প্রতিবাদলিপি দিয়ে মায়ানমারকে সতর্ক করলো বাংলাদেশ

সীমান্তে যে ঘটনা ঘটছে সেগুলোর পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় এ বিষয়ে সতর্ক করে মায়ানমার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল দেশটির রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সময় তার কাছে প্রতিবাদলিপি হস্তান্তর করা হয়। গত আগস্ট মাস থেকে এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো তলব করা হলো মায়ানমার রাষ্ট্রদূতকে।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব খুরশেদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বলেছি এটি মায়ানমারের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এটি কিভাবে সমাধান করা যায় সেটি মায়ানমারকে চিন্তা করতে হবে। মায়ানমারের গোলা যেন বাংলাদেশের ভূখন্ডে না আসে, সেটি দেখার দায়িত্ব মায়ানমারের’।

‘বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল এবং শান্তিকামী রাষ্ট্র। আমরা ধৈর্য ধরে এটি সহ্য করে যাচ্ছি। আমরা তাদের বলেছি বিষয়টি সমাধান করুন, আমাদের এখানে যেন কোন প্রাণহানি না হয়’ বলেন তিনি। খুরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা উচ্চপর্যায়ে একটি বৈঠক করেছি বাংলাদেশের সব এজেন্সিগুলোকে নিয়ে। বিজিবি এবং কোস্টগার্ডকে বলেছি সীমান্তে সজাগ থাকতে। সাগর দিয়ে রোহিঙ্গারা যেন ঢুকতে না পারে সে বিষয়ে তাদের জানানো হয়েছে’।

বারবার প্রতিবাদলিপি দেয়া হলেও কিছু হচ্ছে না এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই। একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিবেশীকে যতটুকু করা সম্ভব, ততটুকু আমরা করছি। আমাদের বক্তব্যে কোন ধরনের দুর্বলতা নেই’।

তিনি বলেন, ‘আসিয়ান রাষ্ট্রদূতদের এ বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে আমরা তাদের বলতে পারি যে আমরা বারবার বলার পরেও মায়ানমার কোন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ভবিষ্যতে মায়ানমারকে কিভাবে এ ধরনের কর্মকা- থেকে দূরে রাখা যায় সেই চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি’।

রাষ্ট্রদূত জবাবে কী বলেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনি বলেছেন উচ্চপর্যায়ে জানাবেন যাতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হয়’।

গতকাল বেলা ১১টায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল?য়ে আসেন রাষ্ট্রদূত উং অং কিউ মোয়েকেসহ দু’জন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব উইংয়ের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক নামজুল হুদা রাষ্ট্রদূত?কে তলব করেন। দুপুর ১২টার দিকে রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ত্যাগ করেন। এ সময় সাংবাদিকরা তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি দৌড়ে গাড়িতে ওঠেন।

গত শুক্রবার রাতে মায়ানমারের পাহাড় থেকে ছোড়া মর্টারের একাধিক গোলা রাখাইনের ওয়ালিডং পাহাড়ের পাদদেশের শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এসে পড়ে। এতে মো. ইকবাল নামের এক কিশোর মারা যায়। আহত হয় আশ্রয়শিবিরের পাঁচজন।

এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর মায়ানমার থেকে ছোড়া একটি গোলা তুমব্রু বাজারের পাশে কোনারপাড়ার কৃষক শাহজাহানের বাড়ির আঙিনায় এসে পড়ে। বাড়ির পাশেই শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির। এর আগেও বাংলাদেশের ভূখ-ে মায়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া দুটি গোলা এসে পড়েছিল। এসব ঘটনায় মায়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছিল ঢাকা।

এর আগে একই ধরনের ঘটনায় ২১ আগস্ট, ২৮ আগস্ট ও ৪ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রদূতকে তিন দফা ডাকা হয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।

সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৩ আশ্বিন ১৪২৯ ২১ সফর ১৪৪৪

প্রতিবাদলিপি দিয়ে মায়ানমারকে সতর্ক করলো বাংলাদেশ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সীমান্তে যে ঘটনা ঘটছে সেগুলোর পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় এ বিষয়ে সতর্ক করে মায়ানমার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল দেশটির রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সময় তার কাছে প্রতিবাদলিপি হস্তান্তর করা হয়। গত আগস্ট মাস থেকে এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো তলব করা হলো মায়ানমার রাষ্ট্রদূতকে।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব খুরশেদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বলেছি এটি মায়ানমারের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এটি কিভাবে সমাধান করা যায় সেটি মায়ানমারকে চিন্তা করতে হবে। মায়ানমারের গোলা যেন বাংলাদেশের ভূখন্ডে না আসে, সেটি দেখার দায়িত্ব মায়ানমারের’।

‘বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল এবং শান্তিকামী রাষ্ট্র। আমরা ধৈর্য ধরে এটি সহ্য করে যাচ্ছি। আমরা তাদের বলেছি বিষয়টি সমাধান করুন, আমাদের এখানে যেন কোন প্রাণহানি না হয়’ বলেন তিনি। খুরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা উচ্চপর্যায়ে একটি বৈঠক করেছি বাংলাদেশের সব এজেন্সিগুলোকে নিয়ে। বিজিবি এবং কোস্টগার্ডকে বলেছি সীমান্তে সজাগ থাকতে। সাগর দিয়ে রোহিঙ্গারা যেন ঢুকতে না পারে সে বিষয়ে তাদের জানানো হয়েছে’।

বারবার প্রতিবাদলিপি দেয়া হলেও কিছু হচ্ছে না এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই। একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিবেশীকে যতটুকু করা সম্ভব, ততটুকু আমরা করছি। আমাদের বক্তব্যে কোন ধরনের দুর্বলতা নেই’।

তিনি বলেন, ‘আসিয়ান রাষ্ট্রদূতদের এ বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে আমরা তাদের বলতে পারি যে আমরা বারবার বলার পরেও মায়ানমার কোন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ভবিষ্যতে মায়ানমারকে কিভাবে এ ধরনের কর্মকা- থেকে দূরে রাখা যায় সেই চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি’।

রাষ্ট্রদূত জবাবে কী বলেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনি বলেছেন উচ্চপর্যায়ে জানাবেন যাতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হয়’।

গতকাল বেলা ১১টায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল?য়ে আসেন রাষ্ট্রদূত উং অং কিউ মোয়েকেসহ দু’জন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব উইংয়ের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক নামজুল হুদা রাষ্ট্রদূত?কে তলব করেন। দুপুর ১২টার দিকে রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ত্যাগ করেন। এ সময় সাংবাদিকরা তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি দৌড়ে গাড়িতে ওঠেন।

গত শুক্রবার রাতে মায়ানমারের পাহাড় থেকে ছোড়া মর্টারের একাধিক গোলা রাখাইনের ওয়ালিডং পাহাড়ের পাদদেশের শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এসে পড়ে। এতে মো. ইকবাল নামের এক কিশোর মারা যায়। আহত হয় আশ্রয়শিবিরের পাঁচজন।

এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর মায়ানমার থেকে ছোড়া একটি গোলা তুমব্রু বাজারের পাশে কোনারপাড়ার কৃষক শাহজাহানের বাড়ির আঙিনায় এসে পড়ে। বাড়ির পাশেই শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির। এর আগেও বাংলাদেশের ভূখ-ে মায়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া দুটি গোলা এসে পড়েছিল। এসব ঘটনায় মায়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছিল ঢাকা।

এর আগে একই ধরনের ঘটনায় ২১ আগস্ট, ২৮ আগস্ট ও ৪ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রদূতকে তিন দফা ডাকা হয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।