আরও ৬ জনসহ মৃত্যু ২২৬
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মোট ২শ’ ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ডেঙ্গু ভাইরাসে ৫৫৯ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৩২০ জন ও ঢাকার বাইরে ২৩৯ জন ভর্তি হয়েছে। এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছে ২ হাজার ৭শ’ ৬৪ জন।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৫২ হাজার ১৬১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়েছে ৪৯ হাজার ১৭১ জন। অন্যরা এখন চিকিৎসাধীন আছেন।
হাসপাতালের তথ্য মতে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনও ভর্তি আছে ১৬৪ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৯১ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছে ৬১ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১শ’ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৭৪ জন ভর্তি আছে। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৮৮ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ভর্তি আছে ৫৭ জন। এই ভাবে ঢাকার ২০টি হপাসপাতালে এখনও ভর্তি আছে ৯৫৩ জন।
ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে ১৫০ জন, কক্সবাজারে ৩৩ জন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯৪ জন, গাজীপুরে ৬৮ জন, মানিকগঞ্জে ২৩ জন, লক্ষ্মীপুরে ১৪ জন, চাঁদপুরে ২৩ জন ভর্তি আছে। এই ভাবে সারাদেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে এখনও চিকিৎসাধীন আছে ২ হাজার ৭শ’ ৬৪ জন।
মাসিক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, চলতি মাসের গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মোট ভর্তি ১৪ হাজার ১৩৭ জন আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৮৫ জন। গেল অক্টোবর মাসে মোট আক্রান্ত ছিল ২১ হাজার ৯শ’ ৩২ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৮৬ জন। এখন প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
সিনিয়র কীটতত্ববিদ খলিলুর রহমান জানান, ডেঙ্গু ভাইরাসের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ডি-৪ টাইপ। এই টাইপে আক্রান্ত হলে মৃত্যু বাড়ে। এখনও এডিস মশার উপদ্রব আছে। তীব্র শীত পড়লে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমবে। মশা না মারলে বছর জুড়ে আক্রান্ত হতে থাকবে। হয়ত কিছুটা কমে ২শ’ থেকে ৩শ’ হতে পারে। মশা দমন না করলে আগামী বছর বৃষ্টি হলে আবার পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মহাখালী রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর এজেন্ডায় স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কোন কথা নেই। তারা নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, ইভিএমসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। অথচ প্রতিবছর দেশে মশার কামড়ে হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ও মারাও যাচ্ছেন। সেখানে নগরবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কথা বলা দরকার। নাগরিকদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চয়তা কেউ দিচ্ছে না। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে নিশ্চিত করবে। আর মাত্র ৮ বছর সময় আছে। এই সময় কত টুকু করবে তা দেখার বিষয়। গ্রামগঞ্জের মতো এখন নগরীতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিউনিটি ক্লিনিক কিংবা স্বাস্থ্য সেবা চালু করা দরকার।
বিশ্বের উন্নয়নশীল বিভিন্ন দেশে বছর জুড়ে মশা দমনে ওষুধ দেয়াসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়। আলাদা বিভাগও আছে। বাংলাদেশে এখনও তা চালুই হয়নি। বছর জুড়ে মশা দমনে আলাদা বিভাগ, জনবল ও অর্থ বরাদ্দ থাকলে এর সুফল দেশবাসী পেত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২ , ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২৪ রবিউস সানি ১৪৪৪
আরও ৬ জনসহ মৃত্যু ২২৬
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মোট ২শ’ ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ডেঙ্গু ভাইরাসে ৫৫৯ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৩২০ জন ও ঢাকার বাইরে ২৩৯ জন ভর্তি হয়েছে। এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছে ২ হাজার ৭শ’ ৬৪ জন।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৫২ হাজার ১৬১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়েছে ৪৯ হাজার ১৭১ জন। অন্যরা এখন চিকিৎসাধীন আছেন।
হাসপাতালের তথ্য মতে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনও ভর্তি আছে ১৬৪ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৯১ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছে ৬১ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১শ’ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৭৪ জন ভর্তি আছে। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৮৮ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ভর্তি আছে ৫৭ জন। এই ভাবে ঢাকার ২০টি হপাসপাতালে এখনও ভর্তি আছে ৯৫৩ জন।
ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে ১৫০ জন, কক্সবাজারে ৩৩ জন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯৪ জন, গাজীপুরে ৬৮ জন, মানিকগঞ্জে ২৩ জন, লক্ষ্মীপুরে ১৪ জন, চাঁদপুরে ২৩ জন ভর্তি আছে। এই ভাবে সারাদেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে এখনও চিকিৎসাধীন আছে ২ হাজার ৭শ’ ৬৪ জন।
মাসিক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, চলতি মাসের গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মোট ভর্তি ১৪ হাজার ১৩৭ জন আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৮৫ জন। গেল অক্টোবর মাসে মোট আক্রান্ত ছিল ২১ হাজার ৯শ’ ৩২ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৮৬ জন। এখন প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
সিনিয়র কীটতত্ববিদ খলিলুর রহমান জানান, ডেঙ্গু ভাইরাসের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ডি-৪ টাইপ। এই টাইপে আক্রান্ত হলে মৃত্যু বাড়ে। এখনও এডিস মশার উপদ্রব আছে। তীব্র শীত পড়লে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমবে। মশা না মারলে বছর জুড়ে আক্রান্ত হতে থাকবে। হয়ত কিছুটা কমে ২শ’ থেকে ৩শ’ হতে পারে। মশা দমন না করলে আগামী বছর বৃষ্টি হলে আবার পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মহাখালী রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর এজেন্ডায় স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কোন কথা নেই। তারা নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, ইভিএমসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। অথচ প্রতিবছর দেশে মশার কামড়ে হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ও মারাও যাচ্ছেন। সেখানে নগরবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কথা বলা দরকার। নাগরিকদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চয়তা কেউ দিচ্ছে না। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে নিশ্চিত করবে। আর মাত্র ৮ বছর সময় আছে। এই সময় কত টুকু করবে তা দেখার বিষয়। গ্রামগঞ্জের মতো এখন নগরীতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিউনিটি ক্লিনিক কিংবা স্বাস্থ্য সেবা চালু করা দরকার।
বিশ্বের উন্নয়নশীল বিভিন্ন দেশে বছর জুড়ে মশা দমনে ওষুধ দেয়াসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়। আলাদা বিভাগও আছে। বাংলাদেশে এখনও তা চালুই হয়নি। বছর জুড়ে মশা দমনে আলাদা বিভাগ, জনবল ও অর্থ বরাদ্দ থাকলে এর সুফল দেশবাসী পেত বলে তিনি মন্তব্য করেন।