টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপারের গোলচত্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিশু ও এক নারীসহ ছয়জন নিহত ও অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় বাসের চালক ও হেল্পার পলাতক রয়েছে।
গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একতা পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস ও একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েছেন বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা।
নিহতরা হলেন, মাইক্রোবাসের চালক কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কুটুম্বপুর গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে দুলাল হোসেন (৫২), পাবনার বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক জহিরুল ইসলাম (৫০), বগুড়া সদরের জলসিড়ি গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে রিফাত (৩৫), নাটোর সদরের বড়াই গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে তামিম (৭), রুবি বেগম (৬৫)। একজনের পরিচয় জানা যায়নি।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা একতা পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড়ের গোলচত্বর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের লেন পরিবর্তন করে বিপরীত লেনে এসে পড়ে। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা উত্তরবঙ্গগামী একটি মাইক্রোবাসের উপরে উঠে যায় বাসটি। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন এবং হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও তিনজন মারা যান। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের।
মাইক্রোবাসে থাকা চালক, একজন পুরুষ ও একজন নারী যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান। আর বাস যাত্রীদের মধ্যে দুই শিশু ও একজন পুরুষ যাত্রী হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপ?ক্ষের সহকা?রী সি?কিউ?রি?টি অ্যান্ড সেফ?টি ম্যা?নেজার র?ফিকুল ইসলাম ব?লেন, আমরা সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে চলে আসি। এসে দেখি মাইক্রোবাস ও বাসের যাত্রীরা চিৎকার করছে। আমাদের বিবিএ’র রেসকিউ টিম এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। এখানে যারা আহত ছিলেন আমাদের ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে তাদের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই। এছাড়া যারা ঘটনাস্থলে নিহত হয় তাদের মরদেহ থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা একটি বাসের সঙ্গে একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন স্পট ডেট হয়। এছাড়া আমাদের গাড়ি দিয়ে টাঙ্গাইল নেয়ার পথে দু’জন মারা যায় এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আরও একজন মারা যান। এ ঘটনায় প্রায় ২৫ জন আহত হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, যে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি ঢাকা মুখী একতা পরিবহনের যে বাসটি বাম লেন দিয়ে যাচ্ছিল এটি কোন যান্ত্রিক ত্রুটি বা ব্রেকফেল করে লেন পরিবর্তন হয়ে উত্তরবঙ্গমুখী লেনে প্রবেশ করে। কিন্তু উত্তরবঙ্গমুখী লেনে যে মাইক্রোবাসটি যাচ্ছিল তখন ওই বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে ছয় জনের মৃত্যু হয়। যেসব পরিবারের সদস্যরা এখানে নিহত বা আহত হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা থানায় আসলে আমরা আইনগত সহায়তা প্রদান করব। নিহতদের মরদেহ পুলিশের তত্বাবধায়নে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক আতাউল গনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। দুর্ঘটনাটি কেন ঘটল তার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, বিআরটিএ’র সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দুর্ঘটনায় যারা মারা গেছেন তাদের পরিবারকে মরদেহ দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। এছাড়া আহতদের চিকিৎসা সরকারি হাসপাতালে দেয়া হচ্ছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য যদি অতিরিক্ত ওষুধের প্রয়োজন হয় তা জেলা প্রশাসন বহন করবে।
শুক্রবার, ০৭ অক্টোবর ২০২২ , ২২ আশ্বিন ১৪২৯ ১০ সফর ১৪৪৪
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপারের গোলচত্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিশু ও এক নারীসহ ছয়জন নিহত ও অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় বাসের চালক ও হেল্পার পলাতক রয়েছে।
গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একতা পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস ও একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েছেন বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা।
নিহতরা হলেন, মাইক্রোবাসের চালক কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কুটুম্বপুর গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে দুলাল হোসেন (৫২), পাবনার বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক জহিরুল ইসলাম (৫০), বগুড়া সদরের জলসিড়ি গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে রিফাত (৩৫), নাটোর সদরের বড়াই গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে তামিম (৭), রুবি বেগম (৬৫)। একজনের পরিচয় জানা যায়নি।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা একতা পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড়ের গোলচত্বর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের লেন পরিবর্তন করে বিপরীত লেনে এসে পড়ে। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা উত্তরবঙ্গগামী একটি মাইক্রোবাসের উপরে উঠে যায় বাসটি। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন এবং হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও তিনজন মারা যান। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের।
মাইক্রোবাসে থাকা চালক, একজন পুরুষ ও একজন নারী যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান। আর বাস যাত্রীদের মধ্যে দুই শিশু ও একজন পুরুষ যাত্রী হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপ?ক্ষের সহকা?রী সি?কিউ?রি?টি অ্যান্ড সেফ?টি ম্যা?নেজার র?ফিকুল ইসলাম ব?লেন, আমরা সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে চলে আসি। এসে দেখি মাইক্রোবাস ও বাসের যাত্রীরা চিৎকার করছে। আমাদের বিবিএ’র রেসকিউ টিম এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। এখানে যারা আহত ছিলেন আমাদের ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে তাদের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই। এছাড়া যারা ঘটনাস্থলে নিহত হয় তাদের মরদেহ থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা একটি বাসের সঙ্গে একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন স্পট ডেট হয়। এছাড়া আমাদের গাড়ি দিয়ে টাঙ্গাইল নেয়ার পথে দু’জন মারা যায় এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আরও একজন মারা যান। এ ঘটনায় প্রায় ২৫ জন আহত হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, যে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি ঢাকা মুখী একতা পরিবহনের যে বাসটি বাম লেন দিয়ে যাচ্ছিল এটি কোন যান্ত্রিক ত্রুটি বা ব্রেকফেল করে লেন পরিবর্তন হয়ে উত্তরবঙ্গমুখী লেনে প্রবেশ করে। কিন্তু উত্তরবঙ্গমুখী লেনে যে মাইক্রোবাসটি যাচ্ছিল তখন ওই বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে ছয় জনের মৃত্যু হয়। যেসব পরিবারের সদস্যরা এখানে নিহত বা আহত হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা থানায় আসলে আমরা আইনগত সহায়তা প্রদান করব। নিহতদের মরদেহ পুলিশের তত্বাবধায়নে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক আতাউল গনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। দুর্ঘটনাটি কেন ঘটল তার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, বিআরটিএ’র সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দুর্ঘটনায় যারা মারা গেছেন তাদের পরিবারকে মরদেহ দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। এছাড়া আহতদের চিকিৎসা সরকারি হাসপাতালে দেয়া হচ্ছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য যদি অতিরিক্ত ওষুধের প্রয়োজন হয় তা জেলা প্রশাসন বহন করবে।