উন্নয়নশীল দেশে (এলডিসি) উত্তরণের পর বিদ্যমান বাজার সুবিধা পাবে না বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক। উত্তরণ পরবর্তী সময়ে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে দেশে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সংযোজন (ভ্যালু অ্যাডিশন) বৃদ্ধি করতে হবে বলে মনে করছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
গত মঙ্গলবার সকালে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে সংগঠনের সভাপতি জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী ক্যানডিথ মাশেগো দেলামিনির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।
বৈঠকে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় খাদ্য, জ্বালানিসহ নিত্য পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। একক বাজার নির্ভরতা কমিয়ে বাজার বহুমুখীকরণের উদ্যোগ নিতে হবে। এক্ষেত্রে কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’ পাশাপাশি বস্ত্র শিল্পেও দুদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগের কথা তুলে ধরেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
তিনি বলেন ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর বিদ্যমান বাজার সুবিধা পাবে না বাংলাদেশের তৈরি পোশাক। গ্র্যাজুয়েশন পরবর্তী সময়ে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে দেশে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সংযোজন (ভ্যালু অ্যাডিশন) বৃদ্ধি করতে হবে। এ জন্য দেশেই বস্ত্র শিল্পের কাঁচামালের উৎপাদন বাড়াতে হবে।’
সভাপতি আরও বলেন, ‘কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্যোক্তাদের বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’
এছাড়াও বৈঠকে ঔষধ, চামড়া, পাট, আইসিটিসহ বেশকিছু সম্ভবনাময় খাতের কথা তুলে ধরেন জসিম উদ্দিন। দেশে দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি, বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদেরও বিদেশে বিনিয়োগের সক্ষমতা এবং আগ্রহের কথা জানান তিনি। বৈঠকে বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করেন দক্ষিণ আফ্রিকার উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী ক্যানডিথ মাশেগো দেলামিনি।
তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রচুর পরিমানে কৃষি জমি রয়েছে। সেখানে উৎপাদিত সবজি এবং ভূট্টা বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। এসব পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং বাজারজাতকরণের সুযোগ রয়েছে উভয় দেশে।’
পাশাপাশি ফিশারিজ, ব্লু-ইকোনমিসহ জ্বালানি খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি ও পারস্পরিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন দক্ষিণ আফ্রিকার উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী। এ সময় বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে উভয় দেশের উদ্যোক্তা এবং বাণিজ্য সংগঠনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তাব দেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এফবিসিসিআই জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহসভাপতি আমিন হেলালী, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, অ্যাম্বাসেডর এট লার্জ (এশিয়া এন্ড ব্রিকস) প্রফেসর অনিল সুকলাল, মিনিস্টার প্লেনিপটেনশিয়ারি সেড্রিক চার্লস ক্রাউলি, নিউ দিল্লীতে সাউথ আফ্রিকান হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সেলর শ্যাড্রেক রামেতসিসহ আফ্রিকা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২২ , ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৪
অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক
উন্নয়নশীল দেশে (এলডিসি) উত্তরণের পর বিদ্যমান বাজার সুবিধা পাবে না বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক। উত্তরণ পরবর্তী সময়ে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে দেশে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সংযোজন (ভ্যালু অ্যাডিশন) বৃদ্ধি করতে হবে বলে মনে করছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
গত মঙ্গলবার সকালে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে সংগঠনের সভাপতি জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী ক্যানডিথ মাশেগো দেলামিনির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।
বৈঠকে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় খাদ্য, জ্বালানিসহ নিত্য পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। একক বাজার নির্ভরতা কমিয়ে বাজার বহুমুখীকরণের উদ্যোগ নিতে হবে। এক্ষেত্রে কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’ পাশাপাশি বস্ত্র শিল্পেও দুদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগের কথা তুলে ধরেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
তিনি বলেন ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর বিদ্যমান বাজার সুবিধা পাবে না বাংলাদেশের তৈরি পোশাক। গ্র্যাজুয়েশন পরবর্তী সময়ে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে দেশে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সংযোজন (ভ্যালু অ্যাডিশন) বৃদ্ধি করতে হবে। এ জন্য দেশেই বস্ত্র শিল্পের কাঁচামালের উৎপাদন বাড়াতে হবে।’
সভাপতি আরও বলেন, ‘কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্যোক্তাদের বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’
এছাড়াও বৈঠকে ঔষধ, চামড়া, পাট, আইসিটিসহ বেশকিছু সম্ভবনাময় খাতের কথা তুলে ধরেন জসিম উদ্দিন। দেশে দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি, বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদেরও বিদেশে বিনিয়োগের সক্ষমতা এবং আগ্রহের কথা জানান তিনি। বৈঠকে বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করেন দক্ষিণ আফ্রিকার উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী ক্যানডিথ মাশেগো দেলামিনি।
তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রচুর পরিমানে কৃষি জমি রয়েছে। সেখানে উৎপাদিত সবজি এবং ভূট্টা বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। এসব পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং বাজারজাতকরণের সুযোগ রয়েছে উভয় দেশে।’
পাশাপাশি ফিশারিজ, ব্লু-ইকোনমিসহ জ্বালানি খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি ও পারস্পরিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন দক্ষিণ আফ্রিকার উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী। এ সময় বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে উভয় দেশের উদ্যোক্তা এবং বাণিজ্য সংগঠনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তাব দেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এফবিসিসিআই জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহসভাপতি আমিন হেলালী, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, অ্যাম্বাসেডর এট লার্জ (এশিয়া এন্ড ব্রিকস) প্রফেসর অনিল সুকলাল, মিনিস্টার প্লেনিপটেনশিয়ারি সেড্রিক চার্লস ক্রাউলি, নিউ দিল্লীতে সাউথ আফ্রিকান হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সেলর শ্যাড্রেক রামেতসিসহ আফ্রিকা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।