মানা হচ্ছে না নিয়োগবিধি পরীক্ষা কেন্দ্রে হ-য-ব-র-ল

যে কোন ধরনের পাবলিক পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগে মানা হচ্ছে না নিয়োগ নিতিমালা । ডিগ্রী কলেজ/ফাজিল মাদ্রাসা ও মাধ্যমিক স্তরের পাবলিক পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দাপটের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন রাজস্ব খাতের ২য় শ্রেণীর ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকর্তারা । এই বৈষম্যের ফলে কেন্দ্র সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে চলছে একদিকে অন্তর্দ্বন্দ্ব, আর অন্য দিকে চলমান এসএসসি/সমমান ও দাখিল পরীক্ষায় চলছে নকলের ছড়াছড়ি । অবস্থাটা এমনই যে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা নি¤œ পদস্থ কর্মকর্তাকে কোন আদেশ করবেন না নি¤œ পদস্থ কর্মকর্তা কোন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাকে কোন আদেশ করবেন, কে মানেন কার আদেশ । ঘটনাটি ঘটেছে রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলায় চলমান ডিগ্রী/এসএসসি/সমমান ও দাখিল পরীক্ষায় পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগে । কেন্দ্রগুলো সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় কোথাও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ২য় শ্রেনীর ১০ম গ্রেডের সকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামসুজ্জামান,ওই কেন্দ্রে সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফাজিল মাদ্রসার উপাধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (৫ম গ্রেডের) আব্দুল বাতেন । একই অফিসার চৌধুরানী ডিগ্রী কলেজ ডিগ্রী পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন । ওই কেন্দ্রের সচিব ৪র্থ গ্রেডের অধ্যক্ষ আনোয়ার বলেন আমি অনেকবার বলছিলাম আমার কেন্দ্রে কোন জুনিয়র অফিসার না দিয়ে ১ম শ্রেনীর একজন ক্যাডার অফিসার দেয়ার জন্য । চলমান ডিগ্রী/এসএসসি/সমমান ও দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রগুলির সচিবরা ৪র্থ, ৫ম ও ৭ম গ্রেডের বেতনে চাকুরি করলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ২য় শ্রেনীর ১০ম গ্রেডের ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকর্তারা । মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ নীতিমালার অন্যতম একটি শর্ত ১.৪ কোন বিভাগের কোন উচ্চ পদস্থ অফিসার যেন কোন নি¤œ পদস্থ কর্মকর্তার অধীনস্থ না হন । এই শর্ত ভঙ্গ করে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। অর্থাৎ নি¤œ পদস্থ কর্মকর্তার অধীনস্থ করা হয়েছে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদেরকে । পীরগাছায় ২০২২ সালে এসএসসি/সমমান ও দাখিল পরীক্ষার্থী ৪৬৬৩ জন । দাখিল পরীক্ষার ০২টিসহ মোট কেন্দ্র ০৭ টি । গত ১৭ সেপ্টেম্বর শনিবার পাওটানা ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা পর্যবেক্ষনের জন্য বাজারে যাওয়া মাত্র দেখা যায় ভিন্ন চিত্র । কেন্দ্রের ভিতর হতে গনিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র মোবাইলের মাধ্যমে বাহিরে এনে নিজ নিজ মাদ্রাসার সুপারদের নির্দেশে বিএসসি শিক্ষকরা প্রশ্নপত্রের সমাধান করে প্রতিটি হলে সরবরাহ করা হচ্ছে । স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা মন্তব্য করেন প্রশ্নপত্র বাহিরে আসার কারন হচ্ছে প্রটোকল না মেনে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া । ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কেন্দ্র সচিব ও সুপারদের তুলনায় নি¤œ পদস্থ কর্মকর্তা হওয়ায় তারা স্বাভাবিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না । পাওটানা ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের বেশ কয়েক জন পরীক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন প্রশ্নপত্র দেয়া মাত্র মোবাইলের মাধ্যমে বাহিরে দেয়া হচ্ছে, এতে পরীক্ষার সুন্দর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে । একইভাবে অধিকাংশ কেন্দ্রে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা অফিসে বসে থাকেন, আর হলে চলছে নকল সরবরাহ। শুধু তাই নয়, পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব প্রাপ্তরা ছাড়াও অনেকে ভিতরে অবস্থান করছেন । পীরগাছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কারিগরীর পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে অবাধে পুরা বই নিয়ে প্রবেশ করছে বহিরাগতরা । স্বাভাবিকভাবে নকল চলার কারণে আনন্দে হই হুল্লোর করছে নকলকারীরা আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রকৃত মেধাবী পরীক্ষার্থীরা । উপজেলার অধিকাংশ পরীক্ষা কেন্দ্রের একই চিত্র। অতিরিক্ত জেলা প্রাশাসক মো. ফিরুজুল ইসলাম (শিক্ষা ওআইসিটি) বলেন পরীক্ষা কেন্দ্রগুলির বিষয়ে খোজ নিচ্ছি । ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়ে কোন মন্তব্য করেন নি । এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ শামসুল আরেফীন সংবাদ কে বলেন, কে কোন গ্রেডে বেতন পান তা আমার জানা নাই,আমাকে দেখতে হবে।

তিনি আরো বলেন উপজেলা পর্যায়ে ৬ষ্ঠ গ্রেডের নিচে কেউ বেতন পান আমার জানা নাই ।

মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৪ আশ্বিন ১৪২৯ ২২ সফর ১৪৪৪

মানা হচ্ছে না নিয়োগবিধি পরীক্ষা কেন্দ্রে হ-য-ব-র-ল

প্রতিনিধি, পীরগাছা (রংপুর)

যে কোন ধরনের পাবলিক পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগে মানা হচ্ছে না নিয়োগ নিতিমালা । ডিগ্রী কলেজ/ফাজিল মাদ্রাসা ও মাধ্যমিক স্তরের পাবলিক পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দাপটের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন রাজস্ব খাতের ২য় শ্রেণীর ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকর্তারা । এই বৈষম্যের ফলে কেন্দ্র সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে চলছে একদিকে অন্তর্দ্বন্দ্ব, আর অন্য দিকে চলমান এসএসসি/সমমান ও দাখিল পরীক্ষায় চলছে নকলের ছড়াছড়ি । অবস্থাটা এমনই যে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা নি¤œ পদস্থ কর্মকর্তাকে কোন আদেশ করবেন না নি¤œ পদস্থ কর্মকর্তা কোন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাকে কোন আদেশ করবেন, কে মানেন কার আদেশ । ঘটনাটি ঘটেছে রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলায় চলমান ডিগ্রী/এসএসসি/সমমান ও দাখিল পরীক্ষায় পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগে । কেন্দ্রগুলো সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় কোথাও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ২য় শ্রেনীর ১০ম গ্রেডের সকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামসুজ্জামান,ওই কেন্দ্রে সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফাজিল মাদ্রসার উপাধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (৫ম গ্রেডের) আব্দুল বাতেন । একই অফিসার চৌধুরানী ডিগ্রী কলেজ ডিগ্রী পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন । ওই কেন্দ্রের সচিব ৪র্থ গ্রেডের অধ্যক্ষ আনোয়ার বলেন আমি অনেকবার বলছিলাম আমার কেন্দ্রে কোন জুনিয়র অফিসার না দিয়ে ১ম শ্রেনীর একজন ক্যাডার অফিসার দেয়ার জন্য । চলমান ডিগ্রী/এসএসসি/সমমান ও দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রগুলির সচিবরা ৪র্থ, ৫ম ও ৭ম গ্রেডের বেতনে চাকুরি করলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ২য় শ্রেনীর ১০ম গ্রেডের ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকর্তারা । মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ নীতিমালার অন্যতম একটি শর্ত ১.৪ কোন বিভাগের কোন উচ্চ পদস্থ অফিসার যেন কোন নি¤œ পদস্থ কর্মকর্তার অধীনস্থ না হন । এই শর্ত ভঙ্গ করে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। অর্থাৎ নি¤œ পদস্থ কর্মকর্তার অধীনস্থ করা হয়েছে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদেরকে । পীরগাছায় ২০২২ সালে এসএসসি/সমমান ও দাখিল পরীক্ষার্থী ৪৬৬৩ জন । দাখিল পরীক্ষার ০২টিসহ মোট কেন্দ্র ০৭ টি । গত ১৭ সেপ্টেম্বর শনিবার পাওটানা ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা পর্যবেক্ষনের জন্য বাজারে যাওয়া মাত্র দেখা যায় ভিন্ন চিত্র । কেন্দ্রের ভিতর হতে গনিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র মোবাইলের মাধ্যমে বাহিরে এনে নিজ নিজ মাদ্রাসার সুপারদের নির্দেশে বিএসসি শিক্ষকরা প্রশ্নপত্রের সমাধান করে প্রতিটি হলে সরবরাহ করা হচ্ছে । স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা মন্তব্য করেন প্রশ্নপত্র বাহিরে আসার কারন হচ্ছে প্রটোকল না মেনে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া । ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কেন্দ্র সচিব ও সুপারদের তুলনায় নি¤œ পদস্থ কর্মকর্তা হওয়ায় তারা স্বাভাবিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না । পাওটানা ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের বেশ কয়েক জন পরীক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন প্রশ্নপত্র দেয়া মাত্র মোবাইলের মাধ্যমে বাহিরে দেয়া হচ্ছে, এতে পরীক্ষার সুন্দর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে । একইভাবে অধিকাংশ কেন্দ্রে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা অফিসে বসে থাকেন, আর হলে চলছে নকল সরবরাহ। শুধু তাই নয়, পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব প্রাপ্তরা ছাড়াও অনেকে ভিতরে অবস্থান করছেন । পীরগাছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কারিগরীর পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে অবাধে পুরা বই নিয়ে প্রবেশ করছে বহিরাগতরা । স্বাভাবিকভাবে নকল চলার কারণে আনন্দে হই হুল্লোর করছে নকলকারীরা আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রকৃত মেধাবী পরীক্ষার্থীরা । উপজেলার অধিকাংশ পরীক্ষা কেন্দ্রের একই চিত্র। অতিরিক্ত জেলা প্রাশাসক মো. ফিরুজুল ইসলাম (শিক্ষা ওআইসিটি) বলেন পরীক্ষা কেন্দ্রগুলির বিষয়ে খোজ নিচ্ছি । ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়ে কোন মন্তব্য করেন নি । এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ শামসুল আরেফীন সংবাদ কে বলেন, কে কোন গ্রেডে বেতন পান তা আমার জানা নাই,আমাকে দেখতে হবে।

তিনি আরো বলেন উপজেলা পর্যায়ে ৬ষ্ঠ গ্রেডের নিচে কেউ বেতন পান আমার জানা নাই ।