নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে যৌতুকের টাকা না পেয়ে বিয়ের মাত্র ৭ দিনের মাথায় স্ত্রীর গলাকেটে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেছে আদালত। গতকাল জেলা ও দায়রা জজ মুন্সি মশিয়ার রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) মনিরুজ্জামান বুলবুল। তিনি জানান, এই মামলায় একমাত্র আসামি মো. শামীম (২৯) রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি শামীম রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের পঁচাইখা গ্রামের মনির মিয়ার ছেলে। তিনি ওই গ্রামের একটি অ্যামব্রয়ডারি কারখানার মেশিন অপারেটর ছিলেন।
মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ আগস্ট শামীমের সঙ্গে একই গ্রামের মনির হোসেনের মেয়ে শিউলি আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ছেলেপক্ষ ৭০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করলেও ৩৫ হাজার টাকা দেয় মেয়ের দরিদ্র পরিবার। এ নিয়ে কলহের জেরে বিয়ের সাতদিনের মাথায় শামীম তার নববিবাহিত স্ত্রী শিউলিকে গলাকেটে হত্যা করে। ৩১ আগস্ট সকালে শিউলির গলাকাটা লাশ উদ্ধার হলে তার মা আমেনা বেগম রূপগঞ্জ থানায় শামীমসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর স্বামী শামীম আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। থানা পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে একমাত্র অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, দাম্পত্য কলহের জেরে শিউলির হাতের মেহেদীর রঙ শুকানোর আগেই তাকে কলাকেটে হত্যা করে শামীম।’
পিপি মনিরুজ্জামান বুলবুল বলেন, ‘অভিযোগ গঠনের পর আদালতে বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালত একমাত্র আসামির যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করেন।’
তবে এই রায়ে সন্তুষ্ট নন বলে জানান মামলার বাদী ও নিহতের মা আমেনা খাতুন। পেশায় গৃহকর্মী এই নারী বলেন, ‘ঘুমের মধ্যে বটি দিয়ে আমার মেয়ের গলাকেটে হত্যা করেছে তার স্বামী। আমরা আদালতের কাছে আসামির ফাঁসি চাইছিলাম। আমি গরিব মানুষ, মানুষের বাড়িতে কাম কইরা খাই। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাওয়ার সামর্থ্যও নাই।’
বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৫ আশ্বিন ১৪২৯ ২৩ সফর ১৪৪৪
প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে যৌতুকের টাকা না পেয়ে বিয়ের মাত্র ৭ দিনের মাথায় স্ত্রীর গলাকেটে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেছে আদালত। গতকাল জেলা ও দায়রা জজ মুন্সি মশিয়ার রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) মনিরুজ্জামান বুলবুল। তিনি জানান, এই মামলায় একমাত্র আসামি মো. শামীম (২৯) রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি শামীম রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের পঁচাইখা গ্রামের মনির মিয়ার ছেলে। তিনি ওই গ্রামের একটি অ্যামব্রয়ডারি কারখানার মেশিন অপারেটর ছিলেন।
মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ আগস্ট শামীমের সঙ্গে একই গ্রামের মনির হোসেনের মেয়ে শিউলি আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ছেলেপক্ষ ৭০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করলেও ৩৫ হাজার টাকা দেয় মেয়ের দরিদ্র পরিবার। এ নিয়ে কলহের জেরে বিয়ের সাতদিনের মাথায় শামীম তার নববিবাহিত স্ত্রী শিউলিকে গলাকেটে হত্যা করে। ৩১ আগস্ট সকালে শিউলির গলাকাটা লাশ উদ্ধার হলে তার মা আমেনা বেগম রূপগঞ্জ থানায় শামীমসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর স্বামী শামীম আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। থানা পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে একমাত্র অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, দাম্পত্য কলহের জেরে শিউলির হাতের মেহেদীর রঙ শুকানোর আগেই তাকে কলাকেটে হত্যা করে শামীম।’
পিপি মনিরুজ্জামান বুলবুল বলেন, ‘অভিযোগ গঠনের পর আদালতে বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালত একমাত্র আসামির যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করেন।’
তবে এই রায়ে সন্তুষ্ট নন বলে জানান মামলার বাদী ও নিহতের মা আমেনা খাতুন। পেশায় গৃহকর্মী এই নারী বলেন, ‘ঘুমের মধ্যে বটি দিয়ে আমার মেয়ের গলাকেটে হত্যা করেছে তার স্বামী। আমরা আদালতের কাছে আসামির ফাঁসি চাইছিলাম। আমি গরিব মানুষ, মানুষের বাড়িতে কাম কইরা খাই। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাওয়ার সামর্থ্যও নাই।’