নিলুরখামার, হাসনাবাদ গণহত্যা দিবস আজ

আজ ১৬ নভেম্বর নিলুরখামার ও হাসনাবাদ গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে কুড়িগ্রামের নাগেশ^রী উপজেলার সন্তোষপুর ও হাসনাবাদ ইউনিয়নে পাক হানাদার বাহিনী ১০৮ জন নিরাপরাধ মানুষকে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করে।

মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৬ নভেম্বর পাক বাহিনী সন্তোষপুর ইউনিয়নের আলেপেরতেপথি, চরুয়াটারী, কাইটটারী, সূর্যেরকুটি, সাতানি, ব্যাপারীহাটসহ কয়েকটি গ্রামে অতর্কিতে হামলা চালায়। ভীত-সন্ত্রস্ত গ্রামের মানুষ গিয়ে আশ্রয় নেয় পাশর্^বর্তী নিলুরখামার গ্রামে। সেটিকে তিনদিক থেকে ঘিরে ফেলে পাক হানাদাররা। নির্বিচারে গুলি চালায়, অগ্নি সংযোগ করে বাড়ি-ঘরে। সেই আগুনে পুড়ে মারা যান আপর আলী, বাচ্চানী খাতুন, মইনুদ্দিন মুন্সী, আব্দুস সালাম মুন্সী, হাজেরা খাতুন, আজিজুর রহমান। পাক হানাদাররা বেয়নেট দিয়ে খুঁিচয়ে ও গুলি করে হত্যা করে আরো ৭৯ জন নিরিহ মানুষকে। স্বচক্ষে এই নির্মমতা দেখে শোকে পাথর হয়ে যায় সবাই। শোক সামলানোর ব্যার্থ চেষ্টা শেষে তাদের মধ্য থেকে কয়েকজন মৃতদেহগুলো দাফনে উদ্যোগী হয়। পরে তাদের এ উদ্যোগে সামিল হয় অধিকাংশ পুরুষ মানুষ। গ্রামের একদিকে তারা গর্ত করে মৃতদেহগুলো মাটি চাপা দেয়। এটিই উপজেলার সর্ববৃহৎ ও জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম গণকবর। একই দিনে ২৫ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট অধিনায়ক ক্যাপ্টেন আতাউল্লাহ খাঁনের নেতৃত্বে রাজাকার ও পাকবাহিনীর একটি দল হাসনাবাদ ইউনিয়নের মনিয়ারহাট, শ্রীপুর, হাজিরহাট, টালানাপা গ্রামে ঘর-বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান ২৯ জন। মনিয়ার হাটের আগু মিয়াসহ ৩ জনকে তারা হাত পা বেঁধে আগুনে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে। এই নৃশংস হত্যাকান্ডের স্মৃতি আজো ভুলতে পারেনি এলাকাবাসী। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান নান্টু জানান, সেদিনের আদিম ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠা রাজাকার এবং পাকবাহিনীর উল্লাসে প্রাণ গেছে এ দুই ইউনিয়নের ১০৮ জন নিরীহ নিরাপরাধ মানুষের।

সে দু:সহ স্মৃতির কথা আজো ভুলিনি আমরা।

বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২ , ০১ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২০ রবিউস সানি ১৪৪৪

নিলুরখামার, হাসনাবাদ গণহত্যা দিবস আজ

প্রতিনিধি, নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম)

আজ ১৬ নভেম্বর নিলুরখামার ও হাসনাবাদ গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে কুড়িগ্রামের নাগেশ^রী উপজেলার সন্তোষপুর ও হাসনাবাদ ইউনিয়নে পাক হানাদার বাহিনী ১০৮ জন নিরাপরাধ মানুষকে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করে।

মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৬ নভেম্বর পাক বাহিনী সন্তোষপুর ইউনিয়নের আলেপেরতেপথি, চরুয়াটারী, কাইটটারী, সূর্যেরকুটি, সাতানি, ব্যাপারীহাটসহ কয়েকটি গ্রামে অতর্কিতে হামলা চালায়। ভীত-সন্ত্রস্ত গ্রামের মানুষ গিয়ে আশ্রয় নেয় পাশর্^বর্তী নিলুরখামার গ্রামে। সেটিকে তিনদিক থেকে ঘিরে ফেলে পাক হানাদাররা। নির্বিচারে গুলি চালায়, অগ্নি সংযোগ করে বাড়ি-ঘরে। সেই আগুনে পুড়ে মারা যান আপর আলী, বাচ্চানী খাতুন, মইনুদ্দিন মুন্সী, আব্দুস সালাম মুন্সী, হাজেরা খাতুন, আজিজুর রহমান। পাক হানাদাররা বেয়নেট দিয়ে খুঁিচয়ে ও গুলি করে হত্যা করে আরো ৭৯ জন নিরিহ মানুষকে। স্বচক্ষে এই নির্মমতা দেখে শোকে পাথর হয়ে যায় সবাই। শোক সামলানোর ব্যার্থ চেষ্টা শেষে তাদের মধ্য থেকে কয়েকজন মৃতদেহগুলো দাফনে উদ্যোগী হয়। পরে তাদের এ উদ্যোগে সামিল হয় অধিকাংশ পুরুষ মানুষ। গ্রামের একদিকে তারা গর্ত করে মৃতদেহগুলো মাটি চাপা দেয়। এটিই উপজেলার সর্ববৃহৎ ও জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম গণকবর। একই দিনে ২৫ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট অধিনায়ক ক্যাপ্টেন আতাউল্লাহ খাঁনের নেতৃত্বে রাজাকার ও পাকবাহিনীর একটি দল হাসনাবাদ ইউনিয়নের মনিয়ারহাট, শ্রীপুর, হাজিরহাট, টালানাপা গ্রামে ঘর-বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান ২৯ জন। মনিয়ার হাটের আগু মিয়াসহ ৩ জনকে তারা হাত পা বেঁধে আগুনে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে। এই নৃশংস হত্যাকান্ডের স্মৃতি আজো ভুলতে পারেনি এলাকাবাসী। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান নান্টু জানান, সেদিনের আদিম ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠা রাজাকার এবং পাকবাহিনীর উল্লাসে প্রাণ গেছে এ দুই ইউনিয়নের ১০৮ জন নিরীহ নিরাপরাধ মানুষের।

সে দু:সহ স্মৃতির কথা আজো ভুলিনি আমরা।