সাধারণত পরীক্ষার উত্তরপত্রে প্রশ্নোত্তর লেখার নির্দিষ্ট পাতা শেষ হলে শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত খাতা ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত খাতায় কক্ষ পরিদর্শকের একজনের স্বাক্ষর সংযুক্ত থাকে। তবে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ঘটেছে একটি ভিন্ন ঘটনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তৃতীয়বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের (২০১৮-১৯ সেশন)ফাইনাল পরীক্ষায় একজন শিক্ষার্থীর তিনটি কোর্সের পরীক্ষার খাতায় মিলেছে তিন শিক্ষকের স্বাক্ষর। যাদের কেউই ওই তিন পরীক্ষায় পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন না।
পরিদর্শকের দায়িত্বে না থেকেও কীভাবে তিন শিক্ষকের স্বাক্ষর ওই শিক্ষার্থীর উত্তরপত্রের সঙ্গে যুক্ত তা নিয়ে ক্যাম্পাসে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, বিভাগের তৃতীয়বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের সময় স্বাক্ষর জটিলতা দেখতে পান এক পরীক্ষক। বিষয়টি পরীক্ষা কমিটিকে জানালে ওই শিক্ষার্থীকে ডেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে তিনটি কোর্সের পরীক্ষায় এমন অসদুপায় অবলম্বনের কথা স্বীকার করেন। পরবর্তীতে বিভাগের পরীক্ষা কমিটি প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরকে অবগত করেন।
৬টি কোর্সের মধ্যে বিএনজি-৩১২ কোর্সে সহকারী অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দিকের স্বাক্ষরযুক্ত একটি, বিএনজি-৩১৫ কোর্সে সহকারী অধ্যাপক মনিরুল ইসলামের স্বাক্ষরযুক্ত একটি ও বিএনজি-৩১৬ কোর্সে অধ্যাপক ফারজানা সিদ্দিকার স্বাক্ষরযুক্ত দুইটি অতিরিক্ত খাতা মূল উত্তরপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করেন ওই শিক্ষার্থী।
এসব খাতায় স্বাক্ষর পাওয়া শিক্ষকদের নাম ও পরীক্ষায় পরিদর্শকের দায়িত্বের শিডিউল অনুযায়ী পরীক্ষার দিন তিন শিক্ষকের কারও ডিউটি ছিল না। তৃতীয়বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষায় অসঙ্গিত ধরা পড়ায় বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নিতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরকে জানানো হয়েছে।
তবে ডিউটিতে না থেকেও উত্তপত্রে তার স্বাক্ষর থাকাটা কীভাবে সম্ভব- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হয়তো আগের পরীক্ষায় অতিরিক্ত খাতায় না লিখে বাসায় নিয়ে আবার পরীক্ষার হলে নিয়ে আসছিল।
অন্যদিকে মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা এসব বলতে পারবে। এখানে কোন ধরনের ষড়যন্ত্র থাকলে অবশ্যই তদন্তের মাধ্যমে উঠে আসবে।
এছাড়া অধ্যাপক ড. ফারজানা সিদ্দিকা বলেন, হতে পারে সে লুজশিট চুরি করেছে। তার সব খাতা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পাঠিয়েছি। তারা নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।
একজন শিক্ষার্থীর তিনটি কোর্সের উত্তরপত্রের অতিরিক্ত খাতায় তিন শিক্ষকের স্বাক্ষর আছে কিন্তু পরীক্ষার দিন তাদের কারও ডিউটি ছিল না- এ বিষয় জানতে চাইলে প্রধান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, এমন অভিযোগ আমি পাইনি। একজন শিক্ষার্থী বাইরে থেকে অতিরিক্ত খাতায় লিখে পরীক্ষার হলে নিয়ে আসছিল, আমি এমন অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি হবে। অপেক্ষা করেন।
মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৪ আশ্বিন ১৪২৯ ২২ সফর ১৪৪৪
শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
সাধারণত পরীক্ষার উত্তরপত্রে প্রশ্নোত্তর লেখার নির্দিষ্ট পাতা শেষ হলে শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত খাতা ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত খাতায় কক্ষ পরিদর্শকের একজনের স্বাক্ষর সংযুক্ত থাকে। তবে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ঘটেছে একটি ভিন্ন ঘটনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তৃতীয়বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের (২০১৮-১৯ সেশন)ফাইনাল পরীক্ষায় একজন শিক্ষার্থীর তিনটি কোর্সের পরীক্ষার খাতায় মিলেছে তিন শিক্ষকের স্বাক্ষর। যাদের কেউই ওই তিন পরীক্ষায় পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন না।
পরিদর্শকের দায়িত্বে না থেকেও কীভাবে তিন শিক্ষকের স্বাক্ষর ওই শিক্ষার্থীর উত্তরপত্রের সঙ্গে যুক্ত তা নিয়ে ক্যাম্পাসে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, বিভাগের তৃতীয়বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের সময় স্বাক্ষর জটিলতা দেখতে পান এক পরীক্ষক। বিষয়টি পরীক্ষা কমিটিকে জানালে ওই শিক্ষার্থীকে ডেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে তিনটি কোর্সের পরীক্ষায় এমন অসদুপায় অবলম্বনের কথা স্বীকার করেন। পরবর্তীতে বিভাগের পরীক্ষা কমিটি প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরকে অবগত করেন।
৬টি কোর্সের মধ্যে বিএনজি-৩১২ কোর্সে সহকারী অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দিকের স্বাক্ষরযুক্ত একটি, বিএনজি-৩১৫ কোর্সে সহকারী অধ্যাপক মনিরুল ইসলামের স্বাক্ষরযুক্ত একটি ও বিএনজি-৩১৬ কোর্সে অধ্যাপক ফারজানা সিদ্দিকার স্বাক্ষরযুক্ত দুইটি অতিরিক্ত খাতা মূল উত্তরপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করেন ওই শিক্ষার্থী।
এসব খাতায় স্বাক্ষর পাওয়া শিক্ষকদের নাম ও পরীক্ষায় পরিদর্শকের দায়িত্বের শিডিউল অনুযায়ী পরীক্ষার দিন তিন শিক্ষকের কারও ডিউটি ছিল না। তৃতীয়বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষায় অসঙ্গিত ধরা পড়ায় বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নিতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরকে জানানো হয়েছে।
তবে ডিউটিতে না থেকেও উত্তপত্রে তার স্বাক্ষর থাকাটা কীভাবে সম্ভব- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হয়তো আগের পরীক্ষায় অতিরিক্ত খাতায় না লিখে বাসায় নিয়ে আবার পরীক্ষার হলে নিয়ে আসছিল।
অন্যদিকে মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা এসব বলতে পারবে। এখানে কোন ধরনের ষড়যন্ত্র থাকলে অবশ্যই তদন্তের মাধ্যমে উঠে আসবে।
এছাড়া অধ্যাপক ড. ফারজানা সিদ্দিকা বলেন, হতে পারে সে লুজশিট চুরি করেছে। তার সব খাতা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পাঠিয়েছি। তারা নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।
একজন শিক্ষার্থীর তিনটি কোর্সের উত্তরপত্রের অতিরিক্ত খাতায় তিন শিক্ষকের স্বাক্ষর আছে কিন্তু পরীক্ষার দিন তাদের কারও ডিউটি ছিল না- এ বিষয় জানতে চাইলে প্রধান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, এমন অভিযোগ আমি পাইনি। একজন শিক্ষার্থী বাইরে থেকে অতিরিক্ত খাতায় লিখে পরীক্ষার হলে নিয়ে আসছিল, আমি এমন অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি হবে। অপেক্ষা করেন।