বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘অনেক সময় মন্তব্য’ করে থাকেন বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা। এ বিষয় আবার উষ্মা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। রাষ্ট্রদূতদের সতর্ক করে তিনি বলেছেন, ‘সময় হলে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া হবে’।
গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ গত নির্বাচনে রাশিয়ার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছে তাদের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্য। ২০ থেকে ২১ জন কূটনীতিককে তারা বের করে দিয়েছে। তারা শক্তিশালী, সেজন্য এটি করতে পেরেছে। আমাদের সেই শক্তি নাই। সেজন্য এ পথে যাই না। সময় হলে আমরাও অ্যাকশনে যাবো’।
বিদেশিদের উপদেশের প্রয়োজন নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা বলতে পারেন, আমরা শুনতে পারি। একটা সিস্টেম আছে, শিষ্টাচার আছে। তারা যদি কিছু বলতে চান, তারা সরকারকে জানাতে পারেন’।
ড. মোমেন বলেন, ‘এটা দুঃখজনক যে কিছু লোক বিদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, তারা চান বিদেশিরা কিছু বলুক। তবে বিদেশিরা যখন স্বদেশের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তখন সে দেশের আর মঙ্গল হয় না। আপনি আফগানিস্তানের দিকে দেখেন, বিদেশিদের জ্বালায় কী কষ্টে আছে। চিলিতে একই ঘটনা ঘটেছিল। চিলির নির্বাচিত সরকারও বিদেশিদের জ্বালায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমাদের কিছু লোক বিদেশিদের কাছে ধরনা দেন। তারা যখনই মাতব্বরি করেছেন, তখন ওই দেশের অবস্থা খারাপ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কোন বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে এক পয়সারও পাত্তা দেয় না। ভারতেও বিদেশিরা অনেক কিছু বলে, তারাও পাত্তা দেয় না। যাদের সম্মান আছে, তারা বিদেশিদের কাছে গিয়ে ‘কান্নাকাটি করে না’। তবে আমাদের অভিজ্ঞতা হলো, যেখানেই তারা এসেছেন, সমস্যা হয়েছে। এজন্য ওদের পরামর্শ শোনার প্রয়োজন নেই আমাদের। তবে তারা বলতে পারেন, আমরা শুনতে পারি। তারা যদি আমাদের কিছু জানাতে চান, আমাদের জানাতে পারেন।’
ড. মোমেন বলেন, ‘বিরোধী দলের বিদেশিদের কাছে মায়াকান্না না করে, জনগণের কাছে গেলেই ভালো হবে।’
এর আগে, ২২ নভেম্বর সকালে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে জেলা সাহিত্য মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, অন্য কোন দেশের মানুষ নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে জানতে চান না। এখন কিন্তু আমরা কলোনিয়াল দেশ না, আমরা কলোনি না। সুতরাং তাদের (রাষ্ট্রদূত) সেটি মনে রাখতে হবে। তারা তাদের রীতি অনুযায়ী, নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত যে রীতি, সেটা মেনে চলবেন।
২১ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, রাষ্ট্রদূতরা শিষ্টাচার সম্পর্কে অবগত এবং এ কারণে এটি গ্রহণযোগ্য নয়। এখন আমরা পরাধীন দেশ বা কলোনি নই এবং এটি তাদের মনে রাখা উচিত। তারা রীতি অনুযায়ী ব্যবহার করবে এটাই কাম্য।
রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২২ , ১২ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ৩১ রবিউস সানি ১৪৪৪
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘অনেক সময় মন্তব্য’ করে থাকেন বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা। এ বিষয় আবার উষ্মা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। রাষ্ট্রদূতদের সতর্ক করে তিনি বলেছেন, ‘সময় হলে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া হবে’।
গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ গত নির্বাচনে রাশিয়ার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছে তাদের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্য। ২০ থেকে ২১ জন কূটনীতিককে তারা বের করে দিয়েছে। তারা শক্তিশালী, সেজন্য এটি করতে পেরেছে। আমাদের সেই শক্তি নাই। সেজন্য এ পথে যাই না। সময় হলে আমরাও অ্যাকশনে যাবো’।
বিদেশিদের উপদেশের প্রয়োজন নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা বলতে পারেন, আমরা শুনতে পারি। একটা সিস্টেম আছে, শিষ্টাচার আছে। তারা যদি কিছু বলতে চান, তারা সরকারকে জানাতে পারেন’।
ড. মোমেন বলেন, ‘এটা দুঃখজনক যে কিছু লোক বিদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, তারা চান বিদেশিরা কিছু বলুক। তবে বিদেশিরা যখন স্বদেশের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তখন সে দেশের আর মঙ্গল হয় না। আপনি আফগানিস্তানের দিকে দেখেন, বিদেশিদের জ্বালায় কী কষ্টে আছে। চিলিতে একই ঘটনা ঘটেছিল। চিলির নির্বাচিত সরকারও বিদেশিদের জ্বালায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমাদের কিছু লোক বিদেশিদের কাছে ধরনা দেন। তারা যখনই মাতব্বরি করেছেন, তখন ওই দেশের অবস্থা খারাপ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কোন বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে এক পয়সারও পাত্তা দেয় না। ভারতেও বিদেশিরা অনেক কিছু বলে, তারাও পাত্তা দেয় না। যাদের সম্মান আছে, তারা বিদেশিদের কাছে গিয়ে ‘কান্নাকাটি করে না’। তবে আমাদের অভিজ্ঞতা হলো, যেখানেই তারা এসেছেন, সমস্যা হয়েছে। এজন্য ওদের পরামর্শ শোনার প্রয়োজন নেই আমাদের। তবে তারা বলতে পারেন, আমরা শুনতে পারি। তারা যদি আমাদের কিছু জানাতে চান, আমাদের জানাতে পারেন।’
ড. মোমেন বলেন, ‘বিরোধী দলের বিদেশিদের কাছে মায়াকান্না না করে, জনগণের কাছে গেলেই ভালো হবে।’
এর আগে, ২২ নভেম্বর সকালে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে জেলা সাহিত্য মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, অন্য কোন দেশের মানুষ নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে জানতে চান না। এখন কিন্তু আমরা কলোনিয়াল দেশ না, আমরা কলোনি না। সুতরাং তাদের (রাষ্ট্রদূত) সেটি মনে রাখতে হবে। তারা তাদের রীতি অনুযায়ী, নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত যে রীতি, সেটা মেনে চলবেন।
২১ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, রাষ্ট্রদূতরা শিষ্টাচার সম্পর্কে অবগত এবং এ কারণে এটি গ্রহণযোগ্য নয়। এখন আমরা পরাধীন দেশ বা কলোনি নই এবং এটি তাদের মনে রাখা উচিত। তারা রীতি অনুযায়ী ব্যবহার করবে এটাই কাম্য।