চিঠি : শিশুশ্রম আদর্শ জাতি গঠনে অন্তরায়

শিশুশ্রম আদর্শ জাতি গঠনে অন্তরায়

‘বন্যরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’। এর বিপরীত কার্যক্রম পরিচালিত হলে ফলাফল আশঙ্কাজনক। যখন শিশুরা বই নিয়ে স্কুলে যাবে, বল নিয়ে মাঠে খেলবে, কৈশোরের উচ্ছলতায় মাতিয়ে তুলবে জীবন ও জগত, তাদের হৃদয়ে প্রবাহিত হবে আনন্দের ফোয়ারা। তখন তারা শিশুশ্রমের মতো জাতীয় ব্যাধিতে আক্রান্ত। শিশুদের শিক্ষা ও বিনোদনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, এমন একটা বলয়ে পুঁজিপতিরা তাদের দাঁড় করাচ্ছে, যার ফলে অজান্তেই শিশুদের প্রস্ফুটিত ভ্রুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাদের স্বপ্ন, আশা ও প্রত্যাশা মাটিতে মিশে যায়।

শিশুশ্রম আন্তর্জাতিক, জাতীয় ও সামাজিক ব্যাধি, যা সর্বজনীন নিষিদ্ধ কর্ম হিসেবে বিবেচিত। শিশুশ্রমের মোটামুটি নিশ্চিত ভবিষ্যৎ হলো, রাষ্ট্র দক্ষজনশক্তি তৈরির সক্ষমতা হারানোর মাধ্যমে একটি পঙ্গু জনদুর্বলতার জন্ম দিবে, যা জাতির ভাগ্যে দুর্ভোগ এনে ছাড়বে। দক্ষ জনশক্তি যতটুকু কাজ করতে পারে, শিশু শ্রমিক ততটুকু কাজ করতে পারে না। অতিরিক্ত শ্রমে শিশু শ্রমিক মানবিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে, দিন দিন রূঢ় হয়ে উঠে। তার পরিশ্রম, তাকে অন্যান্য সৃষ্টিশীল কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে রাখে। মেধা হ্রাস পেতে থাকে, ফলে নেশাগ্রস্ত হয়ে উঠে এবং কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হয়ে অপরাধ জগতে পা রাখে। দেশে আইন থাকার পরেও শিশুশ্রম চলমান।

শিশুশ্রম রোধে দরিদ্র পরিবারগুলোর তালিকা করা উচিত। তাদের সন্তানদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি ও প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করার মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত করা জরুরি। ফলে দারিদ্র্যতার কশাঘাতে জর্জরিত হয়ে অবিভাবকরা আর তাদের শিশুদের কারখানায় পাঠাবে না বরং আগামী উজ্জ্বলতার সপ্ন দেখে শিশুদের স্কুলে পাঠাবে। শিশুশ্রম ও কিশোর গ্যাংয়ের ভয়াবহতা নিয়ে জনসচেতনতার লক্ষ্যে সভা, সেমিনার, লিফলেট বিতরণ, মাইকিং, খেলাধুলার আয়োজন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যেতে পারে।

ইসমাইল হোসেন রাহাত

আরও খবর

শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর ২০২২ , ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২২ রবিউস সানি ১৪৪৪

চিঠি : শিশুশ্রম আদর্শ জাতি গঠনে অন্তরায়

শিশুশ্রম আদর্শ জাতি গঠনে অন্তরায়

‘বন্যরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’। এর বিপরীত কার্যক্রম পরিচালিত হলে ফলাফল আশঙ্কাজনক। যখন শিশুরা বই নিয়ে স্কুলে যাবে, বল নিয়ে মাঠে খেলবে, কৈশোরের উচ্ছলতায় মাতিয়ে তুলবে জীবন ও জগত, তাদের হৃদয়ে প্রবাহিত হবে আনন্দের ফোয়ারা। তখন তারা শিশুশ্রমের মতো জাতীয় ব্যাধিতে আক্রান্ত। শিশুদের শিক্ষা ও বিনোদনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, এমন একটা বলয়ে পুঁজিপতিরা তাদের দাঁড় করাচ্ছে, যার ফলে অজান্তেই শিশুদের প্রস্ফুটিত ভ্রুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাদের স্বপ্ন, আশা ও প্রত্যাশা মাটিতে মিশে যায়।

শিশুশ্রম আন্তর্জাতিক, জাতীয় ও সামাজিক ব্যাধি, যা সর্বজনীন নিষিদ্ধ কর্ম হিসেবে বিবেচিত। শিশুশ্রমের মোটামুটি নিশ্চিত ভবিষ্যৎ হলো, রাষ্ট্র দক্ষজনশক্তি তৈরির সক্ষমতা হারানোর মাধ্যমে একটি পঙ্গু জনদুর্বলতার জন্ম দিবে, যা জাতির ভাগ্যে দুর্ভোগ এনে ছাড়বে। দক্ষ জনশক্তি যতটুকু কাজ করতে পারে, শিশু শ্রমিক ততটুকু কাজ করতে পারে না। অতিরিক্ত শ্রমে শিশু শ্রমিক মানবিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে, দিন দিন রূঢ় হয়ে উঠে। তার পরিশ্রম, তাকে অন্যান্য সৃষ্টিশীল কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে রাখে। মেধা হ্রাস পেতে থাকে, ফলে নেশাগ্রস্ত হয়ে উঠে এবং কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হয়ে অপরাধ জগতে পা রাখে। দেশে আইন থাকার পরেও শিশুশ্রম চলমান।

শিশুশ্রম রোধে দরিদ্র পরিবারগুলোর তালিকা করা উচিত। তাদের সন্তানদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি ও প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করার মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত করা জরুরি। ফলে দারিদ্র্যতার কশাঘাতে জর্জরিত হয়ে অবিভাবকরা আর তাদের শিশুদের কারখানায় পাঠাবে না বরং আগামী উজ্জ্বলতার সপ্ন দেখে শিশুদের স্কুলে পাঠাবে। শিশুশ্রম ও কিশোর গ্যাংয়ের ভয়াবহতা নিয়ে জনসচেতনতার লক্ষ্যে সভা, সেমিনার, লিফলেট বিতরণ, মাইকিং, খেলাধুলার আয়োজন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যেতে পারে।

ইসমাইল হোসেন রাহাত