শারদোৎসব ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

রাচুয়াডাঙ্গা

প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা

সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। ধর্মীয় এ উৎসবকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রতিটি পূজাম-পে প্রতীয়মান রঙ তুলির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা।

আগামী ১ অক্টোবর ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। ৫ অক্টোবর দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ বছরের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। এ বছর দেবী দুর্গা গজে আগমন করে নৌকায় স্বামীগৃহে গমন করবেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১২৩টি ম-পে দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৩টি, আলমডাঙ্গায় ৪২টি, দামুড়হুদায় ১৪টি, দর্শনায় ১৮টি ও জীবননগরে ২৬টি।

চুয়াডাঙ্গার বড় বাজার সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, দৌলৎদিয়াড় বারোয়ারী দুর্গা মন্দির, দাস পাড়া দুর্গা মন্দির, মালো পাড়া দুর্গা মন্দির, বেলগাছী দুর্গা মন্দির, আলুকদিয়া দুর্গা মন্দিরসহ বিভিন্ন এলাকার মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, ছোট বড় সব মন্দিরেই এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। রঙ তুলির ছোঁয়ায় প্রতিমার আকর্ষণ বাড়ানোর পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন ম-প তৈরিতে চলছে প্রতিযোগিতা। এছাড়াও প্রতিবারের মতো এ বছর বিশেষ আর্কষণ চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার দাস পাড়া মহিলা সংঘের দুর্গোৎসব।

প্রতিমা শিল্পী রতন কুমার জানান, প্রতিমা তৈরি করা অনেক কষ্টের। আগের মতো লাভ হয় না। তারপরও করতে হয়। দুই একদিনের মধ্যেই দুর্গা প্রতিমাগুলোর রং ও সাজ-সজ্জার কাজ শেষ হবে। প্রতিমা তৈরির মজুরি সাইজ ও ধরণ অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়।

চুয়াডাঙ্গার বড় বাজার সার্বজনীন দুর্গা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিংকর কুমার দে জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসবকে শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে প্রশাসনের পাশাপাশি ম-পের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে দায়িত্ব পালন করা হবে।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন জানান, ইতোমধ্যেই পূজা উদযাপন কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভা হয়েছে। প্রতিটি পূজা ম-পে নিজস্ব সেচ্ছাসেবক ছাড়াও পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। তাছাড়াও সাদা পোশাকে ডিবি, ডিএসবি মাঠে কাজ করবে। প্রতিটি পূজা ম-প নিজস্ব সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট পূজা উদযাপন কমিটিকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

দুর্গাপুর

প্রতিনিধি, দুর্গাপুর (নেত্রকোনা)

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে আগামী ১লা অক্টোবর ৬১টি মন্ডপে পূজা উদযাপন করা হবে। শিশির ভেজা দুর্বা ঘাসের ওপর ঝরে পড়া বকুল ফুল কুড়ানোর সময়টাতে মাতৃবন্দনায় মিলিত হবেন মাতৃভক্তবৃন্দ সকলেই। ইতোমধ্যে শিল্পীদের দক্ষ হাতের ছোঁয়ায় পূর্ণরূপে ফুটে ওঠছে দৃষ্টি নন্দন অধিকাংশ প্রতিমা। সারাদেশের ন্যায় নেত্রকোনার দুর্গাপুরেও চলছে প্রতিমা গড়ার কাজ। এ কাজে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় মৃৎশিল্পীরা। বিভিন্ন মৃৎশিল্পিরা জানান, দেবি দুর্গা আসছেন অন্ধকার আচ্ছন্ন পৃথিবীকে আলোকিত করতে। ঢাক, ঢোল, শংখ ধ্বনী আর উলুধ্বনী দিয়ে দেবী দুর্গাকে বরন করে নেয়ার অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ভক্তরা। নিজেদের মনের মতো করে প্রতিমার নকশায় নিজেকে সেরা শিল্পী হিসেবে তুলে ধরতে দিন রাত পরিশ্রম করে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা। প্রতি বছর মহাআনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকলেও কোভিড-১৯ এর কারনে গত দু’বছর বাংলাদেশে ভালোভাবে এ পূজা উপভোগ করা যায়নি।

এবার পুর্বথেকেই আয়োজন শুরু হওয়ায় ভক্তদের মধ্যে বেশ আনন্দ বিরাজ করছে। স্থানীয় দশভুজা বাড়িতে কর্মরত মৃৎশিল্পী নিরঞ্জন চন্দ্র পাল জানান, আমি দীর্ঘ ২৪ বছর যাবত প্রতিমা তৈরির কাজ করে আসছি, আমার বাপ-দাদারাও এ কাজে নিয়োজিত ছিলেন, তাদের উত্তরসুরী হিসেবে আমিও এই কাজ করছি। প্রতি ম-পের প্রতিমা তৈরি বাবদ ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা মূল্য গ্রহণ করেন তিনি। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মানেশ চন্দ্র সাহা বলেন, সরকারী নির্দেশনা মেনে দুর্গাপুর উপজেলায় এবার প্রায় ৬১টি মন্ডপে পূজা উৎযাপন করা হবে। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে এ উৎসব সম্পন্ন করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব-উল-আহসান বলেন, শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে দুর্গাপুরের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো।

প্রত্যেকটা পূঁজা ম-পে সরকারি বিধি মোতাবেক পুজা সম্পন্ন্যের জন্য নেতৃবৃন্দকে নিয়ে প্রশাসনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলার যেন কোন অবনতি না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে পুলিশ ও আনসার বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সকলের সহযোগিতা পেলে আশা করছি শারদীয় পূজা ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারব।

শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৭ আশ্বিন ১৪২৯ ২৫ সফর ১৪৪৪

শারদোৎসব ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

image

সামনে সারদোৎসব। নিপুণ হাতে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন কারিগর -সংবাদ

রাচুয়াডাঙ্গা

প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা

সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। ধর্মীয় এ উৎসবকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রতিটি পূজাম-পে প্রতীয়মান রঙ তুলির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা।

আগামী ১ অক্টোবর ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। ৫ অক্টোবর দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ বছরের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। এ বছর দেবী দুর্গা গজে আগমন করে নৌকায় স্বামীগৃহে গমন করবেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১২৩টি ম-পে দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৩টি, আলমডাঙ্গায় ৪২টি, দামুড়হুদায় ১৪টি, দর্শনায় ১৮টি ও জীবননগরে ২৬টি।

চুয়াডাঙ্গার বড় বাজার সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, দৌলৎদিয়াড় বারোয়ারী দুর্গা মন্দির, দাস পাড়া দুর্গা মন্দির, মালো পাড়া দুর্গা মন্দির, বেলগাছী দুর্গা মন্দির, আলুকদিয়া দুর্গা মন্দিরসহ বিভিন্ন এলাকার মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, ছোট বড় সব মন্দিরেই এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। রঙ তুলির ছোঁয়ায় প্রতিমার আকর্ষণ বাড়ানোর পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন ম-প তৈরিতে চলছে প্রতিযোগিতা। এছাড়াও প্রতিবারের মতো এ বছর বিশেষ আর্কষণ চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার দাস পাড়া মহিলা সংঘের দুর্গোৎসব।

প্রতিমা শিল্পী রতন কুমার জানান, প্রতিমা তৈরি করা অনেক কষ্টের। আগের মতো লাভ হয় না। তারপরও করতে হয়। দুই একদিনের মধ্যেই দুর্গা প্রতিমাগুলোর রং ও সাজ-সজ্জার কাজ শেষ হবে। প্রতিমা তৈরির মজুরি সাইজ ও ধরণ অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়।

চুয়াডাঙ্গার বড় বাজার সার্বজনীন দুর্গা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিংকর কুমার দে জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসবকে শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে প্রশাসনের পাশাপাশি ম-পের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে দায়িত্ব পালন করা হবে।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন জানান, ইতোমধ্যেই পূজা উদযাপন কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভা হয়েছে। প্রতিটি পূজা ম-পে নিজস্ব সেচ্ছাসেবক ছাড়াও পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। তাছাড়াও সাদা পোশাকে ডিবি, ডিএসবি মাঠে কাজ করবে। প্রতিটি পূজা ম-প নিজস্ব সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট পূজা উদযাপন কমিটিকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

দুর্গাপুর

প্রতিনিধি, দুর্গাপুর (নেত্রকোনা)

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে আগামী ১লা অক্টোবর ৬১টি মন্ডপে পূজা উদযাপন করা হবে। শিশির ভেজা দুর্বা ঘাসের ওপর ঝরে পড়া বকুল ফুল কুড়ানোর সময়টাতে মাতৃবন্দনায় মিলিত হবেন মাতৃভক্তবৃন্দ সকলেই। ইতোমধ্যে শিল্পীদের দক্ষ হাতের ছোঁয়ায় পূর্ণরূপে ফুটে ওঠছে দৃষ্টি নন্দন অধিকাংশ প্রতিমা। সারাদেশের ন্যায় নেত্রকোনার দুর্গাপুরেও চলছে প্রতিমা গড়ার কাজ। এ কাজে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় মৃৎশিল্পীরা। বিভিন্ন মৃৎশিল্পিরা জানান, দেবি দুর্গা আসছেন অন্ধকার আচ্ছন্ন পৃথিবীকে আলোকিত করতে। ঢাক, ঢোল, শংখ ধ্বনী আর উলুধ্বনী দিয়ে দেবী দুর্গাকে বরন করে নেয়ার অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ভক্তরা। নিজেদের মনের মতো করে প্রতিমার নকশায় নিজেকে সেরা শিল্পী হিসেবে তুলে ধরতে দিন রাত পরিশ্রম করে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা। প্রতি বছর মহাআনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকলেও কোভিড-১৯ এর কারনে গত দু’বছর বাংলাদেশে ভালোভাবে এ পূজা উপভোগ করা যায়নি।

এবার পুর্বথেকেই আয়োজন শুরু হওয়ায় ভক্তদের মধ্যে বেশ আনন্দ বিরাজ করছে। স্থানীয় দশভুজা বাড়িতে কর্মরত মৃৎশিল্পী নিরঞ্জন চন্দ্র পাল জানান, আমি দীর্ঘ ২৪ বছর যাবত প্রতিমা তৈরির কাজ করে আসছি, আমার বাপ-দাদারাও এ কাজে নিয়োজিত ছিলেন, তাদের উত্তরসুরী হিসেবে আমিও এই কাজ করছি। প্রতি ম-পের প্রতিমা তৈরি বাবদ ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা মূল্য গ্রহণ করেন তিনি। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মানেশ চন্দ্র সাহা বলেন, সরকারী নির্দেশনা মেনে দুর্গাপুর উপজেলায় এবার প্রায় ৬১টি মন্ডপে পূজা উৎযাপন করা হবে। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে এ উৎসব সম্পন্ন করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব-উল-আহসান বলেন, শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে দুর্গাপুরের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো।

প্রত্যেকটা পূঁজা ম-পে সরকারি বিধি মোতাবেক পুজা সম্পন্ন্যের জন্য নেতৃবৃন্দকে নিয়ে প্রশাসনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলার যেন কোন অবনতি না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে পুলিশ ও আনসার বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সকলের সহযোগিতা পেলে আশা করছি শারদীয় পূজা ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারব।