এক মাসে একবার পশু জবাইখানার বর্জ্য অপসারণ! জনস্বাস্থ্য হুমকিতে

মাদারীপুর শহরের পুরান বাজারের পশু জবাইখানা ও মাংস বাজারের বেহাল দশা থাকলেও তা দেখার কেউ নেই। এতে চরম দুর্ভোগ নিয়েই পৌর নাগরিকদের দৈনন্দিন কাজে যেতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বার বার পৌরসভায় বিষয়টি জানালেও তারা এখন পর্যন্ত এই সমস্যা নিরসনে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

সরেজমিন দেখা গেছে, মাদারীপুর পৌরসভার প্রধান বাণিজ্যিককেন্দ্র পুরান বাজারের পৌর মার্কেটের দক্ষিণ পাশে মাংস পট্টি ও পশু জবাইখানা অবস্থিত। চরম অস্বাস্থ্যকর ও দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশে এই মাংস বাজারটি বসে। মাংস বাজারের পাশেই পশু জবাইখানা। পশু জবাইয়ের পর যেসব বর্জ্য তৈরি হয় তার সবই পাশে স্তূপ করে রাখা হয়। এক মাস পরপর একবার করে এসব নোংরা দুর্গন্ধযুক্ত বর্জ্য অপসারণ করে পৌর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রতিদিনই পশু জবাই হওয়ার কারণে অনেক বেশি পরিমাণে বর্জ্য স্তূপ আকারে মাংসের বাজারের পাশে জমা হয়। পৌর নাগরিকরা অনেকটা বাধ্য হয়েই ময়লা আবর্জনার স্তূপের পাশেই মাংস ক্রয় করতে যান। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ে অনেক বৃদ্ধ ও শিশুরা।

এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা গ্রামের বাসিন্দা আকতার মুন্সী বলেন, আমি দুই কেজি গরুর মাংস কিনতে বাজারে আসছি। মাংস বাজারে মারাত্মক দুর্গন্ধ থাকায় বাধ্য না হলে খুব বেশি মাংস-বাজারে আসি না। কাঠপট্টি এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, তারা মাংসবাজারটা আর আধুনিক করল না। গন্ধে বাজারে ঢোকাই যায় না। পৌর মেয়রের উচিত দ্রুত এখানে একটি আধুনিক মানের মাংস বাজার তৈরি করা।

মাংস পট্টির কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাদারীপুর পৌর মেয়র আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিমের ছোট ভাই হওয়ায় তার স্থানীয় রাজনীতি পুরটাই নিয়ন্ত্রণ করেন বর্তমান পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ। তাই পৌরসভায় নানান দুর্ভোগ থাকলেও পৌরবাসী কোনো সমস্যার বিষয়েই মুখ খুলতে সাহস পায় না।

এ বিষয়ে মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, পুরান বাজারের মাংস পট্টিতে পৌর নাগরিকরা প্রতিদিনই যান। তাই ওখানকার পশু জবাইখানা ও মাংসের বাজারটাকে যাতে উন্নত করা হয়, পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে আমি সেই দাবি করছি। এটি আসলে ছোট বিষয় হলেও অনেক গুরুত্ব বহন করে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারীপুর পৌরসভার সচিব খন্দকার ইলিয়াস আহমেদ ফিরোজ বলেন, আমরা পৌরসভা থেকে খুব শীঘ্রই একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করতে যাচ্ছি। যেখানে পুরান বাজারের গুরুত্বপূর্ণ মাংস পট্টি ও পশু জবাইখানাকে সংস্কার করা হবে।

শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২ , ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২৩ রবিউস সানি ১৪৪৪

এক মাসে একবার পশু জবাইখানার বর্জ্য অপসারণ! জনস্বাস্থ্য হুমকিতে

জেলা বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর

image

মাদারীপুর : অব্যবস্থাপনা ও নোংরা পরিবেশের ভিতরেই চলছে পশু জবাই করার কাজ -সংবাদ

মাদারীপুর শহরের পুরান বাজারের পশু জবাইখানা ও মাংস বাজারের বেহাল দশা থাকলেও তা দেখার কেউ নেই। এতে চরম দুর্ভোগ নিয়েই পৌর নাগরিকদের দৈনন্দিন কাজে যেতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বার বার পৌরসভায় বিষয়টি জানালেও তারা এখন পর্যন্ত এই সমস্যা নিরসনে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

সরেজমিন দেখা গেছে, মাদারীপুর পৌরসভার প্রধান বাণিজ্যিককেন্দ্র পুরান বাজারের পৌর মার্কেটের দক্ষিণ পাশে মাংস পট্টি ও পশু জবাইখানা অবস্থিত। চরম অস্বাস্থ্যকর ও দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশে এই মাংস বাজারটি বসে। মাংস বাজারের পাশেই পশু জবাইখানা। পশু জবাইয়ের পর যেসব বর্জ্য তৈরি হয় তার সবই পাশে স্তূপ করে রাখা হয়। এক মাস পরপর একবার করে এসব নোংরা দুর্গন্ধযুক্ত বর্জ্য অপসারণ করে পৌর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রতিদিনই পশু জবাই হওয়ার কারণে অনেক বেশি পরিমাণে বর্জ্য স্তূপ আকারে মাংসের বাজারের পাশে জমা হয়। পৌর নাগরিকরা অনেকটা বাধ্য হয়েই ময়লা আবর্জনার স্তূপের পাশেই মাংস ক্রয় করতে যান। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ে অনেক বৃদ্ধ ও শিশুরা।

এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা গ্রামের বাসিন্দা আকতার মুন্সী বলেন, আমি দুই কেজি গরুর মাংস কিনতে বাজারে আসছি। মাংস বাজারে মারাত্মক দুর্গন্ধ থাকায় বাধ্য না হলে খুব বেশি মাংস-বাজারে আসি না। কাঠপট্টি এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, তারা মাংসবাজারটা আর আধুনিক করল না। গন্ধে বাজারে ঢোকাই যায় না। পৌর মেয়রের উচিত দ্রুত এখানে একটি আধুনিক মানের মাংস বাজার তৈরি করা।

মাংস পট্টির কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাদারীপুর পৌর মেয়র আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিমের ছোট ভাই হওয়ায় তার স্থানীয় রাজনীতি পুরটাই নিয়ন্ত্রণ করেন বর্তমান পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ। তাই পৌরসভায় নানান দুর্ভোগ থাকলেও পৌরবাসী কোনো সমস্যার বিষয়েই মুখ খুলতে সাহস পায় না।

এ বিষয়ে মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, পুরান বাজারের মাংস পট্টিতে পৌর নাগরিকরা প্রতিদিনই যান। তাই ওখানকার পশু জবাইখানা ও মাংসের বাজারটাকে যাতে উন্নত করা হয়, পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে আমি সেই দাবি করছি। এটি আসলে ছোট বিষয় হলেও অনেক গুরুত্ব বহন করে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারীপুর পৌরসভার সচিব খন্দকার ইলিয়াস আহমেদ ফিরোজ বলেন, আমরা পৌরসভা থেকে খুব শীঘ্রই একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করতে যাচ্ছি। যেখানে পুরান বাজারের গুরুত্বপূর্ণ মাংস পট্টি ও পশু জবাইখানাকে সংস্কার করা হবে।