ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারককে গালাগাল, ভিডিও অপসারণের নির্দেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালতে বিচারককে গালাগাল এবং অশালীন আচরণের ঘটনার যে ভিডিও ছড়িয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তা দ্রুত অপসারণ করতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা, বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেয়।

আদালতে ভিডিও অপসারণের নির্দেশনা চান অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির। অ্যাটর্নি জেনারেল পরে বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে আদালত ও আইনজীবীদের মর্যাদা ক্ষুণœ হচ্ছে। আমরা ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা প্রার্থনা করেছি। আদালত এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।’

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিন আইনজীবীর পক্ষে সময়ের আবেদন করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল শুনানির জন্য আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছে হাইকোর্ট। আদালত সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘটনার সূত্রপাত গত ১ ডিসেম্বর। সেদিন ছিল জেলা জজ আদালতের বছরের শেষ কার্যদিবস। একটি মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সমিতির নেতাসহ একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের কথা কাটাকাটি হয়েছিল।

এরপর এক মাসের অবকাশের মধ্যে জেলা আইনজীবী সমিতি ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুক এবং জেলা জজ শারমিন নিগারের অপসারণের দাবি তোলে। তাদের আদালত বর্জনের ঘোষণাও দেয়। ছুটি শেষে আদালত খোলার পর ১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে গিয়ে ফের বিচারক ফারুকের সঙ্গে তর্কে জড়ান আইনজীবীরা। ওই ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন আইনজীবী আদালত বর্জনের কথা বলে বিচারককে এজলাস থেকে নেমে যেতে বলেন। কথা-বার্তার একপর্যায়ে আইনজীবীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এ সময় তারা বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং উচ্চস্বরে গলাগাল করেন।

পরদিন ২ জানুয়ারি বিচারক ফারুক এই আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়ে চিঠি দেন সুপ্রিম কোর্টে। তার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া বারের সভাপতিসহ তিনজনকে তলবের আদেশ দেয়। আদালত অবমাননার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে সেদিন রুলও জারি করে হাই কোর্টের এই বেঞ্চ। অন্যদিকে আদালত বর্জনের কর্মসূচি পালনের সময় জেলা জজ শারমিন নিগারের নামে কুরুচিপূর্ণ সেøাগান দেয়ার অভিযোগ ওঠে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে। তাতে এই নারী বিচারকও সুপ্রিম কোর্টে চিঠি দিয়ে প্রতিকার চান। তার পরিপ্রেক্ষিতে বারের সাধারণ সম্পাদকসহ ২১ আইনজীবীকে ২৩ জানুয়ারি তলব করেছে হাইকোর্ট।

বুধবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৩ , ০৪ মাঘ ১৪২৯, ২৫ জমাদিউল সানি ১৪৪৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারককে গালাগাল, ভিডিও অপসারণের নির্দেশ

আদালত বার্তা পরিবেশক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালতে বিচারককে গালাগাল এবং অশালীন আচরণের ঘটনার যে ভিডিও ছড়িয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তা দ্রুত অপসারণ করতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা, বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেয়।

আদালতে ভিডিও অপসারণের নির্দেশনা চান অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির। অ্যাটর্নি জেনারেল পরে বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে আদালত ও আইনজীবীদের মর্যাদা ক্ষুণœ হচ্ছে। আমরা ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা প্রার্থনা করেছি। আদালত এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।’

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিন আইনজীবীর পক্ষে সময়ের আবেদন করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল শুনানির জন্য আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছে হাইকোর্ট। আদালত সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘটনার সূত্রপাত গত ১ ডিসেম্বর। সেদিন ছিল জেলা জজ আদালতের বছরের শেষ কার্যদিবস। একটি মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সমিতির নেতাসহ একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের কথা কাটাকাটি হয়েছিল।

এরপর এক মাসের অবকাশের মধ্যে জেলা আইনজীবী সমিতি ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুক এবং জেলা জজ শারমিন নিগারের অপসারণের দাবি তোলে। তাদের আদালত বর্জনের ঘোষণাও দেয়। ছুটি শেষে আদালত খোলার পর ১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে গিয়ে ফের বিচারক ফারুকের সঙ্গে তর্কে জড়ান আইনজীবীরা। ওই ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন আইনজীবী আদালত বর্জনের কথা বলে বিচারককে এজলাস থেকে নেমে যেতে বলেন। কথা-বার্তার একপর্যায়ে আইনজীবীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এ সময় তারা বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং উচ্চস্বরে গলাগাল করেন।

পরদিন ২ জানুয়ারি বিচারক ফারুক এই আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়ে চিঠি দেন সুপ্রিম কোর্টে। তার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া বারের সভাপতিসহ তিনজনকে তলবের আদেশ দেয়। আদালত অবমাননার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে সেদিন রুলও জারি করে হাই কোর্টের এই বেঞ্চ। অন্যদিকে আদালত বর্জনের কর্মসূচি পালনের সময় জেলা জজ শারমিন নিগারের নামে কুরুচিপূর্ণ সেøাগান দেয়ার অভিযোগ ওঠে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে। তাতে এই নারী বিচারকও সুপ্রিম কোর্টে চিঠি দিয়ে প্রতিকার চান। তার পরিপ্রেক্ষিতে বারের সাধারণ সম্পাদকসহ ২১ আইনজীবীকে ২৩ জানুয়ারি তলব করেছে হাইকোর্ট।