সপ্তম শ্রেণীর বিজ্ঞান ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইয়ের একটি অংশে হুবহু অনুবাদ করে তুলে দেয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তার সত্যতা স্বীকার করেছেন বইটি রচনা ও সম্পাদনায় যুক্ত থাকা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক হাসিনা খান।
তাদের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ওই অধ্যায়ের আলোচিত অংশটুকু লেখার দায়িত্বে আমরা দু’জন না থাকলেও সম্পাদক হিসেবে এর দায় আমাদের ওপরও বর্তায়, সেটি আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি।’
২০২৩ শিক্ষাবর্ষে নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে সবকটি পাঠ্যবই নতুন শিক্ষাক্রমে প্রকাশ করেছে সরকার। এসব বই ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীরা হাতে পেয়েছে।
এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের রচয়িতা হিসেবে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ড. হাসিনা খান, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান, ড. মুশতাক ইবনে আয়ুব ও রনি বসাকের নাম রয়েছে। সম্পাদক হিসেবেও নাম রয়েছে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের।
খ্যাতিমান লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল একজন পদার্থবিদ। তিনি সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে শিক্ষকতার পর অবসর গ্রহণ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন বিজ্ঞানী ও জিনতত্ত্ববিদ হাসিনা খান। তার নেতৃত্বে দেশের জাতীয় মাছ ইলিশের জিনোম সিক্যোয়েন্স আবিষ্কৃত হয়।
তাদের রচিত ও সম্পাদিত পাঠ্যবই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা সমালোচনা হচ্ছে। এর মধ্যে একজন লেখক দেখান যে, বিজ্ঞান অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ে বিভিন্ন অংশ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে হুবহু অনুবাদ করা হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে এই অনুবাদে ব্যবহার হয়েছে গুগল ট্রান্সলেট।
এ অভিযোগের ভিত্তিতেই মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও হাসিনা খান যৌথ বিবৃতি দেন। এতে বলা হয়, হুবহু অনুবাদের অভিযোগ তুলে লেখা কলামটি তাদের নজরে এসেছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এই বইয়ের কোন কোন অধ্যায়ের অংশবিশেষ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে নিয়ে হুবহু অনুবাদ করে ব্যবহার করা হয়েছে। বইয়ের এই নির্দিষ্ট অংশটুকু এবং ওয়েবসাইটটির একই লেখাটুকু তুলনা করে অভিযোগটি আমাদের কাছে সত্য বলেই প্রতীয়মান হয়েছে।’
তবে তারা বইয়ের ওই অংশটুকু রচনায় যুক্ত ছিলেন না বলে দাবি করেন। এ বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একই পাঠ্যপুস্তক রচনার সঙ্গে অনেকে জড়িত থাকেন, যাদের শ্রম ও নিষ্ঠার ফলাফল হিসেবে বইটি প্রকাশিত হয়। বিশেষত জাতীয় পাঠ্যপুস্তক রচনার ক্ষেত্রে এসব লেখকের কাছ থেকেই এক ধরনের দায়িত্বশীলতা আশা করা হয়। সেখানে কোন একজন লেখকের লেখা নিয়ে এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তা আমাদের টিমের জন্য হতাশার এবং মন খারাপের কারণ হয়। ওই অধ্যায়ের আলোচিত অংশটুকু লেখার দায়িত্বে আমরা দু’জন না থাকলেও সম্পাদক হিসেবে এর দায় আমাদের ওপরও বর্তায়, সেটি আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি।’
বইয়ের পরবর্তী সংস্করণে প্রয়োজনীয় পরিমার্জন করা হবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়। তারা বলেন, এ বছর বইটির পরীক্ষামূলক সংস্করণ চালু হয়েছে এবং সামনের শিক্ষাবর্ষ থেকে এতে যথেষ্ট পরিমার্জন ও সম্পাদনার সুযোগ রয়েছে। কাজেই উল্লিখিত অভিযোগের বাইরেও যেকোন যৌক্তিক মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হবে এবং সে অনুযায়ী পাঠ্যবইয়ের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বা পরিমার্জন করা হবে বলে জানান মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও হাসিনা খান।
বুধবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৩ , ০৪ মাঘ ১৪২৯, ২৫ জমাদিউল সানি ১৪৪৪
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
সপ্তম শ্রেণীর বিজ্ঞান ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইয়ের একটি অংশে হুবহু অনুবাদ করে তুলে দেয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তার সত্যতা স্বীকার করেছেন বইটি রচনা ও সম্পাদনায় যুক্ত থাকা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক হাসিনা খান।
তাদের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ওই অধ্যায়ের আলোচিত অংশটুকু লেখার দায়িত্বে আমরা দু’জন না থাকলেও সম্পাদক হিসেবে এর দায় আমাদের ওপরও বর্তায়, সেটি আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি।’
২০২৩ শিক্ষাবর্ষে নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে সবকটি পাঠ্যবই নতুন শিক্ষাক্রমে প্রকাশ করেছে সরকার। এসব বই ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীরা হাতে পেয়েছে।
এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের রচয়িতা হিসেবে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ড. হাসিনা খান, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান, ড. মুশতাক ইবনে আয়ুব ও রনি বসাকের নাম রয়েছে। সম্পাদক হিসেবেও নাম রয়েছে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের।
খ্যাতিমান লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল একজন পদার্থবিদ। তিনি সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে শিক্ষকতার পর অবসর গ্রহণ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন বিজ্ঞানী ও জিনতত্ত্ববিদ হাসিনা খান। তার নেতৃত্বে দেশের জাতীয় মাছ ইলিশের জিনোম সিক্যোয়েন্স আবিষ্কৃত হয়।
তাদের রচিত ও সম্পাদিত পাঠ্যবই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা সমালোচনা হচ্ছে। এর মধ্যে একজন লেখক দেখান যে, বিজ্ঞান অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ে বিভিন্ন অংশ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে হুবহু অনুবাদ করা হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে এই অনুবাদে ব্যবহার হয়েছে গুগল ট্রান্সলেট।
এ অভিযোগের ভিত্তিতেই মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও হাসিনা খান যৌথ বিবৃতি দেন। এতে বলা হয়, হুবহু অনুবাদের অভিযোগ তুলে লেখা কলামটি তাদের নজরে এসেছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এই বইয়ের কোন কোন অধ্যায়ের অংশবিশেষ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে নিয়ে হুবহু অনুবাদ করে ব্যবহার করা হয়েছে। বইয়ের এই নির্দিষ্ট অংশটুকু এবং ওয়েবসাইটটির একই লেখাটুকু তুলনা করে অভিযোগটি আমাদের কাছে সত্য বলেই প্রতীয়মান হয়েছে।’
তবে তারা বইয়ের ওই অংশটুকু রচনায় যুক্ত ছিলেন না বলে দাবি করেন। এ বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একই পাঠ্যপুস্তক রচনার সঙ্গে অনেকে জড়িত থাকেন, যাদের শ্রম ও নিষ্ঠার ফলাফল হিসেবে বইটি প্রকাশিত হয়। বিশেষত জাতীয় পাঠ্যপুস্তক রচনার ক্ষেত্রে এসব লেখকের কাছ থেকেই এক ধরনের দায়িত্বশীলতা আশা করা হয়। সেখানে কোন একজন লেখকের লেখা নিয়ে এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তা আমাদের টিমের জন্য হতাশার এবং মন খারাপের কারণ হয়। ওই অধ্যায়ের আলোচিত অংশটুকু লেখার দায়িত্বে আমরা দু’জন না থাকলেও সম্পাদক হিসেবে এর দায় আমাদের ওপরও বর্তায়, সেটি আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি।’
বইয়ের পরবর্তী সংস্করণে প্রয়োজনীয় পরিমার্জন করা হবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়। তারা বলেন, এ বছর বইটির পরীক্ষামূলক সংস্করণ চালু হয়েছে এবং সামনের শিক্ষাবর্ষ থেকে এতে যথেষ্ট পরিমার্জন ও সম্পাদনার সুযোগ রয়েছে। কাজেই উল্লিখিত অভিযোগের বাইরেও যেকোন যৌক্তিক মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হবে এবং সে অনুযায়ী পাঠ্যবইয়ের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বা পরিমার্জন করা হবে বলে জানান মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও হাসিনা খান।