রপ্তানি বাড়াতে পরিবহন ব্যয় কমানোর তাগিদ বিশ্বব্যাংকের

বাংলাদেশে পরিবহন খাতে ব্যয় কমালে দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ বাড়বে বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের রিজিওনাল কানেক্টিভিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস নলেজ গ্রুপের প্রধান লিড মার্থা বি লরেন্স। সম্প্রতি রাজধানীতে দুদিনব্যাপী কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। পরিবহন খাতে উন্নয়ন নীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়, বিশ্বব্যাংক গ্রুপ ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভলপমেন্ট বা বিল্ড যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।

সমাপনী দিনে দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে একটি উপস্থাপন করেন লিড মার্থা বি লরেন্স। অপর প্রবন্ধটি তুলে ধরেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।

বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, ‘পরিবহন খাতে ব্যয় পারফরম্যান্স ইনডেক্সে ১৬০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম। এই সূচকে উন্নতি করতে হলে যানজট কমিয়ে আনা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করতে হবে। এর জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। পাশাপাশি রেল ও নৌপথ ব্যবস্থার উন্নয়নে এখনই সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আধুনিক রেল ব্যবস্থা ব্যতীত পরিবহন ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব নয়। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্পগুলো বাংলাদেশকে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত হতে সহায়তা করবে, যা নতুন রপ্তানি বাজার সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।’ বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি মাল্টিমোডাল লজিস্টিকস হাবে পরিণত করতে রেলপথ মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে সব ধরনের সহায়তা দেবে বলে জানান মন্ত্রী।

সড়ক সচিব এ বি এম আমান উল্লা নুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিশ্বমানের মাল্টিমোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তবে জাতীয় সমন্বিত মাল্টিমোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থা নীতি ২০১৩ অনুসরণ করে এটি তৈরি করা যেতে পারে।’ বিদ্যমান নীতিমালায় সড়ক, রেল, আকাশ, সমুদ্র ও অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহনের মধ্যে সমন্বয় সাধনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

লজিস্টিকস ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কিং কমিটির কো-চেয়ার ও বিল্ডের সাবেক চেয়ারপারসন আবুল কাসেম খান বলেন, ‘সামুদ্রিক অঞ্চলকে বিবেচনায় নিয়ে বন্দরভিত্তিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ভারত সরকার ‘সাগরমালা পিপিডি মডেল’ তৈরি করেছে এবং প্রায় এক লাখ কোটি রুপি বিনিয়োগও করেছে।’ সড়কপথের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সমুদ্র ও অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহনের জন্য একটি জাতীয় কৌশলপত্র তৈরির প্রস্তাব করেন ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান। পরিবহন খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য প্রয়োজনীয় নীতি সংস্কার নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।

শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২ , ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২৩ রবিউস সানি ১৪৪৪

রপ্তানি বাড়াতে পরিবহন ব্যয় কমানোর তাগিদ বিশ্বব্যাংকের

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বাংলাদেশে পরিবহন খাতে ব্যয় কমালে দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ বাড়বে বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের রিজিওনাল কানেক্টিভিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস নলেজ গ্রুপের প্রধান লিড মার্থা বি লরেন্স। সম্প্রতি রাজধানীতে দুদিনব্যাপী কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। পরিবহন খাতে উন্নয়ন নীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়, বিশ্বব্যাংক গ্রুপ ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভলপমেন্ট বা বিল্ড যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।

সমাপনী দিনে দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে একটি উপস্থাপন করেন লিড মার্থা বি লরেন্স। অপর প্রবন্ধটি তুলে ধরেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।

বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, ‘পরিবহন খাতে ব্যয় পারফরম্যান্স ইনডেক্সে ১৬০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম। এই সূচকে উন্নতি করতে হলে যানজট কমিয়ে আনা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করতে হবে। এর জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। পাশাপাশি রেল ও নৌপথ ব্যবস্থার উন্নয়নে এখনই সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আধুনিক রেল ব্যবস্থা ব্যতীত পরিবহন ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব নয়। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্পগুলো বাংলাদেশকে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত হতে সহায়তা করবে, যা নতুন রপ্তানি বাজার সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।’ বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি মাল্টিমোডাল লজিস্টিকস হাবে পরিণত করতে রেলপথ মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে সব ধরনের সহায়তা দেবে বলে জানান মন্ত্রী।

সড়ক সচিব এ বি এম আমান উল্লা নুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিশ্বমানের মাল্টিমোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তবে জাতীয় সমন্বিত মাল্টিমোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থা নীতি ২০১৩ অনুসরণ করে এটি তৈরি করা যেতে পারে।’ বিদ্যমান নীতিমালায় সড়ক, রেল, আকাশ, সমুদ্র ও অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহনের মধ্যে সমন্বয় সাধনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

লজিস্টিকস ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কিং কমিটির কো-চেয়ার ও বিল্ডের সাবেক চেয়ারপারসন আবুল কাসেম খান বলেন, ‘সামুদ্রিক অঞ্চলকে বিবেচনায় নিয়ে বন্দরভিত্তিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ভারত সরকার ‘সাগরমালা পিপিডি মডেল’ তৈরি করেছে এবং প্রায় এক লাখ কোটি রুপি বিনিয়োগও করেছে।’ সড়কপথের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সমুদ্র ও অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহনের জন্য একটি জাতীয় কৌশলপত্র তৈরির প্রস্তাব করেন ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান। পরিবহন খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য প্রয়োজনীয় নীতি সংস্কার নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।