সুলভ মূল্যে গাড়ি কেনাবেচার নামে ৬ সহযোগীকে নিয়ে প্রতারণার সিন্ডিকেট গড়ে তোলে কুমিল্লার মেঘনা থানার ২নং মানিকাচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন। ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা, সরকারের এমপি, প্রবাসীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ৬০০-৭০০ জনের সঙ্গে প্রতারণা করেন মাত্র ৬০-৭০টি গাড়ি দেখিয়ে। একটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখিয়ে ৩৭ জনের কাছে গাড়ি বিক্রি করেছেন তিনি। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন জাকির।
সম্প্রতি জাকিরকে ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গা থেকে ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর মুগদা থানায় একটি প্রতারণার মামলা হয়।
তদন্তকালে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত জাকির চেয়ারম্যান পোর্ট থেকে স্বল্প দামে গাড়ি ক্রয় করে দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিত। পরে ক্রয়কৃত গাড়ি রেন্ট-এ কারের মাধ্যমে মাসিক ভাড়ায় পরিচালনা করার জন্য ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি করত। পাশাপাশি একই রেজিস্ট্রেশন নম্বর সম্বলিত গাড়ি একাধিক ব্যক্তির কাছে জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রয় করত।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুধু ইঞ্জিন নম্বর ও চেসিস নম্বর দিয়ে গাড়ি বিক্রির চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করা হত। গাড়িটি নিজেই ভাড়া নিয়ে মাসিক ভাড়া পরিশোধের ভিত্তিতে পরিচালনা করার কথা বলে কিছুদিন ভাড়া পরিশোধ করে পরবর্তীতে ভাড়া দেয়া বন্ধ করে গাড়ি ক্রয়ের টাকা আত্মসাৎ করত। এছাড়াও পূর্বের বিক্রয়কৃত গাড়ি স্বল্প মূল্যে মালিকানা হস্তান্তরের লোভ দেখিয়েও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
ডিবি প্রধান আরও বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ২টি মাইক্রো বাস উদ্ধার করা হয়।
পরে ৪ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরে একটি গ্রামের বিভিন্ন লোকের কাছে ১২২টি গাড়ি বিক্রির কথা বলে প্রতারণা করেছেন জাকির। তার প্রতিষ্ঠান আর. কে. মটরস—এর নামে এবং তার আত্মীয়স্বজনের নামে ২৭টি ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। তার নামে বিভিন্ন থানায় ১২টি প্রতারণার মামলাও রয়েছে।
অধিক মুনাফা লাভের আশায় লোভের বশবর্তী হয়ে এ ধরনের প্রতারণার ফাঁদে পা না দিতে সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করেন ডিবি প্রধান। একই সঙ্গে, গাড়ি বা জমি কেনার পূর্বে কাগজপত্র ভালোভাবে যাচাইয়ের পরামর্শ দেন তিনি।
শুক্রবার, ০৭ অক্টোবর ২০২২ , ২২ আশ্বিন ১৪২৯ ১০ সফর ১৪৪৪
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
সুলভ মূল্যে গাড়ি কেনাবেচার নামে ৬ সহযোগীকে নিয়ে প্রতারণার সিন্ডিকেট গড়ে তোলে কুমিল্লার মেঘনা থানার ২নং মানিকাচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন। ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা, সরকারের এমপি, প্রবাসীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ৬০০-৭০০ জনের সঙ্গে প্রতারণা করেন মাত্র ৬০-৭০টি গাড়ি দেখিয়ে। একটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখিয়ে ৩৭ জনের কাছে গাড়ি বিক্রি করেছেন তিনি। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন জাকির।
সম্প্রতি জাকিরকে ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গা থেকে ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর মুগদা থানায় একটি প্রতারণার মামলা হয়।
তদন্তকালে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত জাকির চেয়ারম্যান পোর্ট থেকে স্বল্প দামে গাড়ি ক্রয় করে দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিত। পরে ক্রয়কৃত গাড়ি রেন্ট-এ কারের মাধ্যমে মাসিক ভাড়ায় পরিচালনা করার জন্য ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি করত। পাশাপাশি একই রেজিস্ট্রেশন নম্বর সম্বলিত গাড়ি একাধিক ব্যক্তির কাছে জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রয় করত।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুধু ইঞ্জিন নম্বর ও চেসিস নম্বর দিয়ে গাড়ি বিক্রির চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করা হত। গাড়িটি নিজেই ভাড়া নিয়ে মাসিক ভাড়া পরিশোধের ভিত্তিতে পরিচালনা করার কথা বলে কিছুদিন ভাড়া পরিশোধ করে পরবর্তীতে ভাড়া দেয়া বন্ধ করে গাড়ি ক্রয়ের টাকা আত্মসাৎ করত। এছাড়াও পূর্বের বিক্রয়কৃত গাড়ি স্বল্প মূল্যে মালিকানা হস্তান্তরের লোভ দেখিয়েও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
ডিবি প্রধান আরও বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ২টি মাইক্রো বাস উদ্ধার করা হয়।
পরে ৪ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরে একটি গ্রামের বিভিন্ন লোকের কাছে ১২২টি গাড়ি বিক্রির কথা বলে প্রতারণা করেছেন জাকির। তার প্রতিষ্ঠান আর. কে. মটরস—এর নামে এবং তার আত্মীয়স্বজনের নামে ২৭টি ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। তার নামে বিভিন্ন থানায় ১২টি প্রতারণার মামলাও রয়েছে।
অধিক মুনাফা লাভের আশায় লোভের বশবর্তী হয়ে এ ধরনের প্রতারণার ফাঁদে পা না দিতে সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করেন ডিবি প্রধান। একই সঙ্গে, গাড়ি বা জমি কেনার পূর্বে কাগজপত্র ভালোভাবে যাচাইয়ের পরামর্শ দেন তিনি।