২১৫ টন চাল আত্মসাৎ খাদ্য কর্মকর্তা লাপাত্তা

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা খাদ্য গুদামে ২১৫ টন চাল ঘাটতির অভিযোগে গুদামটি সিলগালা করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার বিকালে ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহবুবুর রহমান, ফরিদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তারিকুজ্জামান, মাদারীপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইসমাইল হোসেন ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল আলম উপস্থিত থেকে গুদামের নথি,খাতা-পত্র যাচাইপূর্বক সিলগালা করেন।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা খাদ্য গুদামের ওসিএলএসডি সানোয়ার হোসেন প্রায় সোয়া ২০০ টন চাল আত্মসাৎ করার পর গত ৪ মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিডি কার্ডের চাল ও ডিলারদের ১৫ টাকা কেজি. দরের কার্ডের চাল সরবরাহ বন্ধ করে দেন। এতে উপজেলার হতদরিদ্ররা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতনরা গুদামের নথিপত্র যাচাই করতে গিয়ে সরকারি চাল আত্মসাতের ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।

পরের দিন বিকালে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তারিকুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আসলে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসার মতো ঘটনা। গুদামের নথিপত্র যাচাই করতে গিয়ে আমরা অনেক গরমিল পাই। যাচাই বাছাইয়ান্তের একপর্যায়ে বড় অঙ্কের চাল আত্মসাতের ঘটনা বেরিয়ে আসে। গুদামের চাল আত্মসাতের ব্যাপারে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্দ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে না পাওয়া পর্যন্ত স্পষ্ট কিছু বলা যাবে না। একইদিন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল আলম বলেন, আপাতত গুদামটি সিলগালা করে রাখা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনার পর উপজেলা ওসিএলএসডি গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে। গত কয়েকদিন ধরে কয়েক দফায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে তার সঙ্গে বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করার পরও বৃহস্পতিবার বিকেলে শুধু একবার ফোন ধরে বলেন, ভাই আমি অসুস্থ, পরে কথা হবে বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। একই দিন উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, ওই ওসিএলএসডি গত ৪ মাস ধরে আমার ইউনিয়নের প্রায় ৮০ টন চাল সরবরাহ করেনি। একইভাবে উপজেলার চার ইউনিয়নের প্রায় ২০০ টন ভিজিডি কার্ডের চাল বিতরন না করে সে আত্মসাৎ করে রেখেছে। আমি বুধবার রাতে ওসিএলএসডির নামে থানায় অভিযোগ করেছি। ১৫ টাকা কার্ডের এক ডিলার জানান, উপজেলার সাতজন ডিলারের মধ্যে নির্দিষ্ট এক ডিলারের সঙ্গে আঁতাত করে উক্ত ওসিএলএসডি প্রায় ৩-৪ কোটি টাকার চাল আত্মসাৎ করে লুকিয়ে আছেন।

এই নিয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা জানান, খাদ্য গুদাম সিলগালার ব্যাপারে এখনও আমার কাছে কোনো চিঠি আসেনি।

রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২২ , ১২ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ৩১ রবিউস সানি ১৪৪৪

২১৫ টন চাল আত্মসাৎ খাদ্য কর্মকর্তা লাপাত্তা

প্রতিনিধি, সদরপুর (ফরিদপুর)

image

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা খাদ্য গুদামে ২১৫ টন চাল ঘাটতির অভিযোগে গুদামটি সিলগালা করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার বিকালে ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহবুবুর রহমান, ফরিদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তারিকুজ্জামান, মাদারীপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইসমাইল হোসেন ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল আলম উপস্থিত থেকে গুদামের নথি,খাতা-পত্র যাচাইপূর্বক সিলগালা করেন।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা খাদ্য গুদামের ওসিএলএসডি সানোয়ার হোসেন প্রায় সোয়া ২০০ টন চাল আত্মসাৎ করার পর গত ৪ মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিডি কার্ডের চাল ও ডিলারদের ১৫ টাকা কেজি. দরের কার্ডের চাল সরবরাহ বন্ধ করে দেন। এতে উপজেলার হতদরিদ্ররা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতনরা গুদামের নথিপত্র যাচাই করতে গিয়ে সরকারি চাল আত্মসাতের ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।

পরের দিন বিকালে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তারিকুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আসলে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসার মতো ঘটনা। গুদামের নথিপত্র যাচাই করতে গিয়ে আমরা অনেক গরমিল পাই। যাচাই বাছাইয়ান্তের একপর্যায়ে বড় অঙ্কের চাল আত্মসাতের ঘটনা বেরিয়ে আসে। গুদামের চাল আত্মসাতের ব্যাপারে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্দ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে না পাওয়া পর্যন্ত স্পষ্ট কিছু বলা যাবে না। একইদিন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল আলম বলেন, আপাতত গুদামটি সিলগালা করে রাখা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনার পর উপজেলা ওসিএলএসডি গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে। গত কয়েকদিন ধরে কয়েক দফায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে তার সঙ্গে বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করার পরও বৃহস্পতিবার বিকেলে শুধু একবার ফোন ধরে বলেন, ভাই আমি অসুস্থ, পরে কথা হবে বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। একই দিন উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, ওই ওসিএলএসডি গত ৪ মাস ধরে আমার ইউনিয়নের প্রায় ৮০ টন চাল সরবরাহ করেনি। একইভাবে উপজেলার চার ইউনিয়নের প্রায় ২০০ টন ভিজিডি কার্ডের চাল বিতরন না করে সে আত্মসাৎ করে রেখেছে। আমি বুধবার রাতে ওসিএলএসডির নামে থানায় অভিযোগ করেছি। ১৫ টাকা কার্ডের এক ডিলার জানান, উপজেলার সাতজন ডিলারের মধ্যে নির্দিষ্ট এক ডিলারের সঙ্গে আঁতাত করে উক্ত ওসিএলএসডি প্রায় ৩-৪ কোটি টাকার চাল আত্মসাৎ করে লুকিয়ে আছেন।

এই নিয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা জানান, খাদ্য গুদাম সিলগালার ব্যাপারে এখনও আমার কাছে কোনো চিঠি আসেনি।