রহমান, সদস্য-সচিব আকতার হোসেন এ কমিটি অনুমোদন দেন। আগামী দুই মাসের জন্য ৭ জন যুগ্ম আহ্বায়কসহ ৩৫ সদস্যের ওই কমিটি গঠন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঘোষিত কমিটির ১ নম্বর সদস্য জিয়াউল ইসলাম সাবু। তিনি বলেন বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির আহ্বায়ক মজিবর রহমান ও সদস্য-সচিব আকতার হোসেন কোন রকম আলাপ-আলোচনা ছাড়াই ১২ জুলাই সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করেন। এ নিয়ে তিনি ওই কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী এনায়েত হোসেনের সঙ্গে কোন আলোচনা করেননি। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিছ আক্তার জাহানসহ বিভিন্ন নেতাদের অনুরোধ ও পরামর্শ উপেক্ষা করে অসাংগঠনিকভাবে কমিটি বিলুপ্ত করেন।
পরে সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করার বিষয়টি ওই কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী এনায়েত হোসেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব, বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আবদুল আউয়াল মিন্টু মহাসচিবের বরাত দিয়ে সাংগঠনিক টিমের পরামর্শে সদর উপজেলা কমিটি করার লিখিত নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার দিকে বরিশাল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মজিবর রহমান তার ফেইসবুক একাউন্টে বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির ৩৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জিয়াউল ইসলাম বলেন, জামায়াত থেকে বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত নেতা নুরুল আমিনকে সদ্য ঘোষিত সদর উপজেলা বিএনপির কমিটির আহ্বায়ক ঘোষণা করা হয়েছে। যিনি সদ্য বিলুপ্ত উপজেলার বিএনপির সদস্যও ছিলেন না। এছাড়া নুরুল আমিন ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী কাজী এনায়েত হোসেনের সরাসরি বিরোধিতা করেন এবং তার ইউনিয়নে বিএনপির নেতাদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করান।
সংবাদ সম্মেলনে পদবঞ্চিত নেতারা বলেন, বিতর্কিত আহ্বায়ক কমিটিতে সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাদের সদস্য করা হয়েছে, যাদের অনেককে তারা চেনেন না।
এছাড়া কমিটিতে অনেককে যথাযথ স্থানে রাখা হয়নি, তাই কমিটি বিলুপ্ত দাবি করে সাবু বলেন, ঘোষিত কমিটিতে সদর উপজেলা বিএনপির পরীক্ষিত ত্যাগী জেল-জুলুম ও অত্যাচার সহ্যকারী নেতাকর্মীরা হতাশ, নিরাশ এবং হতবাক। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের অসন্তোষ চরম আকার ধারণ করেছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে নেতারা, আগামী তিন দিনের মধ্যে কমিটি বাতিলের দাবি জানান। দাবি না মানলে লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে অবাঞ্ছিত কমিটিকে হঠাতে বাধ্য করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
এছাড়া বরিশাল জেলা বিএনপির মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি পুনর্গঠনের দাবি জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চু, ঘোষিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মন্টু খান, সদস্য মামুন অর রশিদ, আনোয়ার হোসেন, আবদুর জব্বার শিকদার উপস্থিত ছিলেন।