ইডেন কলেজ : প্রতিবাদকারীরা পেলেন শাস্তি, অভিযুক্তদের বিষয়ে নীরব ছাত্রলীগের হাইকমান্ড

গত তিনদিন ধরে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ, পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন, হাতাহাতি-সংঘর্ষ তিনদিন ধরে এসব চিত্রে ঘুরপাক খাচ্ছে ইডেন কলেজ ক্যাম্পাস।

সর্বশেষ গত রোববার রাতে ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করে ১৬ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। যদিও এ সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে বহিষ্কৃতরা। তারা বলছেন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নিজেদের আক্রোশ থেকে তাদের বহিষ্কার করেছেন। তবে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের দাবি যথাযথ কারণেই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

রোববার রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ১৬ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপরই বহিষ্কৃতরা প্রশ্ন তোলেন, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে কীভাবে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়?

এ বিষয়ে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুস্মিতা বাড়ৈই বলেন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এ কাজ করেছেন। যেহেতু আমরা মিডিয়ার সামনে তাদের নাম বার বার বলেছি।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, আগের ঘটনা এবং গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারা তদন্ত কমিটি মানতে চায় না। তাই, আমরা নিজেরা ভিডিও ফুটেজ দেখে যাদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি তাদের আপাতত বহিষ্কার করা হয়েছে। চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য, সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতনসহ নানান অভিযোগে অভিযুক্ত রিভা-রাজিয়ার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হলো না জানতে চাইলে লেখক বলেন, ‘তারা সংবাদ মাধ্যমে যে ধরনের অভিযোগ করেছে, তার একটি প্রমাণও দেখাতে পারেনি।’

এদিকে গতকাল বেলা ১১টার দিকে ইডেন কলেজ গেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ১৬ নেতাকর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কারের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান বহিষ্কৃত নেত্রীরা। তা না হলে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করার হুমকি দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কৃত নেত্রী সুস্মিতা বাড়ৈই বলেন, তদন্ত ছাড়া এ বহিষ্কারাদেশ দেয়া হয়েছে। এ ভিত্তিহীন বহিষ্কারাদেশ যদি প্রত্যাহার এবং এর সুষ্ঠু বিচার না করা হয় তাহলে আমরা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করব।

যদিও দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে ফিরে এসে আমরণ অনশনের ঘোষণা প্রত্যাহার করে নেন তারা। দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে নিজেদের অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমান্ডকে জানানোর জন্য কার্যালয়ে যান বহিষ্কৃত ১০-১২ জন নেতাকর্মী।

বহিষ্কৃত সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা আমাদের অভিযোগগুলো বড় ভাইদের জানাতে এসেছিলাম। জানিয়ে এখন চলে যাচ্ছি। সমস্যা সমাধানে তারা দায়িত্ব নিয়েছেন। আমরা কোন অনশনে নেই। আমাদের কোন কর্মসূচি নেই।’ তবে ভেতরে কার সঙ্গে তারা আলোচনা করেছেন, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।

ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের ঘটনার বিষয়ে জানতে চেয়ে ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যকে একাধিকবার মুঠোফোনে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

ছাত্রলীগ ইডেন কলেজের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করেছে : ছাত্রদল

ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের মারামারি, শিক্ষার্থী নির্যাতনসহ বিভিন্ন কর্মকা-ে কলেজের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুণœ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ অভিযোগে ছাত্রলীগকে ‘না’ বলার আহ্বান জানিয়েছে শাখা ছাত্রদল। রোববার রাতে কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রেহানা আক্তার শিরিন ও সদস্য-সচিব সানজিদা ইয়াসমিন তুলি স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে শাখা ছাত্রদল বলেছে, ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখীর গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে অকপটে যে তথ্য উত্থাপন করেছেন, এতে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে সাধারণ ছাত্রীরা নিরাপদ নয়।

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ছাত্রলীগের নেত্রীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজেদেরকে কলেজ প্রশাসনের চাইতেও বেশি প্রভাবশালী মনে করেন। আমরা তাদের এহেন কর্মকা-ের প্রতিবাদ জানাই। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি করে যে বাজে পরিস্থিতি তৈরি করেছে এতে ইডেন মহিলা কলেজের মতো স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে। তাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকে তাদের এই অবৈধ ও বেহায়াপনার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

ইডেনের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীদের আইনের আওতায় আনার দাবি

ইডেন কলেজে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।

সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের নেত্রীদের হাতে ছাত্রীদের যৌন হেনস্তা, হুমকি, সিট বাণিজ্য ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এ সমাবেশ করে সংগঠনটি।

সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতি আখতার হোসেন বলেন, সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদেরকে জিম্মি করে তাদেরকে দাসে পরিণত করেছে। ইডেন কলেজের বর্তমান এই পরিস্থিতির জন্য ছাত্রলীগ দায়ী। সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোর করে হেনস্তা ও যৌন নির্যাতন করছে ছাত্রলীগের নেত্রীরা। এই ভয়ানক সত্যটা তাদের নিজেদের মধ্য থেকেই গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। তাদের চাঁদাবাজি থেকে রেহাই পায়নি সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। টাকার বিনিময়ে তাদেরকে সিট দেয়া হয়। শুধুমাত্র কমিটি স্থগিত করে এই দায়মুক্তির চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে ইডেন কলেজ নিয়ে যে নোংরা প্রোপাগা-া ছড়ানো হচ্ছে, এই প্রোপাগা-ায় ইডেন কলেজের কোন নিরীহ শিক্ষার্থীর চুল পরিমাণ দায় নেই। দায় যাদের তারা ছাত্রলীগ। আমরা বলতে চাই ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ যারা জড়িত এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যাদের মদদে এসব অপকর্ম হয় তাদের অতিসত্ত্বর আইনের আওতায় আনতে হবে।

মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ১১ আশ্বিন ১৪২৯ ২৯ সফর ১৪৪৪

ইডেন কলেজ : প্রতিবাদকারীরা পেলেন শাস্তি, অভিযুক্তদের বিষয়ে নীরব ছাত্রলীগের হাইকমান্ড

খালেদ মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

image

ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আতঙ্কিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা, অনেকেই গতকাল হল ছেড়ে যায় -সংবাদ

গত তিনদিন ধরে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ, পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন, হাতাহাতি-সংঘর্ষ তিনদিন ধরে এসব চিত্রে ঘুরপাক খাচ্ছে ইডেন কলেজ ক্যাম্পাস।

সর্বশেষ গত রোববার রাতে ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করে ১৬ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। যদিও এ সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে বহিষ্কৃতরা। তারা বলছেন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নিজেদের আক্রোশ থেকে তাদের বহিষ্কার করেছেন। তবে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের দাবি যথাযথ কারণেই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

রোববার রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ১৬ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপরই বহিষ্কৃতরা প্রশ্ন তোলেন, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে কীভাবে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়?

এ বিষয়ে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুস্মিতা বাড়ৈই বলেন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এ কাজ করেছেন। যেহেতু আমরা মিডিয়ার সামনে তাদের নাম বার বার বলেছি।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, আগের ঘটনা এবং গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারা তদন্ত কমিটি মানতে চায় না। তাই, আমরা নিজেরা ভিডিও ফুটেজ দেখে যাদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি তাদের আপাতত বহিষ্কার করা হয়েছে। চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য, সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতনসহ নানান অভিযোগে অভিযুক্ত রিভা-রাজিয়ার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হলো না জানতে চাইলে লেখক বলেন, ‘তারা সংবাদ মাধ্যমে যে ধরনের অভিযোগ করেছে, তার একটি প্রমাণও দেখাতে পারেনি।’

এদিকে গতকাল বেলা ১১টার দিকে ইডেন কলেজ গেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ১৬ নেতাকর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কারের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান বহিষ্কৃত নেত্রীরা। তা না হলে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করার হুমকি দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কৃত নেত্রী সুস্মিতা বাড়ৈই বলেন, তদন্ত ছাড়া এ বহিষ্কারাদেশ দেয়া হয়েছে। এ ভিত্তিহীন বহিষ্কারাদেশ যদি প্রত্যাহার এবং এর সুষ্ঠু বিচার না করা হয় তাহলে আমরা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করব।

যদিও দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে ফিরে এসে আমরণ অনশনের ঘোষণা প্রত্যাহার করে নেন তারা। দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে নিজেদের অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমান্ডকে জানানোর জন্য কার্যালয়ে যান বহিষ্কৃত ১০-১২ জন নেতাকর্মী।

বহিষ্কৃত সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা আমাদের অভিযোগগুলো বড় ভাইদের জানাতে এসেছিলাম। জানিয়ে এখন চলে যাচ্ছি। সমস্যা সমাধানে তারা দায়িত্ব নিয়েছেন। আমরা কোন অনশনে নেই। আমাদের কোন কর্মসূচি নেই।’ তবে ভেতরে কার সঙ্গে তারা আলোচনা করেছেন, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।

ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের ঘটনার বিষয়ে জানতে চেয়ে ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যকে একাধিকবার মুঠোফোনে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

ছাত্রলীগ ইডেন কলেজের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করেছে : ছাত্রদল

ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের মারামারি, শিক্ষার্থী নির্যাতনসহ বিভিন্ন কর্মকা-ে কলেজের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুণœ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ অভিযোগে ছাত্রলীগকে ‘না’ বলার আহ্বান জানিয়েছে শাখা ছাত্রদল। রোববার রাতে কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রেহানা আক্তার শিরিন ও সদস্য-সচিব সানজিদা ইয়াসমিন তুলি স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে শাখা ছাত্রদল বলেছে, ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখীর গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে অকপটে যে তথ্য উত্থাপন করেছেন, এতে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে সাধারণ ছাত্রীরা নিরাপদ নয়।

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ছাত্রলীগের নেত্রীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজেদেরকে কলেজ প্রশাসনের চাইতেও বেশি প্রভাবশালী মনে করেন। আমরা তাদের এহেন কর্মকা-ের প্রতিবাদ জানাই। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি করে যে বাজে পরিস্থিতি তৈরি করেছে এতে ইডেন মহিলা কলেজের মতো স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে। তাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকে তাদের এই অবৈধ ও বেহায়াপনার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

ইডেনের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীদের আইনের আওতায় আনার দাবি

ইডেন কলেজে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।

সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের নেত্রীদের হাতে ছাত্রীদের যৌন হেনস্তা, হুমকি, সিট বাণিজ্য ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এ সমাবেশ করে সংগঠনটি।

সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতি আখতার হোসেন বলেন, সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদেরকে জিম্মি করে তাদেরকে দাসে পরিণত করেছে। ইডেন কলেজের বর্তমান এই পরিস্থিতির জন্য ছাত্রলীগ দায়ী। সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোর করে হেনস্তা ও যৌন নির্যাতন করছে ছাত্রলীগের নেত্রীরা। এই ভয়ানক সত্যটা তাদের নিজেদের মধ্য থেকেই গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। তাদের চাঁদাবাজি থেকে রেহাই পায়নি সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। টাকার বিনিময়ে তাদেরকে সিট দেয়া হয়। শুধুমাত্র কমিটি স্থগিত করে এই দায়মুক্তির চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে ইডেন কলেজ নিয়ে যে নোংরা প্রোপাগা-া ছড়ানো হচ্ছে, এই প্রোপাগা-ায় ইডেন কলেজের কোন নিরীহ শিক্ষার্থীর চুল পরিমাণ দায় নেই। দায় যাদের তারা ছাত্রলীগ। আমরা বলতে চাই ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ যারা জড়িত এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যাদের মদদে এসব অপকর্ম হয় তাদের অতিসত্ত্বর আইনের আওতায় আনতে হবে।