৩ মাছ ব্যবসায়ীর দখলে সুন্দরবনের অভয়ারণ্য

সুন্দরবনের প্রায় ৭১৫ বর্গকিলোমিটার অভয়ারণ্য এলাকা দখলে নিয়ে রমরমা ব্যবসা করছেন ৩ জন। এরা সাধারণ জেলেদের কাছে ওই এলাকার খাল ইজারা দিয়ে বছরে হাতিয়ে নিচ্ছেন কয়েক কোটি টাকা। অভিযোগ, তাদের এ টাকার ভাগ পাচ্ছেন বন বিভাগের স্থানীয় কর্মচারী থেকে শুরু করে কর্মকর্তারাও। অভিযুক্ত মাছ ব্যবসায়ীরা হলেন- খুলনার দাকোপ উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জহির উদ্দীন ওরফে জহির মেম্বার, কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের কয়রা গ্রামের মোজাফফর হোসেন ওরফে মোজাফফর কোম্পানি ও একই ইউনিয়নের গোবরা গ্রামের আব্দুল খালেক। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জহির উদ্দীন বলেন, সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে মাছ শিকার নিষিদ্ধ। সেখানে বন বিভাগের কঠোর নজরদারি রয়েছে। চাইলেই কেউ সেখানে গিয়ে মাছ ধরতে পারেন না। আসলে প্রতিপক্ষরা আমার নামে বানোয়াট ও মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে। বন বিভাগ ও স্থানীয় জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, বন বিভাগের স্থানীয় অফিস থেকে প্রথমে জেলেদের নামে বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট (বিএলসি) নেন জহির মেম্বার। পরে জেলেপ্রতি দাদন দিয়ে নিষিদ্ধ এলাকায় মাছ ধরতে পাঠান। বিএলসির মালিক জেলেরা হলেও নাটাই থাকে তার হাতে। বিএলসির মাধ্যমেই জেলেদের জিম্মি করা হয়। কয়রার জেলে শাজাহান সানা জানান, সুন্দরবনের অন্য সব খালের চেয়ে অভয়ারণ্যের খালে বেশি মাছ থাকে। যে কারণে ওই এলাকার খাল দখল নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকে। মৌসুমের শুরুতে অনেকেই বন বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করে খালগুলোর দখল নেন। পরে জেলেদের কাছে গণ চুক্তিতে ইজারা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে সুন্দরবনের নীলকমল বন টহল ফাঁড়ির ওসি আব্দুল হাকিম বলেন, অভয়ারণ্যে জেলেদের মাছ শিকারের সুযোগ দেয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। তবে মাঝেমধ্যে আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দু-একজন জেলে ওই এলাকায় ঢুকে পড়েন। টের পেলেই আমরা ধরে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। গত এক বছরে শতাধিক জেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। এ সময় জরিমানা আদায় হয়েছে প্রায় ২৫ লাখ টাকা।

সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, বনের নিষিদ্ধ এলাকায় ঢুকে মাছ শিকারের কোনো সুযোগ নেই। সারাক্ষণ আমাদের নজরদারি রয়েছে। এ ধরনের অবৈধ কাজে বন বিভাগের কারও জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর ২০২২ , ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২২ রবিউস সানি ১৪৪৪

৩ মাছ ব্যবসায়ীর দখলে সুন্দরবনের অভয়ারণ্য

জেলা বার্তা পরিবেশক, খুলনা

সুন্দরবনের প্রায় ৭১৫ বর্গকিলোমিটার অভয়ারণ্য এলাকা দখলে নিয়ে রমরমা ব্যবসা করছেন ৩ জন। এরা সাধারণ জেলেদের কাছে ওই এলাকার খাল ইজারা দিয়ে বছরে হাতিয়ে নিচ্ছেন কয়েক কোটি টাকা। অভিযোগ, তাদের এ টাকার ভাগ পাচ্ছেন বন বিভাগের স্থানীয় কর্মচারী থেকে শুরু করে কর্মকর্তারাও। অভিযুক্ত মাছ ব্যবসায়ীরা হলেন- খুলনার দাকোপ উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জহির উদ্দীন ওরফে জহির মেম্বার, কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের কয়রা গ্রামের মোজাফফর হোসেন ওরফে মোজাফফর কোম্পানি ও একই ইউনিয়নের গোবরা গ্রামের আব্দুল খালেক। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জহির উদ্দীন বলেন, সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে মাছ শিকার নিষিদ্ধ। সেখানে বন বিভাগের কঠোর নজরদারি রয়েছে। চাইলেই কেউ সেখানে গিয়ে মাছ ধরতে পারেন না। আসলে প্রতিপক্ষরা আমার নামে বানোয়াট ও মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে। বন বিভাগ ও স্থানীয় জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, বন বিভাগের স্থানীয় অফিস থেকে প্রথমে জেলেদের নামে বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট (বিএলসি) নেন জহির মেম্বার। পরে জেলেপ্রতি দাদন দিয়ে নিষিদ্ধ এলাকায় মাছ ধরতে পাঠান। বিএলসির মালিক জেলেরা হলেও নাটাই থাকে তার হাতে। বিএলসির মাধ্যমেই জেলেদের জিম্মি করা হয়। কয়রার জেলে শাজাহান সানা জানান, সুন্দরবনের অন্য সব খালের চেয়ে অভয়ারণ্যের খালে বেশি মাছ থাকে। যে কারণে ওই এলাকার খাল দখল নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকে। মৌসুমের শুরুতে অনেকেই বন বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করে খালগুলোর দখল নেন। পরে জেলেদের কাছে গণ চুক্তিতে ইজারা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে সুন্দরবনের নীলকমল বন টহল ফাঁড়ির ওসি আব্দুল হাকিম বলেন, অভয়ারণ্যে জেলেদের মাছ শিকারের সুযোগ দেয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। তবে মাঝেমধ্যে আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দু-একজন জেলে ওই এলাকায় ঢুকে পড়েন। টের পেলেই আমরা ধরে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। গত এক বছরে শতাধিক জেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। এ সময় জরিমানা আদায় হয়েছে প্রায় ২৫ লাখ টাকা।

সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, বনের নিষিদ্ধ এলাকায় ঢুকে মাছ শিকারের কোনো সুযোগ নেই। সারাক্ষণ আমাদের নজরদারি রয়েছে। এ ধরনের অবৈধ কাজে বন বিভাগের কারও জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।