চেয়ারম্যানের বিস্তর অনিয়ম : ইউপি কার্যালয় ঘেরাও ইউনিয়নবাসীর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাউসার হোসেনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে ইউনিয়নবাসী। গত রোববার দুপুরে তারা এই কর্মসূচি পালন করে। তাদের কর্মসূচিতে সমর্থন জানায় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা।

এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাউসার হোসেনের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেন পরিষদের ১২ জন সদস্য (মেম্বার)। ইউপি সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে অভিযোগও দায়ের করেন।

গত রোববার দুপুরে পাকশিমুল বাজার থেকে ইউনিয়নের লোকজন ব্যানার নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্দেশ্যে মিছিল সহকারে গিয়ে মানববন্ধন করতে চাইলে, পুলিশ এতে বাঁধা প্রদান করেন। পুলিশ তাদের কাছ থেকে মানববন্ধনের ব্যানার ছিনিয়ে নেন। পরে পুলিশী বাঁধা অতিক্রম করে জনগণ ইউপি কার্যালয়ের সামনে বসে অবস্থান পালন করে।

উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের জয়দরকান্দি গ্রামের মাহবুবুর রহমান, পরমানন্দপুর গ্রামের কাশেম মিয়া, পাকশিমুল গ্রামের সাবেক মেম্বার আবদুল মোতালেব বলেন, কাউসার হোসেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে বহু ওয়াদা করেছিলেন। নির্বাচিত হয়ে তিনি টাকা ছাড়া কোন কাজ করেন না। কোন কাজের জন্যে তার কাছে গেলে গালমন্দ করে বের করে দেয়।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য (৭,৮ও ৯) জুর বানু বেগম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান কাউসারের অনিয়ম চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। তার অনিয়ম থেকে রক্ষা পায় না ইউপি সদস্যরাও। তিনি টাকা ছাড়া কেন কোন প্রকার সনদপত্র দেন না। আমার বোনের ছেলের জাতীয় সনদপত্রের জন্য তাকে টাকা দিতে হয়েছে। জনগণ আমাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। তাদের কাছে আমরা মুখ দেখাতে পারি না।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য শরীফ উদ্দিন বলেন, আমার ছেলের জন্মনিবন্ধন পেয়েছি ৫ মাসে, ভাতিজা পেয়েছে ৬ মাস পর। বিষয়টি ইউএনও সাহেবকে বলার পর একদিন পরই পেয়ে যাই। তিনি অভিযোগ করে বলেন, চেয়ারম্যান কাউসার হোসেন বিনা রশিদে সুবিধাভোগিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। টিউবওয়েল বিতরণে অতিরিক্ত টাকা নেন। কোন বিষয়ে ইউপি সদস্যদের সাথে কোন পরামর্শ করেন না। এছাড়া তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাত করেছেন, বিষয় গুলো উল্লেখ করে আমরা ইউএনও বরাবর অভিযোগ দিয়েছি।

এ ব্যাপারে সরাইল থানার উপ-পরিদর্শক মো. বাবুল বলেন, মিছিল বা কোন প্রকার কর্মসূচী পালনে তারা অনুমতি নেয়নি, তাই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে মিছিল করতে দেওয়া হয়নি।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান কাউসার হোসেনের কাছে তার বক্তব্য জানতে সাংবাদিকরা ফোন দিলে তিনি বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল হক মৃদুল বলেন, ইউপি সদস্যদের একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। দোষী প্রমাণিত হলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৪ আশ্বিন ১৪২৯ ২২ সফর ১৪৪৪

চেয়ারম্যানের বিস্তর অনিয়ম : ইউপি কার্যালয় ঘেরাও ইউনিয়নবাসীর

জেলা বার্তা পরিবেশক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

image

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : সরাইলে গ্রামবাসীর কাছ থেকে মানববন্ধনের ব্যানার ছিনিয়ে নিচ্ছে পুলিশ -সংবাদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাউসার হোসেনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে ইউনিয়নবাসী। গত রোববার দুপুরে তারা এই কর্মসূচি পালন করে। তাদের কর্মসূচিতে সমর্থন জানায় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা।

এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাউসার হোসেনের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেন পরিষদের ১২ জন সদস্য (মেম্বার)। ইউপি সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে অভিযোগও দায়ের করেন।

গত রোববার দুপুরে পাকশিমুল বাজার থেকে ইউনিয়নের লোকজন ব্যানার নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্দেশ্যে মিছিল সহকারে গিয়ে মানববন্ধন করতে চাইলে, পুলিশ এতে বাঁধা প্রদান করেন। পুলিশ তাদের কাছ থেকে মানববন্ধনের ব্যানার ছিনিয়ে নেন। পরে পুলিশী বাঁধা অতিক্রম করে জনগণ ইউপি কার্যালয়ের সামনে বসে অবস্থান পালন করে।

উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের জয়দরকান্দি গ্রামের মাহবুবুর রহমান, পরমানন্দপুর গ্রামের কাশেম মিয়া, পাকশিমুল গ্রামের সাবেক মেম্বার আবদুল মোতালেব বলেন, কাউসার হোসেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে বহু ওয়াদা করেছিলেন। নির্বাচিত হয়ে তিনি টাকা ছাড়া কোন কাজ করেন না। কোন কাজের জন্যে তার কাছে গেলে গালমন্দ করে বের করে দেয়।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য (৭,৮ও ৯) জুর বানু বেগম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান কাউসারের অনিয়ম চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। তার অনিয়ম থেকে রক্ষা পায় না ইউপি সদস্যরাও। তিনি টাকা ছাড়া কেন কোন প্রকার সনদপত্র দেন না। আমার বোনের ছেলের জাতীয় সনদপত্রের জন্য তাকে টাকা দিতে হয়েছে। জনগণ আমাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। তাদের কাছে আমরা মুখ দেখাতে পারি না।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য শরীফ উদ্দিন বলেন, আমার ছেলের জন্মনিবন্ধন পেয়েছি ৫ মাসে, ভাতিজা পেয়েছে ৬ মাস পর। বিষয়টি ইউএনও সাহেবকে বলার পর একদিন পরই পেয়ে যাই। তিনি অভিযোগ করে বলেন, চেয়ারম্যান কাউসার হোসেন বিনা রশিদে সুবিধাভোগিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। টিউবওয়েল বিতরণে অতিরিক্ত টাকা নেন। কোন বিষয়ে ইউপি সদস্যদের সাথে কোন পরামর্শ করেন না। এছাড়া তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাত করেছেন, বিষয় গুলো উল্লেখ করে আমরা ইউএনও বরাবর অভিযোগ দিয়েছি।

এ ব্যাপারে সরাইল থানার উপ-পরিদর্শক মো. বাবুল বলেন, মিছিল বা কোন প্রকার কর্মসূচী পালনে তারা অনুমতি নেয়নি, তাই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে মিছিল করতে দেওয়া হয়নি।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান কাউসার হোসেনের কাছে তার বক্তব্য জানতে সাংবাদিকরা ফোন দিলে তিনি বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল হক মৃদুল বলেন, ইউপি সদস্যদের একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। দোষী প্রমাণিত হলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।