কৃষককে কেন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে

ফসল উৎপাদনের বিভিন্ন স্তরে পানির প্রয়োজন অনস্বীকার্য। পানি ছাড়া কৃষকের পক্ষে চাষ করা অসম্ভব। দেশের কৃষককে প্রায়ই চাষাবাদের পানির জন্য হাপিত্যেশ করতে হয়। এ বছরও পানির জন্য তাদের হাহাকার করতে দেখা গেছে।

এ বছর বর্ষা মৌসুমে তুলনামূলকভাবে অনেক কম বৃষ্টি হয়েছে। কাক্সিক্ষত বৃষ্টি না হওয়ায় দেশের প্রায় সব অঞ্চলের কৃষকই কমবেশি বিপাকে পড়েছে। পানির চাহিদা পূরণে তাদের সামনে বিকল্প হচ্ছে সেচ; কিন্তু সেখানেও দেখা দিয়েছে সংকট। জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। সেচের জন্য কৃষকরা যে বিদ্যুতের ওপর ভরসা করবে তাতেও রয়েছে সমস্যা। লোডশেডিংয়ের কারণে অনেক স্থানেই সেচকাজ ব্যাহত হচ্ছে।

নানান সমস্যায় কৃষকরা এমনিতেই জর্জরিত। তার ওপর তাদের চাষাবাদের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায়ই ভোগান্তি পোহাতে হয়। কিনতে গিয়ে তারা সার পান না। পেলেও দাম বেশি রাখা হয়। এ ধরনের অভিযোগ গণমাধ্যমে নিয়মিতই প্রকাশিত হয়।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সেচ বোরিং লাইসেন্স করতে গিয়ে কৃষকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ নিয়ে গত বুধবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে, লাইসেন্স দেওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নানানভাবে হয়রানি করেন। কখনো কখনো তাদের বিরুদ্ধে উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগও পাওয়া যায়। টাকা দিতে না পারলে লাইসেন্স দেয়ার সময় নানান নিয়ম-কানুন দেখানো হয়। আর টাকা দিতে পারলে তখন নিয়ম-কানুনের বালাই থাকে না।

বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের অর্থনীতিতে যে চাপ তৈরি হয় সেটা মোকাবিলায় কৃষকদের ভূমিকা যে অনেক বড় সেটা সরকারও স্বীকার করে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে দেশের অর্থনীতি আবারও চাপে পড়েছে। এবারও বিপদ মোকাবিলায় নীতি-নির্ধারকরা কৃষকদের দিকে চেয়ে আছেন। তারা বারবার বলছেন যে, দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে।

অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও কৃষক তার সাধ্যমতো ফসল ফলানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রশ্ন হচ্ছেÑ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা এ সময় কৃষকদের কতটুকু সহায়তা করছে। এ সময় তো তাদের উৎসাহী হয়ে কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী সেচ বোরিং লাইসেন্স দেওয়া উচিত; কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতা করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

আমরা বলতে চাই, গাইবান্ধায় সেচ বোরিং লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে কৃষকদের হয়রানির অবসান ঘটাতে হবে। লাইসেন্স দেওয়ার কাজে কোথাও কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি হলে তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। কৃষকের চাষাবাদের কাজে সব ধরনের বাধা দূর করা অত্যন্ত জরুরি।

শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ০৭ আশ্বিন ১৪২৯ ২৫ সফর ১৪৪৪

কৃষককে কেন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে

ফসল উৎপাদনের বিভিন্ন স্তরে পানির প্রয়োজন অনস্বীকার্য। পানি ছাড়া কৃষকের পক্ষে চাষ করা অসম্ভব। দেশের কৃষককে প্রায়ই চাষাবাদের পানির জন্য হাপিত্যেশ করতে হয়। এ বছরও পানির জন্য তাদের হাহাকার করতে দেখা গেছে।

এ বছর বর্ষা মৌসুমে তুলনামূলকভাবে অনেক কম বৃষ্টি হয়েছে। কাক্সিক্ষত বৃষ্টি না হওয়ায় দেশের প্রায় সব অঞ্চলের কৃষকই কমবেশি বিপাকে পড়েছে। পানির চাহিদা পূরণে তাদের সামনে বিকল্প হচ্ছে সেচ; কিন্তু সেখানেও দেখা দিয়েছে সংকট। জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। সেচের জন্য কৃষকরা যে বিদ্যুতের ওপর ভরসা করবে তাতেও রয়েছে সমস্যা। লোডশেডিংয়ের কারণে অনেক স্থানেই সেচকাজ ব্যাহত হচ্ছে।

নানান সমস্যায় কৃষকরা এমনিতেই জর্জরিত। তার ওপর তাদের চাষাবাদের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায়ই ভোগান্তি পোহাতে হয়। কিনতে গিয়ে তারা সার পান না। পেলেও দাম বেশি রাখা হয়। এ ধরনের অভিযোগ গণমাধ্যমে নিয়মিতই প্রকাশিত হয়।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সেচ বোরিং লাইসেন্স করতে গিয়ে কৃষকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ নিয়ে গত বুধবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে, লাইসেন্স দেওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নানানভাবে হয়রানি করেন। কখনো কখনো তাদের বিরুদ্ধে উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগও পাওয়া যায়। টাকা দিতে না পারলে লাইসেন্স দেয়ার সময় নানান নিয়ম-কানুন দেখানো হয়। আর টাকা দিতে পারলে তখন নিয়ম-কানুনের বালাই থাকে না।

বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের অর্থনীতিতে যে চাপ তৈরি হয় সেটা মোকাবিলায় কৃষকদের ভূমিকা যে অনেক বড় সেটা সরকারও স্বীকার করে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে দেশের অর্থনীতি আবারও চাপে পড়েছে। এবারও বিপদ মোকাবিলায় নীতি-নির্ধারকরা কৃষকদের দিকে চেয়ে আছেন। তারা বারবার বলছেন যে, দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে।

অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও কৃষক তার সাধ্যমতো ফসল ফলানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রশ্ন হচ্ছেÑ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা এ সময় কৃষকদের কতটুকু সহায়তা করছে। এ সময় তো তাদের উৎসাহী হয়ে কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী সেচ বোরিং লাইসেন্স দেওয়া উচিত; কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতা করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

আমরা বলতে চাই, গাইবান্ধায় সেচ বোরিং লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে কৃষকদের হয়রানির অবসান ঘটাতে হবে। লাইসেন্স দেওয়ার কাজে কোথাও কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি হলে তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। কৃষকের চাষাবাদের কাজে সব ধরনের বাধা দূর করা অত্যন্ত জরুরি।