ফসলি জমি কেটে বালু তোলা বন্ধ করুন

কক্সবাজারের চকরিয়ায়া উপজেলায় এস্কেভেটর দিয়ে ফসলি জমি থেকে বালু মাটি কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাতামুহুরী নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে এসব বালু মাটি লুটের সঙ্গে স্থানীয় তিনজন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। এ নিয়ে গত শুক্রবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, হঠাৎ করে ইউপি সদস্যরা তাদের কৃষি জমির ফসল ঘরে তুলতে দিচ্ছে না। ফসল তোলার আগেই সেখান থেকে বালু উত্তোলন করছেন। এমনকি বাদাম ক্ষেতের মাঝখানে গর্ত করে বালু উত্তোলন করছেন। কৃষকের চাষ করা ফসল নষ্ট করে ফেলছে। এতে চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকরা। জমি থেকে গভীরভাবে খনন করে বালু উত্তোলন করায় আশপাশের জমি ভেঙে পড়ছে।

শুধু তাই নয়, নদীর তীর থেকেও প্রতিদিন ২০-৩০ ট্রাক বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। এসব ট্রাক সড়কগুলোতে চলাচল করায় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বালু উত্তোলন করায় নদীর দুই তীরের জমি, ঘর-বাড়ি ও গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে দু’পাড় ভেঙে মাতামুহুরী নদীর মূল মানচিত্র পরিবর্তন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ অস্বীকার করে কাকারা ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য বলেন, আমরা কারও জমি থেকে বালু উত্তোলন করছি না। তাই উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়ে লাভ হবে না। বালু উত্তোলনের ওই জায়গা মাতামুহুরী নদীর জেগে ওঠা চর বলে দাবি করেন তিনি।

কৃষকের অভিযোগ আর ইউপি সদস্যদের দাবির সত্যতা যাচাই করে দেখা দরকার বলে আমরা মনে করি। এজন্য একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা যেতে পারে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাটি কাটা বন্ধ রাখাই শ্রেয়।

অভিযুক্তদের বক্তব্য অনুযায়ী, এগুলো মাতামুহুরী নদীর জেগে ওঠা চর। অর্থাৎ সরকারি খাস জায়গা। তাদের দাবি যদি সত্যও হয় তাহলে মাটি বা বালু কাটার বৈধ কোন অনুমোদন আছে কিনা-তদন্তে তা খতিয়ে দেখতে হবে। তদন্তে কৃষকের অভিযোগের ভিত্তি মিললে তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। যাদের কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হলো তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

সরকার বলছে দেশের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি অবস্থায় ফেলে রাখা যাবে না, ফসল ফলাতে হবে। আর খবরে জানা যাচ্ছে, চকরিয়ার ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। জমিতে ফসল থাকা অবস্থাই তা করা হচ্ছে। কাজেই অভিযোগটি হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।

রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২২ , ১২ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ৩১ রবিউস সানি ১৪৪৪

ফসলি জমি কেটে বালু তোলা বন্ধ করুন

কক্সবাজারের চকরিয়ায়া উপজেলায় এস্কেভেটর দিয়ে ফসলি জমি থেকে বালু মাটি কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাতামুহুরী নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে এসব বালু মাটি লুটের সঙ্গে স্থানীয় তিনজন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। এ নিয়ে গত শুক্রবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, হঠাৎ করে ইউপি সদস্যরা তাদের কৃষি জমির ফসল ঘরে তুলতে দিচ্ছে না। ফসল তোলার আগেই সেখান থেকে বালু উত্তোলন করছেন। এমনকি বাদাম ক্ষেতের মাঝখানে গর্ত করে বালু উত্তোলন করছেন। কৃষকের চাষ করা ফসল নষ্ট করে ফেলছে। এতে চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকরা। জমি থেকে গভীরভাবে খনন করে বালু উত্তোলন করায় আশপাশের জমি ভেঙে পড়ছে।

শুধু তাই নয়, নদীর তীর থেকেও প্রতিদিন ২০-৩০ ট্রাক বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। এসব ট্রাক সড়কগুলোতে চলাচল করায় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বালু উত্তোলন করায় নদীর দুই তীরের জমি, ঘর-বাড়ি ও গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে দু’পাড় ভেঙে মাতামুহুরী নদীর মূল মানচিত্র পরিবর্তন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ অস্বীকার করে কাকারা ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য বলেন, আমরা কারও জমি থেকে বালু উত্তোলন করছি না। তাই উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়ে লাভ হবে না। বালু উত্তোলনের ওই জায়গা মাতামুহুরী নদীর জেগে ওঠা চর বলে দাবি করেন তিনি।

কৃষকের অভিযোগ আর ইউপি সদস্যদের দাবির সত্যতা যাচাই করে দেখা দরকার বলে আমরা মনে করি। এজন্য একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা যেতে পারে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাটি কাটা বন্ধ রাখাই শ্রেয়।

অভিযুক্তদের বক্তব্য অনুযায়ী, এগুলো মাতামুহুরী নদীর জেগে ওঠা চর। অর্থাৎ সরকারি খাস জায়গা। তাদের দাবি যদি সত্যও হয় তাহলে মাটি বা বালু কাটার বৈধ কোন অনুমোদন আছে কিনা-তদন্তে তা খতিয়ে দেখতে হবে। তদন্তে কৃষকের অভিযোগের ভিত্তি মিললে তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। যাদের কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হলো তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

সরকার বলছে দেশের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি অবস্থায় ফেলে রাখা যাবে না, ফসল ফলাতে হবে। আর খবরে জানা যাচ্ছে, চকরিয়ার ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। জমিতে ফসল থাকা অবস্থাই তা করা হচ্ছে। কাজেই অভিযোগটি হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।