ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। কমার কোন লক্ষণ এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। গত সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ৬১ জন ডেঙ্গুতে প্রাণ হারাল। তাদের মধ্যে ঢাকায় মারা গেছে ২৯ জন, আর ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় মারা গেছে ৩২ জন।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে ডেঙ্গু দেশে বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য সমস্যা। দেশে বড় ধরনের ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয় ২০০০ সালে। এরপর থেকে প্রতি বছর বহু মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু হচ্ছে। করোনা মহামারি শুরুর বছর ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম ছিল। কিন্তু গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ২৮ হাজার ৪২৯ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছিল ১০৫ জনের।
করোনা মাহামারি শুরু আগে ২০১৯ সালে এক লাখেরও বেশি আক্রান্ত ও দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এটা ছিল সরকারি হিসাব। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০০। চলতি বছরও বহু মানুষ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তাই ডেঙ্গু নিয়ে নাগরিকদের মনে এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কোথায় গিয়ে থামবে সেটা বলা যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে করা জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছিল, গত বছরের চেয়ে এ বছর একই সময়ে রাজধানীতে এডিস মশার লার্ভা বেশি দেখা গেছে। তারা এটাও বলেছিলেন যে, বৃষ্টি যদি থেমে থেমে হয় তাহলে মশা বাড়বে। এসব তথ্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছিল। সে অনুযায়ী তারা ক্র্যাশ প্রোগ্রামও শুরু করে। নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটানোর পাশাপশি নানা সচেতনতামূলক কাজ করছে উভয় সিটির কর্তৃপক্ষ। বাসার ছাদে জমে থাকা পানি শনাক্তে ড্রোন ব্যবহার করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
তবে সিটি করপোরেশন নানা উদ্যোগের কথা বললেও এসব কতটা কার্যকর, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাদের এ কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে, গতিশীল করতে হবে। মশা নিধনে উভয় সিটি করপোরেশনকে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
শুধু রাজধানী ঢাকায় অভিযান চালালেই হবে না। কারণ ঢাকাসহ দেশের ৫০টি জেলাতেই ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে কক্সবাজার জেলায়। এ জেলায় ১ হাজার ২৪৪ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। কাজেই ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঢাকার বাইরেও অভিযান চালাতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে এ অভিযান জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে, অভিযানে স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। হাল ছেড়ে দিলে চলবে না, যেকোন উপায়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
শুক্রবার, ০৭ অক্টোবর ২০২২ , ২২ আশ্বিন ১৪২৯ ১০ সফর ১৪৪৪
ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। কমার কোন লক্ষণ এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। গত সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ৬১ জন ডেঙ্গুতে প্রাণ হারাল। তাদের মধ্যে ঢাকায় মারা গেছে ২৯ জন, আর ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় মারা গেছে ৩২ জন।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে ডেঙ্গু দেশে বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য সমস্যা। দেশে বড় ধরনের ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয় ২০০০ সালে। এরপর থেকে প্রতি বছর বহু মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু হচ্ছে। করোনা মহামারি শুরুর বছর ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম ছিল। কিন্তু গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ২৮ হাজার ৪২৯ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছিল ১০৫ জনের।
করোনা মাহামারি শুরু আগে ২০১৯ সালে এক লাখেরও বেশি আক্রান্ত ও দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এটা ছিল সরকারি হিসাব। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০০। চলতি বছরও বহু মানুষ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তাই ডেঙ্গু নিয়ে নাগরিকদের মনে এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কোথায় গিয়ে থামবে সেটা বলা যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে করা জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছিল, গত বছরের চেয়ে এ বছর একই সময়ে রাজধানীতে এডিস মশার লার্ভা বেশি দেখা গেছে। তারা এটাও বলেছিলেন যে, বৃষ্টি যদি থেমে থেমে হয় তাহলে মশা বাড়বে। এসব তথ্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছিল। সে অনুযায়ী তারা ক্র্যাশ প্রোগ্রামও শুরু করে। নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটানোর পাশাপশি নানা সচেতনতামূলক কাজ করছে উভয় সিটির কর্তৃপক্ষ। বাসার ছাদে জমে থাকা পানি শনাক্তে ড্রোন ব্যবহার করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
তবে সিটি করপোরেশন নানা উদ্যোগের কথা বললেও এসব কতটা কার্যকর, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাদের এ কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে, গতিশীল করতে হবে। মশা নিধনে উভয় সিটি করপোরেশনকে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
শুধু রাজধানী ঢাকায় অভিযান চালালেই হবে না। কারণ ঢাকাসহ দেশের ৫০টি জেলাতেই ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে কক্সবাজার জেলায়। এ জেলায় ১ হাজার ২৪৪ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। কাজেই ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঢাকার বাইরেও অভিযান চালাতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে এ অভিযান জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে, অভিযানে স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। হাল ছেড়ে দিলে চলবে না, যেকোন উপায়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।