বেলুন বিস্ফোরণে কৌতুক অভিনেতা রনিসহ দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে দগ্ধ কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনিসহ দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ৭২ ঘণ্টার আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। গতকাল দুপুরে এ তথ্য জানান শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইউব হোসেন। তিনি বলেন, কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনি ও পুলিশ কনস্টেবল জিল্লুর রহমানের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ৭২ ঘণ্টার আগে কিছুই বলা যাবে না। বর্তমানে তাদের হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে চিকিৎসা চলছে। আবু হেনা রনির দেহের ২৫ শতাংশ এবং কনস্টেবল জিল্লুর রহমানের দেহের ১৯ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে গাজীপুর থেকে দগ্ধ পাঁচজনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আনা হয়। তারা হলেন কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনি, মোশাররফ হোসেন, পুলিশ কনস্টেবল জিল্লুর রহমান, ইমরান হোসেন ও রুবেল হোসেন। তাদের মধ্যে মোশারফ হোসেন, ইমরান হোসেন ও রুবেল হোসেনকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

এদিকে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে কমেডিয়ান আবু হেনা রনিসহ পাঁচজন দ্বগ্ধের ঘটনায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের চিকিৎসাসহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। গতকাল সকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে বেলুন বিস্ফোরণে দ্বগ্ধদের খোঁজ নেন। এ সময় ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেনসহ অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ কমিশনার আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসা প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি-মিডিয়া) আবু সায়েম নয়ন জানান, পুলিশ কমিশনার এ সময় উপস্থিত কমেডিয়ান আবু হেনা রনি, পুলিশ সদস্য জিল্লুর রহমানের স্বজনদের কাছে অনাকাক্সিক্ষত এ দুর্ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তিনি চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং সুস্থতার জন্য যা যা করণীয় সবকিছু করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন আহতদের চিকিৎসায় ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জিএমপির ৪র্থ বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে মঞ্চের পূর্ব পাশে ছোট উদ্বোধন মঞ্চে ওড়ানোর জন্য কিছু গ্যাস বেলুন নেয়া হয়। কিন্তু বার বার চেষ্টা করলেও বেলুনগুলো উড়ছিল না। পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য সেই বেলুনগুলো মঞ্চের পেছনে নিয়ে যান। পরে পায়রা উড়িয়ে স্বরাষ্ট্রামন্ত্রীসহ অন্য অতিথিরা অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে চলে যান। কিছু সময় পর কয়েকজন পুলিশ সদস্য বেলুন বিক্রেতাকে বকাঝকা করলে বেলুন বিক্রেতা নিজেই বেলুনগুলো ওড়ানোর চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে আবু হেনা রনি, গাজীপুর জেলা পুলিশের কনস্টেবল মোশারফ হোসেন, গাছা থানার কনস্টেবল রুবেল মিয়া ও ইমরান হোসেন, টঙ্গী পূর্ব থানার কনস্টেবল জিলুর রহমান আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে আশপাশের পুলিশ সদস্যরা তাদের গায়ে পানি ঢেলে আগুন নেভান। এরপর গাড়িতে করে দ্রুত তাদের গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আবু হেনা রনি ও কনস্টেবল জিল্লুর রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান।

তদন্ত কমিটি গঠন

বেলুন বিস্ফোরণে আহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে শুক্রবার রাতেই গাজীপুর মহানগর পুলিশের ডিসি (উপ-কমিশনার, উত্তর) আবু তোরাব মো. শামসুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার। অন্য সদস্যরা হলেন এডিসি (উত্তর) রেদোয়ান আহমেদ, এসি প্রসিকিউশন মো. ফাহিম আশজাদ ও গাজীপুর সদর থানা পুলিশের ওসি মো. রফিকুল ইসলাম। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৪ আশ্বিন ১৪২৯ ২০ সফর ১৪৪৪

বেলুন বিস্ফোরণে কৌতুক অভিনেতা রনিসহ দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে দগ্ধ কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনিসহ দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ৭২ ঘণ্টার আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। গতকাল দুপুরে এ তথ্য জানান শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইউব হোসেন। তিনি বলেন, কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনি ও পুলিশ কনস্টেবল জিল্লুর রহমানের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ৭২ ঘণ্টার আগে কিছুই বলা যাবে না। বর্তমানে তাদের হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে চিকিৎসা চলছে। আবু হেনা রনির দেহের ২৫ শতাংশ এবং কনস্টেবল জিল্লুর রহমানের দেহের ১৯ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে গাজীপুর থেকে দগ্ধ পাঁচজনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আনা হয়। তারা হলেন কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনি, মোশাররফ হোসেন, পুলিশ কনস্টেবল জিল্লুর রহমান, ইমরান হোসেন ও রুবেল হোসেন। তাদের মধ্যে মোশারফ হোসেন, ইমরান হোসেন ও রুবেল হোসেনকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

এদিকে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে কমেডিয়ান আবু হেনা রনিসহ পাঁচজন দ্বগ্ধের ঘটনায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের চিকিৎসাসহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। গতকাল সকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে বেলুন বিস্ফোরণে দ্বগ্ধদের খোঁজ নেন। এ সময় ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেনসহ অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ কমিশনার আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসা প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি-মিডিয়া) আবু সায়েম নয়ন জানান, পুলিশ কমিশনার এ সময় উপস্থিত কমেডিয়ান আবু হেনা রনি, পুলিশ সদস্য জিল্লুর রহমানের স্বজনদের কাছে অনাকাক্সিক্ষত এ দুর্ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তিনি চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং সুস্থতার জন্য যা যা করণীয় সবকিছু করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন আহতদের চিকিৎসায় ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জিএমপির ৪র্থ বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে মঞ্চের পূর্ব পাশে ছোট উদ্বোধন মঞ্চে ওড়ানোর জন্য কিছু গ্যাস বেলুন নেয়া হয়। কিন্তু বার বার চেষ্টা করলেও বেলুনগুলো উড়ছিল না। পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য সেই বেলুনগুলো মঞ্চের পেছনে নিয়ে যান। পরে পায়রা উড়িয়ে স্বরাষ্ট্রামন্ত্রীসহ অন্য অতিথিরা অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে চলে যান। কিছু সময় পর কয়েকজন পুলিশ সদস্য বেলুন বিক্রেতাকে বকাঝকা করলে বেলুন বিক্রেতা নিজেই বেলুনগুলো ওড়ানোর চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে আবু হেনা রনি, গাজীপুর জেলা পুলিশের কনস্টেবল মোশারফ হোসেন, গাছা থানার কনস্টেবল রুবেল মিয়া ও ইমরান হোসেন, টঙ্গী পূর্ব থানার কনস্টেবল জিলুর রহমান আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে আশপাশের পুলিশ সদস্যরা তাদের গায়ে পানি ঢেলে আগুন নেভান। এরপর গাড়িতে করে দ্রুত তাদের গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আবু হেনা রনি ও কনস্টেবল জিল্লুর রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান।

তদন্ত কমিটি গঠন

বেলুন বিস্ফোরণে আহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে শুক্রবার রাতেই গাজীপুর মহানগর পুলিশের ডিসি (উপ-কমিশনার, উত্তর) আবু তোরাব মো. শামসুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার। অন্য সদস্যরা হলেন এডিসি (উত্তর) রেদোয়ান আহমেদ, এসি প্রসিকিউশন মো. ফাহিম আশজাদ ও গাজীপুর সদর থানা পুলিশের ওসি মো. রফিকুল ইসলাম। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।