শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি সেনাদের আত্মত্যাগ

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে মোতায়েন করা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কর্তব্যরত তিন বাংলাদেশি সেনা গত সোমবার এক বিস্ফোরণে মারা গেছেন। দেশটির পশ্চিম সেক্টরে বোয়ার এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশি সেনা ইউনিট হামলার শিকার হয়। হামলার ঘটনায় একজন বাংলাদেশি টহল কমান্ডার আহত হয়েছেন। সেখানে দায়িত্বরত অন্য শান্তিরক্ষীরা নিরাপদে আছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।

শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে নিহত সেনা সদস্যদের পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাই। হামলায় আহত সেনা সদস্য দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন সেই কামনা করি। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজে তারা যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন তা মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে গিয়ে অতীতেও বাংলাদেশের নাগরিকরা হতাহত হয়েছেন। এক হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেড়শতাধিক বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বিভিন্ন দেশে মারা গেছেন। সংঘাতমুখর বিভিন্ন দেশে শান্তি রক্ষার কাজ বরাবরই ঝুঁকিপূর্ণ। আপন দেশ ও স্বজনদের রেখে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেসব বাংলাদেশি নাগরিক বিশ্বের নানা প্রান্তে শান্তিরক্ষার কাজ করছেন তারা দায়িত্ব শেষে সুস্থভাবে ফিরে আসুন সেই কামনা করি।

বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শান্তিকামী জাতি হিসেবে আমাদের জন্য এটা গর্বের বিষয়। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বেশিসংখ্যক শান্তিরক্ষী রয়েছে এমন দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান উপরের দিকে।

শুধু শান্তিরক্ষী সদস্য সংখ্যার মানদন্ডেই নয়, কর্মক্ষেত্রে শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের প্রশংসাযোগ্য অনেক অর্জন রয়েছে। এসব অর্জনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও মিলেছে বিভিন্ন সময়। পেশাদারিত্ব, নৈতিকতা এবং নিয়মানুবর্তিতার মধ্যদিয়ে বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ উচ্চ আসনে আসীন হয়েছে। শান্তিরক্ষীরা দেশে দেশে যে অবদান রেখেছেন সেটা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়তে সহায়তা করেছে।

শান্তির জন্য মানবজাতির আকাক্সক্ষা চিরন্তন। এই আকাক্সক্ষা পূরণে বাংলাদেশ জোরালো ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। শান্তি প্রতিষ্ঠা করা মহৎ কাজ। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে এই কাজ করে চলেছেন। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার মিশন সফল হবে, তাদের অবদান বিশ্ববাসী শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে-সেটা আমাদের প্রত্যাশা।

শুক্রবার, ০৭ অক্টোবর ২০২২ , ২২ আশ্বিন ১৪২৯ ১০ সফর ১৪৪৪

শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি সেনাদের আত্মত্যাগ

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে মোতায়েন করা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কর্তব্যরত তিন বাংলাদেশি সেনা গত সোমবার এক বিস্ফোরণে মারা গেছেন। দেশটির পশ্চিম সেক্টরে বোয়ার এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশি সেনা ইউনিট হামলার শিকার হয়। হামলার ঘটনায় একজন বাংলাদেশি টহল কমান্ডার আহত হয়েছেন। সেখানে দায়িত্বরত অন্য শান্তিরক্ষীরা নিরাপদে আছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।

শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে নিহত সেনা সদস্যদের পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাই। হামলায় আহত সেনা সদস্য দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন সেই কামনা করি। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজে তারা যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন তা মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে গিয়ে অতীতেও বাংলাদেশের নাগরিকরা হতাহত হয়েছেন। এক হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেড়শতাধিক বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বিভিন্ন দেশে মারা গেছেন। সংঘাতমুখর বিভিন্ন দেশে শান্তি রক্ষার কাজ বরাবরই ঝুঁকিপূর্ণ। আপন দেশ ও স্বজনদের রেখে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেসব বাংলাদেশি নাগরিক বিশ্বের নানা প্রান্তে শান্তিরক্ষার কাজ করছেন তারা দায়িত্ব শেষে সুস্থভাবে ফিরে আসুন সেই কামনা করি।

বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শান্তিকামী জাতি হিসেবে আমাদের জন্য এটা গর্বের বিষয়। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বেশিসংখ্যক শান্তিরক্ষী রয়েছে এমন দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান উপরের দিকে।

শুধু শান্তিরক্ষী সদস্য সংখ্যার মানদন্ডেই নয়, কর্মক্ষেত্রে শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের প্রশংসাযোগ্য অনেক অর্জন রয়েছে। এসব অর্জনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও মিলেছে বিভিন্ন সময়। পেশাদারিত্ব, নৈতিকতা এবং নিয়মানুবর্তিতার মধ্যদিয়ে বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ উচ্চ আসনে আসীন হয়েছে। শান্তিরক্ষীরা দেশে দেশে যে অবদান রেখেছেন সেটা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়তে সহায়তা করেছে।

শান্তির জন্য মানবজাতির আকাক্সক্ষা চিরন্তন। এই আকাক্সক্ষা পূরণে বাংলাদেশ জোরালো ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। শান্তি প্রতিষ্ঠা করা মহৎ কাজ। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে এই কাজ করে চলেছেন। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার মিশন সফল হবে, তাদের অবদান বিশ্ববাসী শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে-সেটা আমাদের প্রত্যাশা।