মায়ানমারের উসকানিতে পা দেবে না বাংলাদেশ

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে গোলাগুলির পর কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের আঞ্জুমান সীমান্তে নতুন করে গতকাল দুপুর থেকে তুমব্রু সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। আঞ্জুমান সীমান্তে সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা গোলাগুলির শব্দ পান।

এর ফলে ওই এলাকার বাসিন্দারা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন পার করছেন।

সীমান্তে মায়ানমারের একের পর এক মর্টার শেল ও গুলি এসে পড়ার ঘটনা বন্ধ না হওয়ায় ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও মিশন প্রধানদের এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছে সরকার। সীমান্তে মায়ানমারের কার্মকা- তাদের নিজ দেশের কাছে তুলে ধরার বিষয়ে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছেন ব্রিফিংয়ে অংশ নেয়া বিদেশি কূটনীতিক ও মিশন প্রধানরা। যদিও ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত এবং দূতবাসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বাংলাদেশের ঢাকা কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে অংশ নেয়া থেকে নিজেদের বিরত রাখে।

গতকাল সীমান্ত পরিস্থিতি জানাতে কূটনৈতিক এ ব্রিফিংয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ডাকা হয় ঢাকায় নিযুক্ত আসিয়ানভুক্ত দেশের বাইরে অন্য সব দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারকে। এতে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ইতালি, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, ভারত, রাশিয়াসহ সব দেশ উপস্থিতি থাকলেও অনুপস্থিত ছিল চীন। এর অগে গত বুধবার অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) সদস্যভুক্ত দেশগুলোর কাছে সীমান্ত পরিস্থিতি তুলে ধরেছিল সরকার।

তাদের সীমান্ত উত্তেজনার বিষয়ে ব্রিফ করেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অবসরপ্রাপ্ত) খুরশেদ আলম। মিশন প্রধানদের ব্রিফিং শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে (গতকাল) যারা এসেছিলেন, অন্যান্য রাষ্ট্রদূতরা তাদেরকেও আমরা একই জিনিস বলেছি, আমরা রোহিঙ্গাদের নিয়েছি পাঁচ বছর হয়ে গেল, তারা একটা রোহিঙ্গাও আজ পর্যন্ত ফেরত নেয়নি, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, আমরা ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করছি।’

‘আসলেই, আমরা ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করছি। কিন্তু আমরা এমন কিছু করি নাই, যার জন্য মায়ানমারের গোলা এসে আমাদের যে জনগণ, যারা আমাদের সীমান্তের ভেতরে আছে, তাদের জানমালের নিরাপত্তা ব্যাহত করবে এবং তারা গরু-বাছুর নিয়ে বাইরে যেতে পারবে না, তাদের ধানখেতে যেতে পারবে না, তাদের ঘরবাড়িতে থাকতে পারবে না, এটা তো চলতে দেয়া যায় না।’ বলেন খুরশেদ আলম।

‘এ কারণে আমরা তাদের কাছে বলেছি, আপনাদের সাহায্য আমরা চাই, যাতে মায়ানমার এ অঞ্চলে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ভবিষ্যতে ফায়দা লুটতে না পারে। যাতে এই রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে না হয়।’

বাংলাদেশ যে ‘চরম ধৈর্য’ ধরে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে, সে কথা কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনভাবে চাই না এখানে জড়িত হতে, যাতে এখানে জড়িত হলে মায়ানমার হয়ত সুযোগ পাবে, এই রোহিঙ্গাদের ফেরত না নেয়ার জন্য অজুহাত পাবে, সেই রকম কোন অজুহাত আমরা মায়ানমারকে এই মুহূর্তে দিতে চাচ্ছি না।’

মায়ানমারের কোন উসকানিতেই পা দেবে না বাংলাদেশ, এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূতরা সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব খুরশেদ আলম। তিনি বলেন, ‘তাদের যে মতামত, তারা অ্যাপ্রিশিয়েট করছে খুব এই যে চরম ধৈর্য আমরা দেখাচ্ছি এবং আমরা যেকোন উসকানিতে পা দিচ্ছি না, মায়ানমারের কোন উসকানিতে পা দিচ্ছি না, এটাকে তারা অ্যাপ্রিশিয়েট করেছে। এবং তারা বলেছে, তারা তাদের ক্যাপিটালে এই জিনিসগুলো জানাবে এবং যাতে ভবিষ্যতে যদি কোন কিছু করণীয় থাকে, বিশেষ করে জাতিসংঘে যদি কোন কিছু করণীয় থাকে, তারা আমাদের সে বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেছে।’

মায়ানমার ইচ্ছাকৃতভাবে এদিকে গোলা পাঠাচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নে নৌবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সেটা আমাদের ধর্তব্যের বিষয় না। ইচ্ছা করে করুক বা যা কিছুই করুক, আমরা যেটা বলি, এটা এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে ফেলবে। কাজেই মায়ানমার সরকারকে এটা বুঝতে হবে, তাতমাদোকে (মায়ানমারের সেনাবাহিনী) বুঝতে হবে, তারা যেটা করছে।’

‘বাংলাদেশ হলো পশ্চিমে, দক্ষিণে হলো মায়ানমার আর্মি, উত্তরে হলো আরাকান আর্মি। তো, তাদের গোলা কোনভাবেই বাংলাদেশে আসার তো কথা না, পশ্চিমেতো আসার কথা না। ভৌগোলিকভাবে এটা হয় না, যদি কেউ ইচ্ছাকৃত না করে।’

খুরশেদ আলম বলেন, ‘ইচ্ছাকৃত আমাদের এই কনফ্লিক্টে জড়ানোর যে প্রচেষ্টা, সেটা আমরা (ব্রিফিংয়ে) বলছি, আমরা এই প্রচেষ্টায় জড়িত হবো না। আমরা আপনাদের এটা অবহিত করলাম, আপনারা যে অ্যাকশন নেয়ার মনে করেন, যথাযথ মনে করবেন, সেটা আপনারা নেবেন।’

কূটনৈতিক পর্যায়ের পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনার বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে খুরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা সর্বস্তরেই মায়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমি শুধু এতটুকুই বলব, সর্বস্তরেই আমরা যোগাযোগ রাখছি, যাতে মায়ানমার বুঝতে পারে, এই রকম একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা তাদের জন্য যেমন বিপজ্জনক, বাংলাদেশ কোনভাবেই এটা সঠিকভাবে গ্রহণ করবে না।’

সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ওদের ভেতরে তো গোলাগুলি হচ্ছেই, সেটা অন্য জিনিস।’

এবার উখিয়া সীমান্তে গোলাগুলি

গতকাল সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের আঞ্জুমান সীমান্তে নতুন করে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর চৌধুরী জানান, বান্দরবানের তুমব্রুর পর এবার আঞ্জুমানপাড়া সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এতে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে তারা যাতে ভয়ে না থাকেন, সেজন্য বোঝানো হচ্ছে। বিষয়টি সীমান্ত বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, ‘সকালে উখিয়া সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার বিষয়টি স্থানীয়রা অবহিত করেছেন। এখানে সীমান্তের ৩০০ মিটারের ভেতরে প্রায় ১০০ পরিবার রয়েছে। আমরা তাদের খোঁজ-খবর রাখছি। পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের মানববন্ধন, নিরাপত্তা চেয়ে জাতিসংঘের কাছে চিঠি

কক্সবাজার থেকে জেলা বার্তা পরিবেশক জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সীমান্তে মায়ানমার বাহিনীর অব্যাহত মর্টার শেল ও গোলাবর্ষণের কারণে নিরাপত্তাহীনতা আছে উল্লেখ করে নিরাপত্তা চেয়ে জাতিসংঘের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বান্দরবানের তুমব্রু শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গারা।

গত সোমবার শূন্যরেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতা দিল মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত চিঠিটি মেইলযোগে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে পাঠানোর কথা নিশ্চিত করেছেন দিল মোহাম্মদ নিজেই। তিনি বলেন, ‘আমরা চিঠিতে জাতিসংঘকে জানিয়েছি সামরিক জান্তা বাহিনী যেকোন মুহূর্তে আমাদের ওপর আরও বড় আক্রমণ করতে পারে। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় জাতিসংঘকে শূন্যরেখার আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, ২০১৭ সালে জন্মভূমি থেকে নির্যাতিত হয়ে বিতাড়িত হওয়ার কথা উল্লেখ করে মায়ানমারের সামরিক জান্তা এখনও হত্যার চেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য ইচ্ছে করেই শূন্যরেখায় মর্টার শেল ও গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে। এতে একজনের মৃত্যু ও ৫ জন আহত হওয়ার কথা তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন বলে জানান।

অন্যদিকে গত সোমবার সীমান্তের তুমব্রু জিরো পয়েন্টের অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দারা মর্টার শেল হামলার নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে। এ সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মর্টার শেল হামলায় রোহিঙ্গা কিশোর ইকবাল হত্যার প্রতিবাদ জানানো হয়।

রাষ্ট্রদূতকে ডেকে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাখ্যা দিল মায়ানমার

গত সোমবার সকালে মায়ানমারের ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনায় নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কৌশলগত অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ বিভাগের মহাপরিচালক জ ফিউ উইন। গত সোমবার রাতে মায়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ফেইসবুক পেজে এই বৈঠকের তথ্য প্রকাশ করেছে।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তসহ আশপাশের এলাকায় উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য দেশটি এবার আরাকান আর্মির পাশাপাশি রাখাইনের সশস্ত্র সংগঠন আরসার ওপর ‘দায় চাপিয়েছে’। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান ‘আন্তরিক সম্পর্ক’ নষ্ট করার স্বার্থে এই দুই পক্ষ মিলে সীমান্ত এলাকায় চলমান পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

জানতে চাইলে দেশটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী বলেন, ‘সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে মায়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।’ বৈঠকে মায়ানমারের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাছে সীমান্তের উদ্ভূত পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জ ফিউ উইন বলেছেন, আরসাকে সঙ্গে নিয়ে আরাকান আর্মি গত ১৬ সেপ্টেম্বর তংপিউ (বাম) বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৩১ নম্বর সীমান্ত ফাঁড়িতে মর্টারের গোলা দিয়ে হামলা চালায়। ওই হামলার সময় তিনটি মর্টারের গোলা বাংলাদেশের ভূখ-ে পড়েছিল। এর পাশাপাশি আরাকান আর্মি ও আরসা ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর তংপিউ (ডান) বিজিপির ৩৪ নম্বর সীমান্ত ফাঁড়িতে মর্টারের গোলা নিয়ে পৃথক হামলা চালায়। এ সময় ৯টি মর্টারের গোলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ে।

বৈঠকে জ ফিউ উইন ওই দুটি ঘটনা উল্লেখ করে দাবি করেছেন, আরাকান আর্মি ও আরসা বাংলাদেশ-মায়ানমারের বিদ্যমান ‘আন্তরিক সম্পর্ককে’ নষ্ট করার উদ্দেশে হামলাগুলো চালিয়েছে।

বৈঠকে জ ফিউ উইন আরও বলেন, ‘সীমান্তের কাছাকাছি প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার সময় মায়ানমার অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সব সময় দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশসহ সব দেশের অখ-তা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আরাকান আর্মি ও আরসার পরিখা এবং ঘাঁটি রয়েছেÑ এমন তথ্য গত ৭ সেপ্টেম্বর কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছিল মায়ানমার। সোমবারের বৈঠকে আবার সে বিষয়টি তুলে ধরেন জ ফিউ উইন। তিনি ওই ঘাঁটিগুলোর বিষয়ে তদন্তের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া এবং সেগুলো গুঁড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান। পরে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে একটি অনানুষ্ঠানিক পত্র হস্তান্তর করেন।

image

শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের মানববন্ধন -সংবাদ

আরও খবর
মায়ানমারে স্কুলে সামরিক জান্তার হামলায় ১১ শিশু নিহত
করোনা : একদিনে মৃত্যু বেড়ে ৫, সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী
অস্থির এলপি গ্যাসের বাজার, গোয়েন্দা সংস্থাকে অনুসন্ধানের অনুরোধ করবেন ভোক্তার ডিজি
‘ত্রুটিযুক্ত’ লিজে দুর্বলতা কী, খতিয়ে দেখছে দুদক
ছাদখোলা বাসে নগর ঘুরবে বিজয়ী মেয়েরা
‘কৃষ্ণার সাফল্য, নিন্দুকের মুখে প্রশংসা’
মৌলবাদীদের হুমকি উপেক্ষা করে কোচ সাবিনা-মাসুরাদের কোচিং করাতেন
রংপুরের গালিচড়া গ্রামে স্বপ্নার সাফল্যে মধ্যরাত পর্যন্ত আনন্দ মিছিল
কেবল নেতিবাচক কথা শুনেছেন নীলার মা, আজ গর্বিত কুষ্টিয়া
পাঁচ নারী ফুটবলারের জন্য গর্বিত পার্বত্যবাসী

বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৫ আশ্বিন ১৪২৯ ২৩ সফর ১৪৪৪

মায়ানমারের উসকানিতে পা দেবে না বাংলাদেশ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের মানববন্ধন -সংবাদ

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে গোলাগুলির পর কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের আঞ্জুমান সীমান্তে নতুন করে গতকাল দুপুর থেকে তুমব্রু সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। আঞ্জুমান সীমান্তে সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা গোলাগুলির শব্দ পান।

এর ফলে ওই এলাকার বাসিন্দারা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন পার করছেন।

সীমান্তে মায়ানমারের একের পর এক মর্টার শেল ও গুলি এসে পড়ার ঘটনা বন্ধ না হওয়ায় ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও মিশন প্রধানদের এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছে সরকার। সীমান্তে মায়ানমারের কার্মকা- তাদের নিজ দেশের কাছে তুলে ধরার বিষয়ে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছেন ব্রিফিংয়ে অংশ নেয়া বিদেশি কূটনীতিক ও মিশন প্রধানরা। যদিও ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত এবং দূতবাসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বাংলাদেশের ঢাকা কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে অংশ নেয়া থেকে নিজেদের বিরত রাখে।

গতকাল সীমান্ত পরিস্থিতি জানাতে কূটনৈতিক এ ব্রিফিংয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ডাকা হয় ঢাকায় নিযুক্ত আসিয়ানভুক্ত দেশের বাইরে অন্য সব দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারকে। এতে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ইতালি, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, ভারত, রাশিয়াসহ সব দেশ উপস্থিতি থাকলেও অনুপস্থিত ছিল চীন। এর অগে গত বুধবার অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) সদস্যভুক্ত দেশগুলোর কাছে সীমান্ত পরিস্থিতি তুলে ধরেছিল সরকার।

তাদের সীমান্ত উত্তেজনার বিষয়ে ব্রিফ করেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অবসরপ্রাপ্ত) খুরশেদ আলম। মিশন প্রধানদের ব্রিফিং শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে (গতকাল) যারা এসেছিলেন, অন্যান্য রাষ্ট্রদূতরা তাদেরকেও আমরা একই জিনিস বলেছি, আমরা রোহিঙ্গাদের নিয়েছি পাঁচ বছর হয়ে গেল, তারা একটা রোহিঙ্গাও আজ পর্যন্ত ফেরত নেয়নি, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, আমরা ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করছি।’

‘আসলেই, আমরা ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করছি। কিন্তু আমরা এমন কিছু করি নাই, যার জন্য মায়ানমারের গোলা এসে আমাদের যে জনগণ, যারা আমাদের সীমান্তের ভেতরে আছে, তাদের জানমালের নিরাপত্তা ব্যাহত করবে এবং তারা গরু-বাছুর নিয়ে বাইরে যেতে পারবে না, তাদের ধানখেতে যেতে পারবে না, তাদের ঘরবাড়িতে থাকতে পারবে না, এটা তো চলতে দেয়া যায় না।’ বলেন খুরশেদ আলম।

‘এ কারণে আমরা তাদের কাছে বলেছি, আপনাদের সাহায্য আমরা চাই, যাতে মায়ানমার এ অঞ্চলে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ভবিষ্যতে ফায়দা লুটতে না পারে। যাতে এই রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে না হয়।’

বাংলাদেশ যে ‘চরম ধৈর্য’ ধরে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে, সে কথা কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনভাবে চাই না এখানে জড়িত হতে, যাতে এখানে জড়িত হলে মায়ানমার হয়ত সুযোগ পাবে, এই রোহিঙ্গাদের ফেরত না নেয়ার জন্য অজুহাত পাবে, সেই রকম কোন অজুহাত আমরা মায়ানমারকে এই মুহূর্তে দিতে চাচ্ছি না।’

মায়ানমারের কোন উসকানিতেই পা দেবে না বাংলাদেশ, এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূতরা সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব খুরশেদ আলম। তিনি বলেন, ‘তাদের যে মতামত, তারা অ্যাপ্রিশিয়েট করছে খুব এই যে চরম ধৈর্য আমরা দেখাচ্ছি এবং আমরা যেকোন উসকানিতে পা দিচ্ছি না, মায়ানমারের কোন উসকানিতে পা দিচ্ছি না, এটাকে তারা অ্যাপ্রিশিয়েট করেছে। এবং তারা বলেছে, তারা তাদের ক্যাপিটালে এই জিনিসগুলো জানাবে এবং যাতে ভবিষ্যতে যদি কোন কিছু করণীয় থাকে, বিশেষ করে জাতিসংঘে যদি কোন কিছু করণীয় থাকে, তারা আমাদের সে বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেছে।’

মায়ানমার ইচ্ছাকৃতভাবে এদিকে গোলা পাঠাচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নে নৌবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সেটা আমাদের ধর্তব্যের বিষয় না। ইচ্ছা করে করুক বা যা কিছুই করুক, আমরা যেটা বলি, এটা এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে ফেলবে। কাজেই মায়ানমার সরকারকে এটা বুঝতে হবে, তাতমাদোকে (মায়ানমারের সেনাবাহিনী) বুঝতে হবে, তারা যেটা করছে।’

‘বাংলাদেশ হলো পশ্চিমে, দক্ষিণে হলো মায়ানমার আর্মি, উত্তরে হলো আরাকান আর্মি। তো, তাদের গোলা কোনভাবেই বাংলাদেশে আসার তো কথা না, পশ্চিমেতো আসার কথা না। ভৌগোলিকভাবে এটা হয় না, যদি কেউ ইচ্ছাকৃত না করে।’

খুরশেদ আলম বলেন, ‘ইচ্ছাকৃত আমাদের এই কনফ্লিক্টে জড়ানোর যে প্রচেষ্টা, সেটা আমরা (ব্রিফিংয়ে) বলছি, আমরা এই প্রচেষ্টায় জড়িত হবো না। আমরা আপনাদের এটা অবহিত করলাম, আপনারা যে অ্যাকশন নেয়ার মনে করেন, যথাযথ মনে করবেন, সেটা আপনারা নেবেন।’

কূটনৈতিক পর্যায়ের পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনার বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে খুরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা সর্বস্তরেই মায়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমি শুধু এতটুকুই বলব, সর্বস্তরেই আমরা যোগাযোগ রাখছি, যাতে মায়ানমার বুঝতে পারে, এই রকম একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা তাদের জন্য যেমন বিপজ্জনক, বাংলাদেশ কোনভাবেই এটা সঠিকভাবে গ্রহণ করবে না।’

সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ওদের ভেতরে তো গোলাগুলি হচ্ছেই, সেটা অন্য জিনিস।’

এবার উখিয়া সীমান্তে গোলাগুলি

গতকাল সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের আঞ্জুমান সীমান্তে নতুন করে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর চৌধুরী জানান, বান্দরবানের তুমব্রুর পর এবার আঞ্জুমানপাড়া সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এতে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে তারা যাতে ভয়ে না থাকেন, সেজন্য বোঝানো হচ্ছে। বিষয়টি সীমান্ত বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, ‘সকালে উখিয়া সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার বিষয়টি স্থানীয়রা অবহিত করেছেন। এখানে সীমান্তের ৩০০ মিটারের ভেতরে প্রায় ১০০ পরিবার রয়েছে। আমরা তাদের খোঁজ-খবর রাখছি। পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের মানববন্ধন, নিরাপত্তা চেয়ে জাতিসংঘের কাছে চিঠি

কক্সবাজার থেকে জেলা বার্তা পরিবেশক জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সীমান্তে মায়ানমার বাহিনীর অব্যাহত মর্টার শেল ও গোলাবর্ষণের কারণে নিরাপত্তাহীনতা আছে উল্লেখ করে নিরাপত্তা চেয়ে জাতিসংঘের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বান্দরবানের তুমব্রু শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গারা।

গত সোমবার শূন্যরেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতা দিল মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত চিঠিটি মেইলযোগে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে পাঠানোর কথা নিশ্চিত করেছেন দিল মোহাম্মদ নিজেই। তিনি বলেন, ‘আমরা চিঠিতে জাতিসংঘকে জানিয়েছি সামরিক জান্তা বাহিনী যেকোন মুহূর্তে আমাদের ওপর আরও বড় আক্রমণ করতে পারে। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় জাতিসংঘকে শূন্যরেখার আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, ২০১৭ সালে জন্মভূমি থেকে নির্যাতিত হয়ে বিতাড়িত হওয়ার কথা উল্লেখ করে মায়ানমারের সামরিক জান্তা এখনও হত্যার চেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য ইচ্ছে করেই শূন্যরেখায় মর্টার শেল ও গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে। এতে একজনের মৃত্যু ও ৫ জন আহত হওয়ার কথা তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন বলে জানান।

অন্যদিকে গত সোমবার সীমান্তের তুমব্রু জিরো পয়েন্টের অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দারা মর্টার শেল হামলার নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে। এ সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মর্টার শেল হামলায় রোহিঙ্গা কিশোর ইকবাল হত্যার প্রতিবাদ জানানো হয়।

রাষ্ট্রদূতকে ডেকে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাখ্যা দিল মায়ানমার

গত সোমবার সকালে মায়ানমারের ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনায় নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কৌশলগত অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ বিভাগের মহাপরিচালক জ ফিউ উইন। গত সোমবার রাতে মায়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ফেইসবুক পেজে এই বৈঠকের তথ্য প্রকাশ করেছে।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তসহ আশপাশের এলাকায় উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য দেশটি এবার আরাকান আর্মির পাশাপাশি রাখাইনের সশস্ত্র সংগঠন আরসার ওপর ‘দায় চাপিয়েছে’। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান ‘আন্তরিক সম্পর্ক’ নষ্ট করার স্বার্থে এই দুই পক্ষ মিলে সীমান্ত এলাকায় চলমান পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

জানতে চাইলে দেশটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী বলেন, ‘সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে মায়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।’ বৈঠকে মায়ানমারের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাছে সীমান্তের উদ্ভূত পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জ ফিউ উইন বলেছেন, আরসাকে সঙ্গে নিয়ে আরাকান আর্মি গত ১৬ সেপ্টেম্বর তংপিউ (বাম) বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৩১ নম্বর সীমান্ত ফাঁড়িতে মর্টারের গোলা দিয়ে হামলা চালায়। ওই হামলার সময় তিনটি মর্টারের গোলা বাংলাদেশের ভূখ-ে পড়েছিল। এর পাশাপাশি আরাকান আর্মি ও আরসা ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর তংপিউ (ডান) বিজিপির ৩৪ নম্বর সীমান্ত ফাঁড়িতে মর্টারের গোলা নিয়ে পৃথক হামলা চালায়। এ সময় ৯টি মর্টারের গোলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ে।

বৈঠকে জ ফিউ উইন ওই দুটি ঘটনা উল্লেখ করে দাবি করেছেন, আরাকান আর্মি ও আরসা বাংলাদেশ-মায়ানমারের বিদ্যমান ‘আন্তরিক সম্পর্ককে’ নষ্ট করার উদ্দেশে হামলাগুলো চালিয়েছে।

বৈঠকে জ ফিউ উইন আরও বলেন, ‘সীমান্তের কাছাকাছি প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার সময় মায়ানমার অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সব সময় দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশসহ সব দেশের অখ-তা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আরাকান আর্মি ও আরসার পরিখা এবং ঘাঁটি রয়েছেÑ এমন তথ্য গত ৭ সেপ্টেম্বর কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছিল মায়ানমার। সোমবারের বৈঠকে আবার সে বিষয়টি তুলে ধরেন জ ফিউ উইন। তিনি ওই ঘাঁটিগুলোর বিষয়ে তদন্তের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া এবং সেগুলো গুঁড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান। পরে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে একটি অনানুষ্ঠানিক পত্র হস্তান্তর করেন।