অস্থির এলপি গ্যাসের বাজার, গোয়েন্দা সংস্থাকে অনুসন্ধানের অনুরোধ করবেন ভোক্তার ডিজি

বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে এলপি গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না এমন অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এএইচএম সফিকুজ্জামান। এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার ব্যবহার এবং অবৈধভাবে বড় থেকে ছোট সিলিন্ডারে গ্যাস ভরে বিক্রি করার অভিযোগ আছে বলেও জানান তিনি।

সিলিন্ডার গ্যাসের বাজার ‘অস্থির’ হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, ‘কেন এমন হচ্ছে, এ বিষয়ে আমি গোয়েন্দা সংস্থাকে অনুরোধ করব অনুসন্ধান করতে।

নির্দিষ্ট একটি চক্রের জন্য সরকার বিব্রত হবে, এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যাবে না। আমদানিকারক, উৎপাদক, বিক্রেতা পর্যায়ে আলোচনা করতে হবে, ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে দাম নিয়ে আসতে হবে।’

ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এলপি গ্যাস উৎপাদনকারী, বাজারজাতকারী এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সেপ্টেম্বরে ভোক্তা পর্যায়ে এলপি গ্যাসের ১২ কেজি সিলিন্ডারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২৩৫ টাকা এবং ২৫ কেজির মূল্য ২ হাজার ৫৭১ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। কিন্তু ভোক্তাদের কাছে এলপি গ্যাসের (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপিজি) ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম বাজারে এক হাজার ৪৫০ টাকা পর্যন্ত এবং ২৫ কেজির দাম ২ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়ার কথা জানায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

সভায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান বলেন, ‘নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে সিলিন্ডার বা বোতলজাত গ্যাস বাজারে বিক্রি হচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে নিয়মিত। এর বাইরে বাজারে সিলিন্ডারের মেয়াদোত্তীর্ণ ও ক্রস ফিলিংয়েরও (বড় থেকে ছোট সিলিন্ডারে ভরা) অভিযোগ আছে। তাই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে।’

নিরাপত্তার বিষয়টিও এখন ‘বার্নিং ইস্যু’ হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সিলিন্ডার বিস্ফোরণ কেন হবে? লাইফটাইম আছে। প্রস্তুতকারকদের এই জায়গায় মনোযোগ দিতে হবে। অনেক জায়গায় অতিরিক্ত লাভের আশায় সিলিন্ডার ক্রস ফিলিং করা হয়, এটি কোম্পানিগুলোর জন্য ক্ষতিকর। এখানে কোম্পানিগুলোকে মনোযোগ দিতে হবে।’

এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে অভিযান চালানোর হবে উল্লেখ করে এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘কাউকেই ‘ব্ল্যাঙ্ক চেক’ দেয়া হবে না।’

মতবিনিময় সভায় এলপি গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়, (অভিযোগ করে), বিশ্ববাজারে এলপিজির দাম বৃদ্ধি, ডলারের দাম বৃদ্ধি, আমদানি খরচ বৃদ্ধি এবং জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, এ বিষয়গুলো আমলে না নিয়ে বিইআরসি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে। যা প্রকৃত দামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

এলপিজি কোম্পানিগুলোর পক্ষে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেডের হেড অব সেলস জাকারিয়া জালাল জানান, এই খাতে তাদের বিনিয়োগ ২২ বছরের। তিনি বলেন, ‘২২ বছর পর ভোক্তা আমাদের ডাকল। তাহলে কি আমরা এতবছর মানুষকে ঠকিয়েছি? এলএনজি আমদানিতে ভর্তুকি দেয় সরকার, আর আমরা সিলিন্ডারে ৮২ টাকা ভ্যাট দিই। রেগুলেটরি ডিস্ট্রিবিউটর ও রিটেইলারদের জন্য বরাদ্দ রেখেছে ৭২ টাকা। অথচ এটার পরিবহন খরচ ১৬৩ টাকা। বাকি ৯১ টাকা কে দেবে? তেলের দাম বেড়েছে দুই মাস হলো। এখনও বিইআরসি ৬৫ টাকা লিটারে তেলের হিসাব করে। তাহলে কি সিলিন্ডার পরিবহনে আমাদের খরচ বাড়ে নাই? কে না জানে ডলারের দাম বেড়েছে, তারা কেন কম দামে ডলার ধরে দেয়? তাদের (বিইআরসি) কাছে জানতে চাইলে কোন জবাব পাওয়া যায় না।’

জিএমআই কোম্পানির চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘এ এলপিজি খাতে ৩২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ। আমিও জীবনের শেষ সময়ে বড় বিনিয়োগ করে বসেছি এ খাতে। সেটা বড় ভুল। সরকার যেমন প্রয়োজনে রাতারাতি একদিনে ৪৮ টাকা জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে, আমরা সেটা করতে পারি না। শুধু লোকসান করি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পরিপূর্ণ ব্যবসায়ী, সিস্টেমেটিক ব্যবসায়ী, আমাদের ইথিকস আছে। সেজন্য আমরা লোকসান দিয়েও চালিয়ে যাচ্ছি। আপনারা খোঁজ নেন, লোকসানের কারণে এখন আমরা ব্যাংক লোনও পাচ্ছি না। আগে লোন দেয়ার জন্য ব্যাংক ঘুরতো।’

জবাবে মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান বলেন, ‘তারপরও যখন সরকার দাম নির্ধারণ করে, সেটা মানতে হবে। ভোক্তারা নির্ধারিত দামে না পেলে সেটা প্রতারণা হবে। আপনাদের সমস্যাগুলো দাম নির্ধারণের আগে কর্তৃপক্ষকে বোঝাতে হবে। সেটা আপনারা করতে পারছেন না এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।’

সভায় কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) প্রতিনিধি কাজী আবদুল হান্নান বলেন, ‘২২ বছর ধরে বাজারে এই সিলিন্ডার ব্যবসা চলছে। অতীতে কখনো এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ক্রমাগত মার্কেট বাড়ছে কিন্তু কোন পরিবর্তন আসছে না। যেমন খুশি তেমন দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে। এখানে বিইআরসি কিছুই করতে পারছে না। তখন আমরা বাধ্য হয়েছি আদালতে যেতে। পরবর্তীতে আদালতের এক নির্দেশের মাধ্যমে বিইআরসি মূল্য নির্ধারণ করতে বাধ্য হয়েছে।’

ডিলার ও বিক্রেতাদের পক্ষ থেকে কয়েকজন সভায় বলেন, ‘অপারেটর কোম্পানিগুলো তাদের মুনাফা কমিয়ে দিচ্ছে। এমনও হয়েছে, কোম্পানি এক মাসে তিন দফা মুনাফা কমিয়েছে। সেজন্য তাদের লাভ থাকছে না। অন্যদিকে তারা বারবার সরকারের বিভিন্ন সংস্থার অভিযানে জরিমানার শিকার হচ্ছেন। যদিও দাম বৃদ্ধির পেছনে অপারেটররা দায়ী।’

মহাপরিচালক বলেন, ‘আমি বিইআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসব। তিনিই আমাকে এর আগে দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযানের কথা বলেছিলেন। এখন সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করে ডেভেলপ করতে পারব।’

সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কিছুটা বেশি রাখার পরও লোকসান হচ্ছে, ব্যবসায়ীদের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমি কখনো কোন ব্যবসায়ী লাভ করছে, এমন শুনিনি। আপনাদের কথা, আপনারা শুধু লোকসানই করেন। তারপরও আমরা দেখি আপনাদের ব্যবসা বড় হয়।’

ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে পাওয়া তথ্য এবং মতবিনিময় সভায় উঠে আসা ইস্যুগুলো নিয়ে কিছু সুপারিশ দেয়া হবে জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, ‘সেটা যদি সরকারের সর্বোচ্চ মহলে বিবেচনা করে তবে পরিস্থিতি উন্নতি হবে।’

বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৫ আশ্বিন ১৪২৯ ২৩ সফর ১৪৪৪

অস্থির এলপি গ্যাসের বাজার, গোয়েন্দা সংস্থাকে অনুসন্ধানের অনুরোধ করবেন ভোক্তার ডিজি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে এলপি গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না এমন অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এএইচএম সফিকুজ্জামান। এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার ব্যবহার এবং অবৈধভাবে বড় থেকে ছোট সিলিন্ডারে গ্যাস ভরে বিক্রি করার অভিযোগ আছে বলেও জানান তিনি।

সিলিন্ডার গ্যাসের বাজার ‘অস্থির’ হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, ‘কেন এমন হচ্ছে, এ বিষয়ে আমি গোয়েন্দা সংস্থাকে অনুরোধ করব অনুসন্ধান করতে।

নির্দিষ্ট একটি চক্রের জন্য সরকার বিব্রত হবে, এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যাবে না। আমদানিকারক, উৎপাদক, বিক্রেতা পর্যায়ে আলোচনা করতে হবে, ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে দাম নিয়ে আসতে হবে।’

ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এলপি গ্যাস উৎপাদনকারী, বাজারজাতকারী এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সেপ্টেম্বরে ভোক্তা পর্যায়ে এলপি গ্যাসের ১২ কেজি সিলিন্ডারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২৩৫ টাকা এবং ২৫ কেজির মূল্য ২ হাজার ৫৭১ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। কিন্তু ভোক্তাদের কাছে এলপি গ্যাসের (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপিজি) ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম বাজারে এক হাজার ৪৫০ টাকা পর্যন্ত এবং ২৫ কেজির দাম ২ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়ার কথা জানায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

সভায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান বলেন, ‘নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে সিলিন্ডার বা বোতলজাত গ্যাস বাজারে বিক্রি হচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে নিয়মিত। এর বাইরে বাজারে সিলিন্ডারের মেয়াদোত্তীর্ণ ও ক্রস ফিলিংয়েরও (বড় থেকে ছোট সিলিন্ডারে ভরা) অভিযোগ আছে। তাই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে।’

নিরাপত্তার বিষয়টিও এখন ‘বার্নিং ইস্যু’ হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সিলিন্ডার বিস্ফোরণ কেন হবে? লাইফটাইম আছে। প্রস্তুতকারকদের এই জায়গায় মনোযোগ দিতে হবে। অনেক জায়গায় অতিরিক্ত লাভের আশায় সিলিন্ডার ক্রস ফিলিং করা হয়, এটি কোম্পানিগুলোর জন্য ক্ষতিকর। এখানে কোম্পানিগুলোকে মনোযোগ দিতে হবে।’

এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে অভিযান চালানোর হবে উল্লেখ করে এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘কাউকেই ‘ব্ল্যাঙ্ক চেক’ দেয়া হবে না।’

মতবিনিময় সভায় এলপি গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়, (অভিযোগ করে), বিশ্ববাজারে এলপিজির দাম বৃদ্ধি, ডলারের দাম বৃদ্ধি, আমদানি খরচ বৃদ্ধি এবং জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, এ বিষয়গুলো আমলে না নিয়ে বিইআরসি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে। যা প্রকৃত দামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

এলপিজি কোম্পানিগুলোর পক্ষে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেডের হেড অব সেলস জাকারিয়া জালাল জানান, এই খাতে তাদের বিনিয়োগ ২২ বছরের। তিনি বলেন, ‘২২ বছর পর ভোক্তা আমাদের ডাকল। তাহলে কি আমরা এতবছর মানুষকে ঠকিয়েছি? এলএনজি আমদানিতে ভর্তুকি দেয় সরকার, আর আমরা সিলিন্ডারে ৮২ টাকা ভ্যাট দিই। রেগুলেটরি ডিস্ট্রিবিউটর ও রিটেইলারদের জন্য বরাদ্দ রেখেছে ৭২ টাকা। অথচ এটার পরিবহন খরচ ১৬৩ টাকা। বাকি ৯১ টাকা কে দেবে? তেলের দাম বেড়েছে দুই মাস হলো। এখনও বিইআরসি ৬৫ টাকা লিটারে তেলের হিসাব করে। তাহলে কি সিলিন্ডার পরিবহনে আমাদের খরচ বাড়ে নাই? কে না জানে ডলারের দাম বেড়েছে, তারা কেন কম দামে ডলার ধরে দেয়? তাদের (বিইআরসি) কাছে জানতে চাইলে কোন জবাব পাওয়া যায় না।’

জিএমআই কোম্পানির চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘এ এলপিজি খাতে ৩২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ। আমিও জীবনের শেষ সময়ে বড় বিনিয়োগ করে বসেছি এ খাতে। সেটা বড় ভুল। সরকার যেমন প্রয়োজনে রাতারাতি একদিনে ৪৮ টাকা জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে, আমরা সেটা করতে পারি না। শুধু লোকসান করি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পরিপূর্ণ ব্যবসায়ী, সিস্টেমেটিক ব্যবসায়ী, আমাদের ইথিকস আছে। সেজন্য আমরা লোকসান দিয়েও চালিয়ে যাচ্ছি। আপনারা খোঁজ নেন, লোকসানের কারণে এখন আমরা ব্যাংক লোনও পাচ্ছি না। আগে লোন দেয়ার জন্য ব্যাংক ঘুরতো।’

জবাবে মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান বলেন, ‘তারপরও যখন সরকার দাম নির্ধারণ করে, সেটা মানতে হবে। ভোক্তারা নির্ধারিত দামে না পেলে সেটা প্রতারণা হবে। আপনাদের সমস্যাগুলো দাম নির্ধারণের আগে কর্তৃপক্ষকে বোঝাতে হবে। সেটা আপনারা করতে পারছেন না এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।’

সভায় কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) প্রতিনিধি কাজী আবদুল হান্নান বলেন, ‘২২ বছর ধরে বাজারে এই সিলিন্ডার ব্যবসা চলছে। অতীতে কখনো এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ক্রমাগত মার্কেট বাড়ছে কিন্তু কোন পরিবর্তন আসছে না। যেমন খুশি তেমন দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে। এখানে বিইআরসি কিছুই করতে পারছে না। তখন আমরা বাধ্য হয়েছি আদালতে যেতে। পরবর্তীতে আদালতের এক নির্দেশের মাধ্যমে বিইআরসি মূল্য নির্ধারণ করতে বাধ্য হয়েছে।’

ডিলার ও বিক্রেতাদের পক্ষ থেকে কয়েকজন সভায় বলেন, ‘অপারেটর কোম্পানিগুলো তাদের মুনাফা কমিয়ে দিচ্ছে। এমনও হয়েছে, কোম্পানি এক মাসে তিন দফা মুনাফা কমিয়েছে। সেজন্য তাদের লাভ থাকছে না। অন্যদিকে তারা বারবার সরকারের বিভিন্ন সংস্থার অভিযানে জরিমানার শিকার হচ্ছেন। যদিও দাম বৃদ্ধির পেছনে অপারেটররা দায়ী।’

মহাপরিচালক বলেন, ‘আমি বিইআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসব। তিনিই আমাকে এর আগে দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযানের কথা বলেছিলেন। এখন সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করে ডেভেলপ করতে পারব।’

সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কিছুটা বেশি রাখার পরও লোকসান হচ্ছে, ব্যবসায়ীদের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমি কখনো কোন ব্যবসায়ী লাভ করছে, এমন শুনিনি। আপনাদের কথা, আপনারা শুধু লোকসানই করেন। তারপরও আমরা দেখি আপনাদের ব্যবসা বড় হয়।’

ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে পাওয়া তথ্য এবং মতবিনিময় সভায় উঠে আসা ইস্যুগুলো নিয়ে কিছু সুপারিশ দেয়া হবে জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, ‘সেটা যদি সরকারের সর্বোচ্চ মহলে বিবেচনা করে তবে পরিস্থিতি উন্নতি হবে।’