সচিবের বিরুদ্ধে ছোট ভাইয়ের বাড়ি দখলের অভিযোগ

একজন সচিবের সহোদর অভিযোগ করেছেন প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এলাকাছাড়া করতে তার বিরুদ্ধে মামলা এমনকি তিনি এই অভিযোগ করেছেন যে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে।

গতকাল বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হামিদা বেগমের আপন ছোট ভাই শফিউল আজম। সংবাদ সম্মেলনে সচিব হামিদা বেগমের প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার ও হামলা-মামলা থেকে নিষ্কৃতি, তার দখল করে নেয়া পৈতৃক বাড়ি উদ্ধার এবং স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে নিরাপদে নরসিংদীর নিজ গ্রামে বসবাসের অধিকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুতি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে শফিউল আজম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি আজ জীবনের এক ক্রান্তিলগ্নে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনাদের মাধ্যমে সুবিচার পেতে জানাতে এসেছি আমার আপন বোন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হামিদা বেগম কর্তৃক নরসিংদীর মধাবদী থানার খোর্দ্দনওপাড়া গ্রামের পৈতৃক বাড়ি-ভিটা থেকে আমাকে স্ত্রী ও শিশু সন্তানসহ উচ্ছেদ করেও ক্ষান্ত হননি। তার পালিত স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের অত্যাচার, জুলুম, নির্যাতন থেকে প্রাণে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে গতকাল রাতে সচিব হামিদা বেগমকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার বড় বোন পূর্ণসচিব পদমর্যাদায় পদোন্নতি পাওয়ার পর থেকে আমার পরিবারের ওপর অত্যাচারের স্টিম রোলার চালাচ্ছেন। হামিদা বেগম জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় বিগত ২০১২ সালে রাতের বেলায় আমাকে প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক আমার স্ত্রী ও শিশু সন্তানসহ সবাইকে নিজে উপস্থিত থেকে তার বাহিনী দ্বারা জোরপূর্বক ঘর থেকে বের করে দেন। এলাকাবাসী সবাই এ কর্মকা-কে ধিক্কার দিলেও কেউ এর প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি।’

তিনি বলেন, ‘সুবিচার পাওয়ার আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, কারো সহযোগিতা পাইনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গিয়ে উচ্ছেদ মামলা তো দূরের কথা, একটি জিডিও করতে পারিনি। উঠতে পারিনি আমার পৈতৃক বাড়িতে। সচিব হামিদা বেগম আমার পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত মাধবদী বাজারের ২১ বছরের ঘর ভাড়া ও জমির ন্যায্য হিস্যা থেকেও আমাকে বঞ্চিত করেছেন।’

শফিউল আজম বলেন, আমি বেশ কিছুদিন খোলা আকাশের নিচে বসবাসের পর আমার পৈতৃক ও ক্রয়কৃত একটি ভিটা যা প্রায় ১৫-২০ ফুট গভীর ছিল, সেখানে ধারকর্য করে অনেক টাকা ব্যয়ে বালুমাটি ভরাট করে চারদিকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে একটি বাড়ি নির্মাণ করে আমার শিক্ষিকা স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছিলাম। এখানেও আমার বোন হামিদা বেগম তার প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছেন। আমার স্ত্রীকে দূরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বদলির জন্য শিক্ষা অফিসারদের চাপ সৃষ্টি করছেন। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, সচিব হামিদা বেগম তার নীল নকশা অনুযায়ী আমার পুরো পরিবারকে নরসিংদী ছাড়া করতে তার প্রশাসনিক তৎপরতা চালাচ্ছেন।

সচিবের এই তৎপরতা বন্ধ, পৈতৃক ভিটে-মাটি ফেরত পাওয়া এবং বর্তমান বাড়িতে পরিবার নিয়ে একজন নাগরিক হিসেবে নির্বিঘেœ বসবাস করতে পারার আকুতি জানিয়ে শফিউল আজম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়কমন্ত্রী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের শীর্ষ মহলে গত ১৬ নভেম্ব একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

আরও খবর
আমাদের ছেলেমেয়েরা একদিন বিশ^কাপ খেলবে, প্রধানমন্ত্রীর আশাবাদ
গ্রামীণ টেলিকমের এমডিকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ
সাংবাদিক খন্দকার মুনীরুজ্জামানের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ
বাংলাদেশে অবস্থান জানান দিতে আদালতপাড়ায় জঙ্গিদের পরিকল্পিত হামলা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রংপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকার প্রার্থী ডালিয়া
রংপুরে সংঘর্ষে জেলা বিএনপির তিনশ’ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
উপনির্বাচনে অনিয়ম গাইবান্ধায় নতুন করে ভোট হবে কি না, এখনই বলবেন না সিইসি
চকবাজারে মনসুর হত্যা নাতি ও নাতনির পরিকল্পনায়, গ্রেপ্তার ৫
আজ থেকে আগামী তিন দিন এয়ারপোর্ট রোড এড়িয়ে চলার নির্দেশনা
কুমিল্লায় বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে ফের আলোচনায় বহিষ্কৃত সাক্কু-নিজাম
ব্রহ্মণবাড়িয়ায় ব্রাজিল সমর্থক গোষ্ঠীর মোটরসাইকেল র‌্যালি

বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২২ , ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৪

সচিবের বিরুদ্ধে ছোট ভাইয়ের বাড়ি দখলের অভিযোগ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

একজন সচিবের সহোদর অভিযোগ করেছেন প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এলাকাছাড়া করতে তার বিরুদ্ধে মামলা এমনকি তিনি এই অভিযোগ করেছেন যে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে।

গতকাল বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হামিদা বেগমের আপন ছোট ভাই শফিউল আজম। সংবাদ সম্মেলনে সচিব হামিদা বেগমের প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার ও হামলা-মামলা থেকে নিষ্কৃতি, তার দখল করে নেয়া পৈতৃক বাড়ি উদ্ধার এবং স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে নিরাপদে নরসিংদীর নিজ গ্রামে বসবাসের অধিকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুতি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে শফিউল আজম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি আজ জীবনের এক ক্রান্তিলগ্নে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনাদের মাধ্যমে সুবিচার পেতে জানাতে এসেছি আমার আপন বোন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হামিদা বেগম কর্তৃক নরসিংদীর মধাবদী থানার খোর্দ্দনওপাড়া গ্রামের পৈতৃক বাড়ি-ভিটা থেকে আমাকে স্ত্রী ও শিশু সন্তানসহ উচ্ছেদ করেও ক্ষান্ত হননি। তার পালিত স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের অত্যাচার, জুলুম, নির্যাতন থেকে প্রাণে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে গতকাল রাতে সচিব হামিদা বেগমকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার বড় বোন পূর্ণসচিব পদমর্যাদায় পদোন্নতি পাওয়ার পর থেকে আমার পরিবারের ওপর অত্যাচারের স্টিম রোলার চালাচ্ছেন। হামিদা বেগম জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় বিগত ২০১২ সালে রাতের বেলায় আমাকে প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক আমার স্ত্রী ও শিশু সন্তানসহ সবাইকে নিজে উপস্থিত থেকে তার বাহিনী দ্বারা জোরপূর্বক ঘর থেকে বের করে দেন। এলাকাবাসী সবাই এ কর্মকা-কে ধিক্কার দিলেও কেউ এর প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি।’

তিনি বলেন, ‘সুবিচার পাওয়ার আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, কারো সহযোগিতা পাইনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গিয়ে উচ্ছেদ মামলা তো দূরের কথা, একটি জিডিও করতে পারিনি। উঠতে পারিনি আমার পৈতৃক বাড়িতে। সচিব হামিদা বেগম আমার পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত মাধবদী বাজারের ২১ বছরের ঘর ভাড়া ও জমির ন্যায্য হিস্যা থেকেও আমাকে বঞ্চিত করেছেন।’

শফিউল আজম বলেন, আমি বেশ কিছুদিন খোলা আকাশের নিচে বসবাসের পর আমার পৈতৃক ও ক্রয়কৃত একটি ভিটা যা প্রায় ১৫-২০ ফুট গভীর ছিল, সেখানে ধারকর্য করে অনেক টাকা ব্যয়ে বালুমাটি ভরাট করে চারদিকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে একটি বাড়ি নির্মাণ করে আমার শিক্ষিকা স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছিলাম। এখানেও আমার বোন হামিদা বেগম তার প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছেন। আমার স্ত্রীকে দূরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বদলির জন্য শিক্ষা অফিসারদের চাপ সৃষ্টি করছেন। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, সচিব হামিদা বেগম তার নীল নকশা অনুযায়ী আমার পুরো পরিবারকে নরসিংদী ছাড়া করতে তার প্রশাসনিক তৎপরতা চালাচ্ছেন।

সচিবের এই তৎপরতা বন্ধ, পৈতৃক ভিটে-মাটি ফেরত পাওয়া এবং বর্তমান বাড়িতে পরিবার নিয়ে একজন নাগরিক হিসেবে নির্বিঘেœ বসবাস করতে পারার আকুতি জানিয়ে শফিউল আজম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়কমন্ত্রী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের শীর্ষ মহলে গত ১৬ নভেম্ব একটি লিখিত অভিযোগ দেন।