ডিম নিয়ে দিশেহারা সাধারণ মানুষ, পুষ্টিপূরণ দুঃস্বপ্ন

গত এক সপ্তাহে দাম উঠানামার পর ব্রয়লার মুরগির ডিমের হালি এখন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, আর ডজন ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরেজমিন রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা গেছে, সাদা ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা, ডজন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। লাল ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, ডজন ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। সাদিকা নামে এক গৃহবধূ দোকানে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, মামা ডিমের হালি কত? তিনি সোজা বললেন ৪৫ টাকা। এতদাম বাড়ার কারণ কী? জবাবে দোকানি বলল, আমার কাছে সেই জবাব নাই। এই কিছুদিন আগে ডিমের বাজারে মনিটরিং করলে দাম কিছুটা কমলেও সম্প্রতি আবার বাড়তে শুরু করছে। এখন ফিরে গেছে সেই আগের বাড়তি দামে।

কাপ্তান বাজারের আড়তদার রহিম শেখ বলেন, এক সপ্তাহ আগে ১০০ ডিম যেখানে ৯৫০ থেকে ৯৬০ টাকা দিয়ে কিনেছি, এখন ১০০ ডিমে ১০০ টাকা বেশি দাম দিতে হয়। ফলে ডিমের হালিতে চার-পাঁচ টাকা বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা দাম নির্ধারণ করি না। বিভিন্ন কোম্পানি যেমন প্যারাগন, কাজী ফার্মস ইত্যাদি বড় বড় কোম্পানি আর এলাকাভিত্তিক পাইকারি দোকানদাররা দাম নির্ধারণ করে।

দয়াগঞ্জ বাজারের ডিম বিক্রেতা আবদুল হালিম বলেন, আমরা আড়তদারদের থেকে ২০-৩০ টাকা কমে ডিম আনি। এর মধ্যে যাতায়াত ভাড়া, কুলির খরচ সবকিছু মিলে পাইকারি দাম থেকে একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।

ডিম বিক্রেতা মহসিন বলেন, আমরা পাইকারি দাম থেকে এক, দুই টাকা বেশি দামে বিক্রি করি। ডিম দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কিছু জানি না। সব আড়তদাররা আর খামারিরা জানে।

ধুপখোলা বাজারে আসা মফিদুল নামে এক ডিম ক্রেতা বলেন, ‘এভাবে কয়েকদিন পরপর যদি ডিমের দাম বেড়ে যায় তাইলে আমরা সাধারণ মানুষ খামু কী? এভাবে তো ডিমের দাম বাড়তে পারে না। যখন ইচ্ছা তখন দাম বাড়িয়ে দিবে এভাবে তো হতে পারে না।’

ভ্যানচালক করিম বলেন, ‘আমরা নি¤œবিত্ত শ্রেণীর মানুষ। বাসায় থেকে বউরে বলে এসেছি মাছ-মাংস বেশি দাম হলে এক ডজন ডিম নিয়ে বাসায় যাব। কিন্তু বাজারে এসে দেখি যে হারে ডিমের দাম তা আর কিনমু কীভাবে। বলেছিলাম বড় মাছ কিনতে না পারলে গুড়া মাছ নিয়ে যামু।’

নবাবপুর হার্ডওয়্যার দোকানের এক কর্মচারী বলেন, ‘পাঁচ থেকে সাত বছরের বয়সী আমার দুটি সন্তান, গত সপ্তাহে বাচ্চা দুটির শরীর দুর্বল হওয়ায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছিলাম। ডাক্তার বলেছেন, সকাল-বিকাল একটি করে ডিম খাওয়াতে। এখন বাজারে যে বাড়তি দাম আমার পক্ষে ডিম কিনে সন্তানদের খাওয়ানো সম্ভব না।’

মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ১১ আশ্বিন ১৪২৯ ২৯ সফর ১৪৪৪

ডিম নিয়ে দিশেহারা সাধারণ মানুষ, পুষ্টিপূরণ দুঃস্বপ্ন

মো. ওসমান গনি

image

গত এক সপ্তাহে দাম উঠানামার পর ব্রয়লার মুরগির ডিমের হালি এখন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, আর ডজন ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরেজমিন রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা গেছে, সাদা ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা, ডজন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। লাল ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, ডজন ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। সাদিকা নামে এক গৃহবধূ দোকানে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, মামা ডিমের হালি কত? তিনি সোজা বললেন ৪৫ টাকা। এতদাম বাড়ার কারণ কী? জবাবে দোকানি বলল, আমার কাছে সেই জবাব নাই। এই কিছুদিন আগে ডিমের বাজারে মনিটরিং করলে দাম কিছুটা কমলেও সম্প্রতি আবার বাড়তে শুরু করছে। এখন ফিরে গেছে সেই আগের বাড়তি দামে।

কাপ্তান বাজারের আড়তদার রহিম শেখ বলেন, এক সপ্তাহ আগে ১০০ ডিম যেখানে ৯৫০ থেকে ৯৬০ টাকা দিয়ে কিনেছি, এখন ১০০ ডিমে ১০০ টাকা বেশি দাম দিতে হয়। ফলে ডিমের হালিতে চার-পাঁচ টাকা বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা দাম নির্ধারণ করি না। বিভিন্ন কোম্পানি যেমন প্যারাগন, কাজী ফার্মস ইত্যাদি বড় বড় কোম্পানি আর এলাকাভিত্তিক পাইকারি দোকানদাররা দাম নির্ধারণ করে।

দয়াগঞ্জ বাজারের ডিম বিক্রেতা আবদুল হালিম বলেন, আমরা আড়তদারদের থেকে ২০-৩০ টাকা কমে ডিম আনি। এর মধ্যে যাতায়াত ভাড়া, কুলির খরচ সবকিছু মিলে পাইকারি দাম থেকে একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।

ডিম বিক্রেতা মহসিন বলেন, আমরা পাইকারি দাম থেকে এক, দুই টাকা বেশি দামে বিক্রি করি। ডিম দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কিছু জানি না। সব আড়তদাররা আর খামারিরা জানে।

ধুপখোলা বাজারে আসা মফিদুল নামে এক ডিম ক্রেতা বলেন, ‘এভাবে কয়েকদিন পরপর যদি ডিমের দাম বেড়ে যায় তাইলে আমরা সাধারণ মানুষ খামু কী? এভাবে তো ডিমের দাম বাড়তে পারে না। যখন ইচ্ছা তখন দাম বাড়িয়ে দিবে এভাবে তো হতে পারে না।’

ভ্যানচালক করিম বলেন, ‘আমরা নি¤œবিত্ত শ্রেণীর মানুষ। বাসায় থেকে বউরে বলে এসেছি মাছ-মাংস বেশি দাম হলে এক ডজন ডিম নিয়ে বাসায় যাব। কিন্তু বাজারে এসে দেখি যে হারে ডিমের দাম তা আর কিনমু কীভাবে। বলেছিলাম বড় মাছ কিনতে না পারলে গুড়া মাছ নিয়ে যামু।’

নবাবপুর হার্ডওয়্যার দোকানের এক কর্মচারী বলেন, ‘পাঁচ থেকে সাত বছরের বয়সী আমার দুটি সন্তান, গত সপ্তাহে বাচ্চা দুটির শরীর দুর্বল হওয়ায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছিলাম। ডাক্তার বলেছেন, সকাল-বিকাল একটি করে ডিম খাওয়াতে। এখন বাজারে যে বাড়তি দাম আমার পক্ষে ডিম কিনে সন্তানদের খাওয়ানো সম্ভব না।’