২ জেলায় ২৫৬ মন্ডপে শারোদোৎসব

টাঙ্গাইল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা। আর এই উৎসবকে ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে শেষ মুর্হুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের শিল্পীরা। আগামী ১ অক্টোবর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এ বছর টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় এক হাজার ২৮৪টি পূজামন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। জেলার সদর উপজেলার পূজামন্ডপে ২০৭টি, বাসাইলে ৬৫টি, সখিপুরে ৫৩টি, মির্জাপুরে ২৫৬টি, নাগরপুরে ১৩২টি, দেলদুয়ারে ১২৭টি, গোপালপুরে ৫০টি, ভূঞাপুরে ৪০টি, কালিহাতীতে ১৯০টি, ঘাটাইলে ৮১টি, মধুপুরে ৫০টি ও ধনবাড়ীতে ৩৩টি পূজামন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর পূজা মন্ডপের সংখ্যা ছিল ১২৪৩টি ও চলতি বছর ১২৮৪টি। গত বছরের তুলায় ৪১টি পূজামন্ডপের সখ্যা বেড়েছে।

জেলার তারটিয়া প্রতিমা তৈরির কারখানাসহ বিভিন্ন মন্ডপে ঘুরে দেখা গেছে, তারটিয়া কারখানায় শিল্পীরা প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। কেউ দেবীর গায়ে দিচ্ছেন তুলির আঁচড় আবার কেউ ব্যস্ত প্রতিমার গায়ে কাঁদা মাটির প্রলেপ লাগাতে। তারটিয়া এলাকার প্রতিমা তৈরির কারিগর সন্তোষ পাল বলেন, আমি প্রায় ২০ বছর ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করছি। এবার আমি ১০টি প্রতিমা তৈরি করেছি। আমার কারখানায় দুই-তিনজন কর্মচারীসহ পরিবারের লোকজন নিয়ে প্রতিমা বানাচ্ছি। বর্তমানে খড়, বাঁশ, মাটি, লোহাসহ সব কিছুর দাম আগের তুলানায় অনেক বেশি। সব কিছুর দাম বাড়ার কারণে আমাদের এখন পোষে না। জাতিগত কাজ এজন্য করতে হয়।

তারটিয়া এলাকার সন্ধ্যা পাল বলেন, আমি পরিবারের কাজ কর্ম করে যে সময় টুকু থাকে আমার স্বামীর সাথে প্রতিমা তৈরি কাজে সাহায্য করি। সামনে ৩০ সেপ্টেম্বর পঞ্চমী। পঞ্চমীর রাতের আগেই আমাদের প্রতিমার সব কাজ শেষ করতে হবে। এজন্য আমরা এখন খুব ব্যস্ত সময় পার করছি। নিখিল পাল বলেন, এ বছর ১০টি প্রতিমা তৈরি করেছি। এখন রঙ তুলির কাজ চলছে। মাটির কাজ সব শেষ করছি। এ পর্যন্ত চারটি রঙ করছি। ছয়টি প্রতিমা বাকি আছে রঙ করার জন্য। আমরা রাত দিন জেগে কাজ করছি। কাজ করতে গিয়ে আমাদের অন্য কোনো দিকে নজর দেওয়ার সুযোগ নেই। খাওয়া দাওয়ারও কোনো ঠিক নাই।

প্রতিমা শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি প্রতিমা তৈরি করতে শিল্পীদের সর্বনিন্ম ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। সর্বোচ্চ তিন-চার লাখ টাকা খরচ হচ্ছে এ বছর। প্রতিমা তৈরির জন্য তাদের ৩ থেকে ৪ ভ্যান মাটি লাগে।

খড়ের আউর লাগে ৫ থেকে ৬ পৌন। এছাড়াও কাঠ, বাঁশ, দড়ি, পেরেক, সুতা ও ধানের গুড়াসহ বিভিন্ন জিনিসের প্রয়োজন হয়।

পাঁচবিবি

প্রতিনিধি, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট)

পাঁচবিবি উপজেলায় এবার ৭২টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দূর্গাপূজা। মন্ডপের পাশাপাশি শারদীয় দূর্গোৎসবের এই প্রস্তুতি চলছে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ঘরে ঘরে। আগামী ১ অক্টোবর শারদীয় দূর্গোৎসবের অনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

এই পূজা ঘিরে মন্দিরে মন্দিরে চলছে প্রতিমা তৈরির ধুম। তাই দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে পূজার প্রস্তুতি। তৈরি হচ্ছে গেট। চলছে মন্ডপ আর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের কাজ। পূজার আমেজ বেড়েছে কেনাকাটায়। শহরের বিভিন্ন দোকানে ভিড় বাড়ছে। করোনাভাইরাসের প্রভাব কমে যাওয়ায় উৎসাহ বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদ্যাপনের আহবান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

রনজিত, জীবনসহ একাধীক প্রতিমা তৈরির মৃৎশিল্পী জানান, পূজা উদ্যাপন কমিটির লোকজনের চাহিদা অনুযায়ী এবার প্রতিমার আকার ও ডিজাইন ভিন্নতা এসেছে। প্রতিমা তৈরি করা অনেক কষ্টের। একাজে আগের মতো আর লাভ হয়না। তারপরও করতে হয়। দুই এক দিনের মধ্যে তৈরি করা প্রতিমার আকার অনুযায়ী রং ও সাজ সজ্জার কাজ শেষ হবে। আর প্রতিমা তৈরির মজুরি প্রতিমার আকার অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়। প্রতিমার আকার ও শৈল্পিক গঠন অনুযায়ী শিল্পীরা ১৫ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন।

সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ১০ আশ্বিন ১৪২৯ ২৮ সফর ১৪৪৪

২ জেলায় ২৫৬ মন্ডপে শারোদোৎসব

image

শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততায় প্রতিমা শিল্পীরা -সংবাদ

টাঙ্গাইল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা। আর এই উৎসবকে ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে শেষ মুর্হুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের শিল্পীরা। আগামী ১ অক্টোবর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এ বছর টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় এক হাজার ২৮৪টি পূজামন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। জেলার সদর উপজেলার পূজামন্ডপে ২০৭টি, বাসাইলে ৬৫টি, সখিপুরে ৫৩টি, মির্জাপুরে ২৫৬টি, নাগরপুরে ১৩২টি, দেলদুয়ারে ১২৭টি, গোপালপুরে ৫০টি, ভূঞাপুরে ৪০টি, কালিহাতীতে ১৯০টি, ঘাটাইলে ৮১টি, মধুপুরে ৫০টি ও ধনবাড়ীতে ৩৩টি পূজামন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর পূজা মন্ডপের সংখ্যা ছিল ১২৪৩টি ও চলতি বছর ১২৮৪টি। গত বছরের তুলায় ৪১টি পূজামন্ডপের সখ্যা বেড়েছে।

জেলার তারটিয়া প্রতিমা তৈরির কারখানাসহ বিভিন্ন মন্ডপে ঘুরে দেখা গেছে, তারটিয়া কারখানায় শিল্পীরা প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। কেউ দেবীর গায়ে দিচ্ছেন তুলির আঁচড় আবার কেউ ব্যস্ত প্রতিমার গায়ে কাঁদা মাটির প্রলেপ লাগাতে। তারটিয়া এলাকার প্রতিমা তৈরির কারিগর সন্তোষ পাল বলেন, আমি প্রায় ২০ বছর ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করছি। এবার আমি ১০টি প্রতিমা তৈরি করেছি। আমার কারখানায় দুই-তিনজন কর্মচারীসহ পরিবারের লোকজন নিয়ে প্রতিমা বানাচ্ছি। বর্তমানে খড়, বাঁশ, মাটি, লোহাসহ সব কিছুর দাম আগের তুলানায় অনেক বেশি। সব কিছুর দাম বাড়ার কারণে আমাদের এখন পোষে না। জাতিগত কাজ এজন্য করতে হয়।

তারটিয়া এলাকার সন্ধ্যা পাল বলেন, আমি পরিবারের কাজ কর্ম করে যে সময় টুকু থাকে আমার স্বামীর সাথে প্রতিমা তৈরি কাজে সাহায্য করি। সামনে ৩০ সেপ্টেম্বর পঞ্চমী। পঞ্চমীর রাতের আগেই আমাদের প্রতিমার সব কাজ শেষ করতে হবে। এজন্য আমরা এখন খুব ব্যস্ত সময় পার করছি। নিখিল পাল বলেন, এ বছর ১০টি প্রতিমা তৈরি করেছি। এখন রঙ তুলির কাজ চলছে। মাটির কাজ সব শেষ করছি। এ পর্যন্ত চারটি রঙ করছি। ছয়টি প্রতিমা বাকি আছে রঙ করার জন্য। আমরা রাত দিন জেগে কাজ করছি। কাজ করতে গিয়ে আমাদের অন্য কোনো দিকে নজর দেওয়ার সুযোগ নেই। খাওয়া দাওয়ারও কোনো ঠিক নাই।

প্রতিমা শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি প্রতিমা তৈরি করতে শিল্পীদের সর্বনিন্ম ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। সর্বোচ্চ তিন-চার লাখ টাকা খরচ হচ্ছে এ বছর। প্রতিমা তৈরির জন্য তাদের ৩ থেকে ৪ ভ্যান মাটি লাগে।

খড়ের আউর লাগে ৫ থেকে ৬ পৌন। এছাড়াও কাঠ, বাঁশ, দড়ি, পেরেক, সুতা ও ধানের গুড়াসহ বিভিন্ন জিনিসের প্রয়োজন হয়।

পাঁচবিবি

প্রতিনিধি, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট)

পাঁচবিবি উপজেলায় এবার ৭২টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দূর্গাপূজা। মন্ডপের পাশাপাশি শারদীয় দূর্গোৎসবের এই প্রস্তুতি চলছে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ঘরে ঘরে। আগামী ১ অক্টোবর শারদীয় দূর্গোৎসবের অনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

এই পূজা ঘিরে মন্দিরে মন্দিরে চলছে প্রতিমা তৈরির ধুম। তাই দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে পূজার প্রস্তুতি। তৈরি হচ্ছে গেট। চলছে মন্ডপ আর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের কাজ। পূজার আমেজ বেড়েছে কেনাকাটায়। শহরের বিভিন্ন দোকানে ভিড় বাড়ছে। করোনাভাইরাসের প্রভাব কমে যাওয়ায় উৎসাহ বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদ্যাপনের আহবান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

রনজিত, জীবনসহ একাধীক প্রতিমা তৈরির মৃৎশিল্পী জানান, পূজা উদ্যাপন কমিটির লোকজনের চাহিদা অনুযায়ী এবার প্রতিমার আকার ও ডিজাইন ভিন্নতা এসেছে। প্রতিমা তৈরি করা অনেক কষ্টের। একাজে আগের মতো আর লাভ হয়না। তারপরও করতে হয়। দুই এক দিনের মধ্যে তৈরি করা প্রতিমার আকার অনুযায়ী রং ও সাজ সজ্জার কাজ শেষ হবে। আর প্রতিমা তৈরির মজুরি প্রতিমার আকার অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়। প্রতিমার আকার ও শৈল্পিক গঠন অনুযায়ী শিল্পীরা ১৫ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন।