প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে সংশ্লিষ্টদের নানা প্রচেষ্টার পরও রাশিয়ার জ্বালানি তেলের সুবিধা নিতে পারলো না বাংলাদেশ। দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় রিফাইনারি বলছে, রুশ তেলের ঘনত্ব তুলনামূলক বেশি হওয়ায় তা ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পরিশোধন করা সম্ভব হচ্ছে না।
গত আগস্টের শেষ দিকে রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেলের নমুনা ঢাকা এয়ারপোর্টে আসে। পরে তা ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পাঠানো হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন বাংলাদেশে পেট্রোলিয়াম করপোরেশনে (বিপিসি) জমা দেয় ইস্টার্ন রিফাইনারি।
কারিগরি টিম প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের রিফাইনারিটি ৫০ বছরের পুরানো। শুধু হালকা অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করার জন্য রিফাইনারিটিকে ডিজাইন করা হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়ার তেল অপেক্ষাকৃত ভারী হওয়ায় এই রিফাইনারিতে পরিশোধন সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইস্টার্ন রিফইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. লোকমান বুধবার রাতে সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের অনেক পুরাতন মেশিনারিজ। এই মেশিনারিজ দিয়ে এটা রিফাইন করা সম্ভব না। টেস্ট করে আমরা প্রতিবেদনটা বিপিসিতে জমা দিয়েছি। বিপিসি এটা যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয়কে জানাবে।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জারুবেঝনেফ জেএসসি তাদের বাংলাদেশি এজেন্ট ন্যাশনাল ইলেকট্রিক বিডি লিমিটেডের প্রতিনিধির মাধ্যমে তেলের নমুনা পাঠায় ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। গত ২৪ আগস্ট নমুনা ঢাকা বিমানবন্দরে আসে।
নমুনা পরীক্ষা করতে সময় বেশি লেগেছে কিনা, এমন পশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নমুনা কাস্টমের কিছুদিন আটকে ছিল। আমরা ১ সেপ্টেম্বর নমুনা বুঝে পেয়েছি।
এখানে ১৪টা আইটেম। প্রতিটা আলাদা করে টেস্ট করা হয়েছে। আমাদের ১০-১২ দিনতো টেস্ট করতেই লেগেছে। এরপর প্রতিবেদন তৈরি করতেও সময় লেগেছে।’
রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে নির্ভুল একটা প্রতিবেদন তৈরির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তেমন বেশি সময় নেয়া হয়নি।’
পুরাতন মেশিনারিজের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, এমডি লোকমান বলেন, ‘এটা এমন নয়, যে কিছু মেশিন বদল করা হলো, নতুন আনা হলো... তাহলে ওই তেল রিফাইন করা যাবে। এখানে টোটাল প্রসেস প্ল্যান্টের ডিজাইনই হচ্ছে লাইট ক্রুডের জন্য। তাই এটা করা সম্ভব হচ্ছে না।’
ইআরএল সূত্রে জানা যায়, ২০ পাতার প্রতিবেদনের শেষদিকের অংশে মতামত দিয়েছে ইআরএল’র টেকনিক্যাল কমিটি। এ কমিটির প্রধান ছিলেন ইআরএল’র মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন অ্যান্ড প্ল্যানিং) রায়হান আহমদ। সদস্য সচিব ছিলেন ব্যবস্থাপক (কোয়ালিটি কন্ট্রোল) সামিউল ইসলাম।
বাংলাদেশ মূলত অপরিশোধিত তেল কেনে সৌদি আরবের সৌদি অ্যারামকো এবং আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি থেকে। আর পরিশোধিত তেল সরবরাহ করে কুয়েত, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারতের আটটি কোম্পানি। এর মধ্যে চীনের কোম্পানি দুটি।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার যে নমুনা পাঠিয়েছিল তা ছিল পরিশোধিত তেলের নমুনা।
এ বিষয়ে ইআরএল এমপি লোকমান বলেন, ‘পরিশোধিত না, ওটা ছিল ইউরালস ক্রুড। এর এপিআই (আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট) গ্র্যাভিটি ছিল ৩০ দশমিক ৬।
তিনি বলেন, অপরিশোধিত তেলের ঘনত্বের মাত্রা বোঝানো হয় এপিআই (আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট) গ্র্যাভিটি দিয়ে। এপিআই গ্র্যাভিটি যত বেশি হবে, ওই তেল তত হালকা হবে।
আমরা আমদানি করি সৌদি আরব থেকে এএলসি (অ্যারাবিয়ান লাইট ক্রুড) ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে মারবার। এদের ক্রুডটা হালকা। রাশিয়ারটার ঘনত্ব অনেক বেশি। অ্যারাবিয়ান মারবানের এপিআই গ্র্যাভিটি ৪০ দশমিক ৪।
ইস্টার্ন রিফাইনারির বছরে ১৫ লাখ মেট্রিক টন তেল পরিশোধনের সক্ষমতা রয়েছে। এক দশক আগে নেয়া ৩০ লাখ মেট্রিক টন তেল শোধনের আরেকটি প্রকল্প এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পর ভারত ও চীনসহ বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে কম দামে তেল কিনছে। এর মধ্যে গত মে মাসে বাংলাদেশকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনার প্রস্তাব দেয় রাশিয়া।
তবে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল বাংলাদেশের রিফাইনারিতে পরিশোধন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে পরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনার প্রস্তাব দেয় রাশিয়ার বেশকিছু কোম্পানি।
এদিকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান পরিচালনার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দেয়া শুরু করে। সুইফটে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় রাশিয়ান ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করাও অন্য দেশের জন্য কঠিন হয়ে ওঠে।
অথচ, পশ্চিমা অনেক দেশ নিজেদের প্রয়োজনে রাশিয়া থেকে তেল, গ্যাস, সার এবং কৃষিপণ্যসহ তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার পথ খোলা রাখে। বাংলাদেশ রাশিয়ার তেল কিনলে মার্কিন কোন চাপ তৈরি হবে কিনা, এ নিয়েও আলোচনা ছিল।
গত ১৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়ার কাছ থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল কেনার জন্য ‘উপায় খুঁজে বের করতে’ সংশ্লিষ্টদের কাজ করার নির্দেশ দেন।
একনেকের বৈঠকে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘ভারত যদি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারব না।’
ডলারে লেনদেনের জটিলতা বিবেচনায় রাশান মুদ্রা রুবলের সঙ্গে বাংলাদেশি টাকা বিনিময় করে অথবা অন্য কোন উপায় বের করার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বীর বিক্রম রাশিয়ার তেল কেনার বিষয়ে মার্কিন নীতিনির্ধারকদের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করেন।
বাংলাদেশে ফিরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, মার্কিনীদের সঙ্গে কথা বলে তিনি যতটুকু বুঝতে পেরেছেন তা হলো, রাশিয়ার তেল কিনলে বাংলাদেশ কোন সমস্যায় পড়বে না।
আগস্টে রুশ তেলের নমুনা ঢাকায় আসে। সর্বশেষ ইস্টার্ন রিফাইনারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিশোধন করা যাবে না বলে বাংলাদেশ ওই তেলের সুবিধা নিতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৬ আশ্বিন ১৪২৯ ২৪ সফর ১৪৪৪
ফয়েজ আহমেদ তুষার
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে সংশ্লিষ্টদের নানা প্রচেষ্টার পরও রাশিয়ার জ্বালানি তেলের সুবিধা নিতে পারলো না বাংলাদেশ। দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় রিফাইনারি বলছে, রুশ তেলের ঘনত্ব তুলনামূলক বেশি হওয়ায় তা ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পরিশোধন করা সম্ভব হচ্ছে না।
গত আগস্টের শেষ দিকে রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেলের নমুনা ঢাকা এয়ারপোর্টে আসে। পরে তা ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পাঠানো হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন বাংলাদেশে পেট্রোলিয়াম করপোরেশনে (বিপিসি) জমা দেয় ইস্টার্ন রিফাইনারি।
কারিগরি টিম প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের রিফাইনারিটি ৫০ বছরের পুরানো। শুধু হালকা অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করার জন্য রিফাইনারিটিকে ডিজাইন করা হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়ার তেল অপেক্ষাকৃত ভারী হওয়ায় এই রিফাইনারিতে পরিশোধন সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইস্টার্ন রিফইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. লোকমান বুধবার রাতে সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের অনেক পুরাতন মেশিনারিজ। এই মেশিনারিজ দিয়ে এটা রিফাইন করা সম্ভব না। টেস্ট করে আমরা প্রতিবেদনটা বিপিসিতে জমা দিয়েছি। বিপিসি এটা যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয়কে জানাবে।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জারুবেঝনেফ জেএসসি তাদের বাংলাদেশি এজেন্ট ন্যাশনাল ইলেকট্রিক বিডি লিমিটেডের প্রতিনিধির মাধ্যমে তেলের নমুনা পাঠায় ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। গত ২৪ আগস্ট নমুনা ঢাকা বিমানবন্দরে আসে।
নমুনা পরীক্ষা করতে সময় বেশি লেগেছে কিনা, এমন পশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নমুনা কাস্টমের কিছুদিন আটকে ছিল। আমরা ১ সেপ্টেম্বর নমুনা বুঝে পেয়েছি।
এখানে ১৪টা আইটেম। প্রতিটা আলাদা করে টেস্ট করা হয়েছে। আমাদের ১০-১২ দিনতো টেস্ট করতেই লেগেছে। এরপর প্রতিবেদন তৈরি করতেও সময় লেগেছে।’
রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে নির্ভুল একটা প্রতিবেদন তৈরির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তেমন বেশি সময় নেয়া হয়নি।’
পুরাতন মেশিনারিজের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, এমডি লোকমান বলেন, ‘এটা এমন নয়, যে কিছু মেশিন বদল করা হলো, নতুন আনা হলো... তাহলে ওই তেল রিফাইন করা যাবে। এখানে টোটাল প্রসেস প্ল্যান্টের ডিজাইনই হচ্ছে লাইট ক্রুডের জন্য। তাই এটা করা সম্ভব হচ্ছে না।’
ইআরএল সূত্রে জানা যায়, ২০ পাতার প্রতিবেদনের শেষদিকের অংশে মতামত দিয়েছে ইআরএল’র টেকনিক্যাল কমিটি। এ কমিটির প্রধান ছিলেন ইআরএল’র মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন অ্যান্ড প্ল্যানিং) রায়হান আহমদ। সদস্য সচিব ছিলেন ব্যবস্থাপক (কোয়ালিটি কন্ট্রোল) সামিউল ইসলাম।
বাংলাদেশ মূলত অপরিশোধিত তেল কেনে সৌদি আরবের সৌদি অ্যারামকো এবং আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি থেকে। আর পরিশোধিত তেল সরবরাহ করে কুয়েত, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারতের আটটি কোম্পানি। এর মধ্যে চীনের কোম্পানি দুটি।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার যে নমুনা পাঠিয়েছিল তা ছিল পরিশোধিত তেলের নমুনা।
এ বিষয়ে ইআরএল এমপি লোকমান বলেন, ‘পরিশোধিত না, ওটা ছিল ইউরালস ক্রুড। এর এপিআই (আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট) গ্র্যাভিটি ছিল ৩০ দশমিক ৬।
তিনি বলেন, অপরিশোধিত তেলের ঘনত্বের মাত্রা বোঝানো হয় এপিআই (আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট) গ্র্যাভিটি দিয়ে। এপিআই গ্র্যাভিটি যত বেশি হবে, ওই তেল তত হালকা হবে।
আমরা আমদানি করি সৌদি আরব থেকে এএলসি (অ্যারাবিয়ান লাইট ক্রুড) ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে মারবার। এদের ক্রুডটা হালকা। রাশিয়ারটার ঘনত্ব অনেক বেশি। অ্যারাবিয়ান মারবানের এপিআই গ্র্যাভিটি ৪০ দশমিক ৪।
ইস্টার্ন রিফাইনারির বছরে ১৫ লাখ মেট্রিক টন তেল পরিশোধনের সক্ষমতা রয়েছে। এক দশক আগে নেয়া ৩০ লাখ মেট্রিক টন তেল শোধনের আরেকটি প্রকল্প এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পর ভারত ও চীনসহ বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে কম দামে তেল কিনছে। এর মধ্যে গত মে মাসে বাংলাদেশকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনার প্রস্তাব দেয় রাশিয়া।
তবে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল বাংলাদেশের রিফাইনারিতে পরিশোধন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে পরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনার প্রস্তাব দেয় রাশিয়ার বেশকিছু কোম্পানি।
এদিকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান পরিচালনার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দেয়া শুরু করে। সুইফটে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় রাশিয়ান ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করাও অন্য দেশের জন্য কঠিন হয়ে ওঠে।
অথচ, পশ্চিমা অনেক দেশ নিজেদের প্রয়োজনে রাশিয়া থেকে তেল, গ্যাস, সার এবং কৃষিপণ্যসহ তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার পথ খোলা রাখে। বাংলাদেশ রাশিয়ার তেল কিনলে মার্কিন কোন চাপ তৈরি হবে কিনা, এ নিয়েও আলোচনা ছিল।
গত ১৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়ার কাছ থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল কেনার জন্য ‘উপায় খুঁজে বের করতে’ সংশ্লিষ্টদের কাজ করার নির্দেশ দেন।
একনেকের বৈঠকে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘ভারত যদি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারব না।’
ডলারে লেনদেনের জটিলতা বিবেচনায় রাশান মুদ্রা রুবলের সঙ্গে বাংলাদেশি টাকা বিনিময় করে অথবা অন্য কোন উপায় বের করার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বীর বিক্রম রাশিয়ার তেল কেনার বিষয়ে মার্কিন নীতিনির্ধারকদের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করেন।
বাংলাদেশে ফিরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, মার্কিনীদের সঙ্গে কথা বলে তিনি যতটুকু বুঝতে পেরেছেন তা হলো, রাশিয়ার তেল কিনলে বাংলাদেশ কোন সমস্যায় পড়বে না।
আগস্টে রুশ তেলের নমুনা ঢাকায় আসে। সর্বশেষ ইস্টার্ন রিফাইনারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিশোধন করা যাবে না বলে বাংলাদেশ ওই তেলের সুবিধা নিতে পারবে না।