গ্রামীণ টেলিকমের এমডিকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ

শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ অনুসন্ধানে গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল ইসলামসহ তিন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের মধ্যে এমডি নাজমুল ইসলামকে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা অন্য দুই কর্মকর্তা হলেন আশরাফুল হাসান ও পারভীন মাহমুদ।

গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে অনুসন্ধান টিমের প্রধান ও উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এর আগে অভিযোগ অনুসন্ধানে গত ২৫ আগস্ট প্রথম দফায় নাজমুল হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল দুদক। ওই জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নাজমুল ইসলাম বলেন, এখানে কোন আত্মসাৎ হয়নি। শ্রমিক ইউনিয়নের হিসাবে টাকাটা গিয়েছে। ৪৩৭ কোটি টাকা তারা দাবি করেছিল, সে টাকা তাদের দেয়া হয়েছে। এসব ব্যাখ্যা দুদককে দেয়া হয়েছে। আমরা তাদের চাহিদা দেয়া কাগজপত্র দিয়েছি, তারা তা দেখুক।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা এক ধরনের ভুল বোঝাবুঝি বলতে পারেন। এটা তারা (দুদক) খতিয়ে দেখবে। শ্রমিক ইউনিয়ন যখন শ্রম মন্ত্রণালয়ে অভিযোগগুলো করেছিল, তখন থেকেই ইউনিয়নের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তারা কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে অভিযোগ করেছিল। আমরা সেখানে কাগজপত্র দেই। গতকাল দুদককেও কাগজপত্র দিয়েছি, তারা মিলিয়ে দেখবেন। আমরা মনে করি আমাদের বিষয়গুলো ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনুসের কোন দায়ভার আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমুল ইসলাম বলেন, আমি ১৯৯৭ সাল থেকে এমডি হিসেবে কর্মরত আছি। ড. মুহাম্মদ ইউনুস প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। স্যারের সঙ্গে আমার মিটিংয়ে দেখা হয়। এটা একটি নন প্রফিটেবল প্রতিষ্ঠান। আইনগতভাবে যতটুকু দায়ভার পড়ে, ততটুকু। এছাড়া ওইদিন আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী ও আইনজীবী জাফরুল হাসান শরীফকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গত ২২ আগস্ট তাদের তলব করে চিঠি দেয় দুদক। তার আগে গত ১৬ আগস্ট অভিযোগ সংক্রান্ত ১১ ধরনের নথিপত্র দুদকে আসে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি অনুসন্ধানে নথিপত্র চাওয়া হয় গত ১ আগস্ট। অভিযোগ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের টিম গঠন করে দুদক। টিমে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও নূরে আলম সিদ্দিকী। গত ২৮ জুলাই গ্রামীণ টেলিকম পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করার কথা জানান সংস্থাটির সচিব মো. মাহবুব হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে দুদক সচিব বলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠিয়েছেন। ওই প্রতিবেদন কমিশন পর্যালোচনা করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অভিযোগগুলো হলো অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৫ শতাংশ অর্থ লোপাট, শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধকালে অবৈধভাবে অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফির নামে ৬ শতাংশ অর্থ কর্তন, শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দ করা সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ ও কোম্পানি থেকে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ।

আরও খবর
আমাদের ছেলেমেয়েরা একদিন বিশ^কাপ খেলবে, প্রধানমন্ত্রীর আশাবাদ
সাংবাদিক খন্দকার মুনীরুজ্জামানের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ
বাংলাদেশে অবস্থান জানান দিতে আদালতপাড়ায় জঙ্গিদের পরিকল্পিত হামলা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সচিবের বিরুদ্ধে ছোট ভাইয়ের বাড়ি দখলের অভিযোগ
রংপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকার প্রার্থী ডালিয়া
রংপুরে সংঘর্ষে জেলা বিএনপির তিনশ’ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
উপনির্বাচনে অনিয়ম গাইবান্ধায় নতুন করে ভোট হবে কি না, এখনই বলবেন না সিইসি
চকবাজারে মনসুর হত্যা নাতি ও নাতনির পরিকল্পনায়, গ্রেপ্তার ৫
আজ থেকে আগামী তিন দিন এয়ারপোর্ট রোড এড়িয়ে চলার নির্দেশনা
কুমিল্লায় বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে ফের আলোচনায় বহিষ্কৃত সাক্কু-নিজাম
ব্রহ্মণবাড়িয়ায় ব্রাজিল সমর্থক গোষ্ঠীর মোটরসাইকেল র‌্যালি

বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২২ , ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৪

তিন হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিং

গ্রামীণ টেলিকমের এমডিকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ অনুসন্ধানে গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল ইসলামসহ তিন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের মধ্যে এমডি নাজমুল ইসলামকে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা অন্য দুই কর্মকর্তা হলেন আশরাফুল হাসান ও পারভীন মাহমুদ।

গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে অনুসন্ধান টিমের প্রধান ও উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এর আগে অভিযোগ অনুসন্ধানে গত ২৫ আগস্ট প্রথম দফায় নাজমুল হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল দুদক। ওই জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নাজমুল ইসলাম বলেন, এখানে কোন আত্মসাৎ হয়নি। শ্রমিক ইউনিয়নের হিসাবে টাকাটা গিয়েছে। ৪৩৭ কোটি টাকা তারা দাবি করেছিল, সে টাকা তাদের দেয়া হয়েছে। এসব ব্যাখ্যা দুদককে দেয়া হয়েছে। আমরা তাদের চাহিদা দেয়া কাগজপত্র দিয়েছি, তারা তা দেখুক।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা এক ধরনের ভুল বোঝাবুঝি বলতে পারেন। এটা তারা (দুদক) খতিয়ে দেখবে। শ্রমিক ইউনিয়ন যখন শ্রম মন্ত্রণালয়ে অভিযোগগুলো করেছিল, তখন থেকেই ইউনিয়নের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তারা কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে অভিযোগ করেছিল। আমরা সেখানে কাগজপত্র দেই। গতকাল দুদককেও কাগজপত্র দিয়েছি, তারা মিলিয়ে দেখবেন। আমরা মনে করি আমাদের বিষয়গুলো ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনুসের কোন দায়ভার আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমুল ইসলাম বলেন, আমি ১৯৯৭ সাল থেকে এমডি হিসেবে কর্মরত আছি। ড. মুহাম্মদ ইউনুস প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। স্যারের সঙ্গে আমার মিটিংয়ে দেখা হয়। এটা একটি নন প্রফিটেবল প্রতিষ্ঠান। আইনগতভাবে যতটুকু দায়ভার পড়ে, ততটুকু। এছাড়া ওইদিন আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী ও আইনজীবী জাফরুল হাসান শরীফকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গত ২২ আগস্ট তাদের তলব করে চিঠি দেয় দুদক। তার আগে গত ১৬ আগস্ট অভিযোগ সংক্রান্ত ১১ ধরনের নথিপত্র দুদকে আসে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি অনুসন্ধানে নথিপত্র চাওয়া হয় গত ১ আগস্ট। অভিযোগ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের টিম গঠন করে দুদক। টিমে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও নূরে আলম সিদ্দিকী। গত ২৮ জুলাই গ্রামীণ টেলিকম পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করার কথা জানান সংস্থাটির সচিব মো. মাহবুব হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে দুদক সচিব বলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠিয়েছেন। ওই প্রতিবেদন কমিশন পর্যালোচনা করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অভিযোগগুলো হলো অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৫ শতাংশ অর্থ লোপাট, শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধকালে অবৈধভাবে অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফির নামে ৬ শতাংশ অর্থ কর্তন, শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দ করা সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ ও কোম্পানি থেকে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ।