৫১ বছরেও নির্মিত হয়নি গারুদহ নদীর সেতু সাঁকোই ভরসা

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার ধুবিল ইউনিয়নের ধুবিলমেহমানশাহী গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত গারুদহ নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। এই সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হয়ে থাকেন ধুবিল মেহমানশাহীসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও ধুবিল মেহমানশাহীসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষের নদী পারাপারের জন্য আজও কোনো ব্রিজ নির্মাণ করা হয়নি। ফলে বাঁশের সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সলঙ্গা থানা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ধুবিল ইউনিয়নের ধুবিল মেহমানশাহী নামকস্থানে একটি ব্রিজের অভাবে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছে। বিশেষ করে নদীর পূর্বপাড়ে উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র অবস্থিত হওয়ায় স্কুলগামী নদীর পশ্চিম পাড়ের শিক্ষার্থীসহ পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা নারী-পুরুষকে নানা দুর্ভোগ আর দুর্গতির মধ্যদিয়ে বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিতে হচ্ছে। অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের সরাসরি যোগাযোগের জন্য একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। বর্ষাকালে নৌকায় নদী পারাপার অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এখন সারাবছরই এলাকাবাসীর উদ্যোগে তৈরি বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় যখন বন্যার পানি চারিদিকে থৈ- থৈ করে তখন পারিবারিক বিভিন্ন প্রয়োজনে তাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় ভাড়ায় চালিত নৌকা। আর শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই নদীর পানি কমতে থাকায় পানি-কাদায় একাকার হলেও হেঁটেই ওই সকল গ্রামের শিক্ষার্থীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের প্রয়োজনের তাগিদে স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রসহ জেলা ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করে। এ ব্যাপারে ধুবিল মেহমানশাহী গ্রামের মো. হায়দার বিন জামাল ও মেজবাউর রহমান খোকন জানান, আমরা যুগ যুগ ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো ও বর্ষার মৌসুমে নৌকা দিয়ে নদী পারাপার হতাম কিন্তু বর্ষার সময় নৌকা পারাপারে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সারাবছরই এখন বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার হয়ে থাকি। তবে ধুবিলমেহমানশাহী গ্রামটি বিশাল বড় হওয়ায় ধুবিল মেহমানশাহীসহ পার্শ্ববর্তী নদীর উভয় পাড়ের গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে নদীর ওপর দু’টি স্থানে বাঁশের সাঁকো স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি সাঁকো গ্রামের দক্ষিণ প্রান্তে উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও কবরস্থান সংযুক্ত স্থানে আরেকটি গ্রামের মধ্যস্থল উত্তর প্রান্তে অবস্থিত। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দারা জাতীয় সংসদ সদস্য ডা.আব্দুল আজিজসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এদিকে জনগুরুত্বপূর্ণ এই স্থানে জরুরি ভিত্তিতে যদি একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয় তাহলে এ এলাকার স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সহজে সেবা নিতে হাসপাতালে ও মৃত্যুদেহ দাফনে কবরস্থানে যেতে পারবে তেমনি তারা তাদের দীর্ঘদিনের সীমাহীন কষ্ট লাঘব করতে পারবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনস্থ রায়গঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী জানান, জনগুরত্বপূর্ণ ধুবিল মেহমানশাহী নামক স্থানে নদী পারাপারের জন্য একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য। এ দাবির সফল বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০২২ , ০৭ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৪

৫১ বছরেও নির্মিত হয়নি গারুদহ নদীর সেতু সাঁকোই ভরসা

আবদুল কুদ্দুছ, সিরাজগঞ্জ

image

সিরাজগঞ্জ : নড়বড়ে সাঁকো। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয় গ্রামবাসী -সংবাদ

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার ধুবিল ইউনিয়নের ধুবিলমেহমানশাহী গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত গারুদহ নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। এই সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হয়ে থাকেন ধুবিল মেহমানশাহীসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও ধুবিল মেহমানশাহীসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষের নদী পারাপারের জন্য আজও কোনো ব্রিজ নির্মাণ করা হয়নি। ফলে বাঁশের সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সলঙ্গা থানা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ধুবিল ইউনিয়নের ধুবিল মেহমানশাহী নামকস্থানে একটি ব্রিজের অভাবে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছে। বিশেষ করে নদীর পূর্বপাড়ে উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র অবস্থিত হওয়ায় স্কুলগামী নদীর পশ্চিম পাড়ের শিক্ষার্থীসহ পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা নারী-পুরুষকে নানা দুর্ভোগ আর দুর্গতির মধ্যদিয়ে বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিতে হচ্ছে। অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের সরাসরি যোগাযোগের জন্য একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। বর্ষাকালে নৌকায় নদী পারাপার অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এখন সারাবছরই এলাকাবাসীর উদ্যোগে তৈরি বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় যখন বন্যার পানি চারিদিকে থৈ- থৈ করে তখন পারিবারিক বিভিন্ন প্রয়োজনে তাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় ভাড়ায় চালিত নৌকা। আর শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই নদীর পানি কমতে থাকায় পানি-কাদায় একাকার হলেও হেঁটেই ওই সকল গ্রামের শিক্ষার্থীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের প্রয়োজনের তাগিদে স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রসহ জেলা ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করে। এ ব্যাপারে ধুবিল মেহমানশাহী গ্রামের মো. হায়দার বিন জামাল ও মেজবাউর রহমান খোকন জানান, আমরা যুগ যুগ ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো ও বর্ষার মৌসুমে নৌকা দিয়ে নদী পারাপার হতাম কিন্তু বর্ষার সময় নৌকা পারাপারে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সারাবছরই এখন বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার হয়ে থাকি। তবে ধুবিলমেহমানশাহী গ্রামটি বিশাল বড় হওয়ায় ধুবিল মেহমানশাহীসহ পার্শ্ববর্তী নদীর উভয় পাড়ের গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে নদীর ওপর দু’টি স্থানে বাঁশের সাঁকো স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি সাঁকো গ্রামের দক্ষিণ প্রান্তে উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও কবরস্থান সংযুক্ত স্থানে আরেকটি গ্রামের মধ্যস্থল উত্তর প্রান্তে অবস্থিত। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দারা জাতীয় সংসদ সদস্য ডা.আব্দুল আজিজসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এদিকে জনগুরুত্বপূর্ণ এই স্থানে জরুরি ভিত্তিতে যদি একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয় তাহলে এ এলাকার স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সহজে সেবা নিতে হাসপাতালে ও মৃত্যুদেহ দাফনে কবরস্থানে যেতে পারবে তেমনি তারা তাদের দীর্ঘদিনের সীমাহীন কষ্ট লাঘব করতে পারবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনস্থ রায়গঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী জানান, জনগুরত্বপূর্ণ ধুবিল মেহমানশাহী নামক স্থানে নদী পারাপারের জন্য একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য। এ দাবির সফল বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।