বছরজুড়ে মশা দমনে দেশে স্বতন্ত্র অধিদপ্তর নেই

এডিশ মশাসহ অন্য মশা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশে স্বতন্ত্র বিভাগ আছে। বিভাগের পক্ষ থেকে বছর জুড়ে মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও সেই ধরনের ব্যবস্থা নেই।

এতে এডিশ মশাসহ অন্য মশার উপদ্রব বাড়ছে। মশার কামড়ে রাজধানী থেকে গ্রামগঞ্জ পর্যন্ত মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনেকেই মারা গেছেন।

কীটতত্ত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞদের মতে, সিঙ্গাপুর ও ভারতসহ বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশে মশা দমনে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র Ÿিভাগ রয়েছে। ওই বিভাগে নিজস্ব জনবল ও ওষুধ কেনা থেকে মশা দমন সবকিছুই করছে।

তাদের যখনই দরকার তারা তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মশা দমন করেন। দরকার হলে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে ওষুধ কিনে তা মশা দমনে কাজ করেন।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমার্জেন্সি অ্যান্ড অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪৩১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৩২৪ জন ও ঢাকার বাইরে ১০৩ জন ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন আছে ১ হাজার ৫৫৭ জন।

চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে গতকাল ২১ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে শুধু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১২ হাজার ৪৩৮ জন। চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়েছে ১০ হাজার ৮৩৫ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৪৬ জন। তার মধ্যে গতকালও একজন মারা গেছে। এভাবে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা শুধু বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাসা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের হিসাব জানা গেলে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে।

হাসপাতালের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৯ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ২৫ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ১৫ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৯ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২১ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৯ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২১ জন, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ১৬ জন ভর্তি হয়েছে।

আর জেলা পর্যায়ে কক্সবাজারে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। গতকালও কক্সবাজারে নতুন করে ৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে কক্সবাজারে মোট ১ হাজার ১৮ জন ভর্তি হয়েছে। আর মারা গেছে ১৮ জন। এভাবে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাসিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য মতে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের গতকাল সকাল পর্যন্ত ৬ হাজার ২৫৭ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ২৪ জন।

কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ খলিলুর রহমান জানান, এডিশ মশা দমনে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশে আলাদা বা স্বতন্ত্র বিভাগ রয়েছে। যখনই দরকার তখনই বিভাগের পক্ষ থেকে ওষুধসহ দ্রুততম সময় সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অথচ বাংলাদেশে কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞের অভাব রয়েছে।

আরও খবর
গৃহহীনতার অভিশাপ দূর করতে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব জোরদারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশ বিশ্ব নাগরিক হিসেবে শিশুদের গড়ে তুলবে : প্রধানমন্ত্রী
রাশিয়ার ‘ভারী’ তেল দেশে পরিশোধন ‘সম্ভব নয়’
যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি আমাদের এখানে আসেনি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
জাপানি নাগরিক হত্যা : ৪ জঙ্গির মৃত্যুদ- বহাল, একজন খালাস
রংপুরে জাপার জেলা কমিটি থেকে বাদ রাঙ্গা
মায়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশ কীভাবে ‘স্ট্রং’ অবস্থান নিয়েছে, ব্যাখ্যা দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ আমাদের কাজ নয় : স্বাস্থ্য সচিব
দেশে ৫ জনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে
মুন্সীগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ : সাংবাদিক, ওসিসহ আহত দেড় শতাধিক
মুন্সীগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ : সাংবাদিক, ওসিসহ আহত দেড় শতাধিক

বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৬ আশ্বিন ১৪২৯ ২৪ সফর ১৪৪৪

বছরজুড়ে মশা দমনে দেশে স্বতন্ত্র অধিদপ্তর নেই

বাকী বিল্লাহ

এডিশ মশাসহ অন্য মশা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশে স্বতন্ত্র বিভাগ আছে। বিভাগের পক্ষ থেকে বছর জুড়ে মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও সেই ধরনের ব্যবস্থা নেই।

এতে এডিশ মশাসহ অন্য মশার উপদ্রব বাড়ছে। মশার কামড়ে রাজধানী থেকে গ্রামগঞ্জ পর্যন্ত মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনেকেই মারা গেছেন।

কীটতত্ত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞদের মতে, সিঙ্গাপুর ও ভারতসহ বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশে মশা দমনে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র Ÿিভাগ রয়েছে। ওই বিভাগে নিজস্ব জনবল ও ওষুধ কেনা থেকে মশা দমন সবকিছুই করছে।

তাদের যখনই দরকার তারা তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মশা দমন করেন। দরকার হলে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে ওষুধ কিনে তা মশা দমনে কাজ করেন।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমার্জেন্সি অ্যান্ড অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪৩১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৩২৪ জন ও ঢাকার বাইরে ১০৩ জন ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন আছে ১ হাজার ৫৫৭ জন।

চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে গতকাল ২১ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে শুধু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১২ হাজার ৪৩৮ জন। চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়েছে ১০ হাজার ৮৩৫ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৪৬ জন। তার মধ্যে গতকালও একজন মারা গেছে। এভাবে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা শুধু বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাসা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের হিসাব জানা গেলে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে।

হাসপাতালের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৯ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ২৫ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ১৫ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৯ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২১ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৯ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২১ জন, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ১৬ জন ভর্তি হয়েছে।

আর জেলা পর্যায়ে কক্সবাজারে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। গতকালও কক্সবাজারে নতুন করে ৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে কক্সবাজারে মোট ১ হাজার ১৮ জন ভর্তি হয়েছে। আর মারা গেছে ১৮ জন। এভাবে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাসিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য মতে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের গতকাল সকাল পর্যন্ত ৬ হাজার ২৫৭ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ২৪ জন।

কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ খলিলুর রহমান জানান, এডিশ মশা দমনে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশে আলাদা বা স্বতন্ত্র বিভাগ রয়েছে। যখনই দরকার তখনই বিভাগের পক্ষ থেকে ওষুধসহ দ্রুততম সময় সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অথচ বাংলাদেশে কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞের অভাব রয়েছে।