কোথায় সেই পিঠেপুলি

একটা সময় পিঠে-পুলি তৈরির চল ছিল গ্রামবাংলায় ঘরে ঘরে। নানারকম পিঠে তৈরি করতে দেখা যেত গ্রামে। পিঠেপুলি খাওয়ার অতীত যেন আজ মিথ্যে হয়ে গেল! তবে আজ শীতের পিঠেপুলির বিষয়টা কতটা পরিবারের রসনাতৃপ্তির জন্য আর কতটা রোজগারের জন্য সেই প্রশ্ন রয়েই যায়। কারণ বর্তমান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্য দামের জেরে বাড়িতে পিঠেপুলি তৈরি করাটা অনেকের কাছেই বিলাসিতা। তাই দোকান থেকে কেজি বা পিস হিসেবে কিনেই পৌষ-পার্বণের নিয়ম রক্ষা করেন বেশিরভাগ বাঙালি।

সময়ের পরিক্রমায় অনেক পুরাতন অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটেছে। বর্তমান নাগরিক জীবনে এখন আর সেই উৎসব আমেজ নেই। কৃষকের ঘরে হেমন্তের পাকা ধান ওঠে; কিন্তু হয় না সেই পিঠের আয়োজন। পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় খুঁজেও পাওয়া যাবে না শিউলিদের। খেজুরের রসের হাঁড়ির সন্ধানও পাওয়া এখন দুষ্কর। এভাবেই অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি পিঠে উৎসব। যেসব বাহারি স্বাদের পিঠে ছাড়া গ্রামবাংলার মানুষ বিয়ে, উৎসবের কথা চিন্তা করত না, এখন সেখানে জায়গা করে নিচ্ছে বিদেশি খাবার। পেস্ট্রি, কেক খাবারে নতুন প্রজন্ম মজে আছে। তবে পিঠে, পাটিসাপটার জায়গা কি কোনভাবে দখল করে নিচ্ছে কেক, পেস্ট্রি? এভাবে কি কোথাও বর্তমান প্রজন্মের শিশু মন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পিঠেপুলি পাটিসাপটা, চিতই? কিছুটা হলেও এই আশঙ্কা অনেকটাই সত্যি।

বর্তমান সময়ের চোখ রাঙানিতে হয়তো দিন দিন উধাও হয়ে যাবে বাঙালির পাত আলো করা চপলাদির মতো অনেক দিদিদের হাতে তৈরি করা পিঠেপুলি।

লিয়াকত হোসেন খোকন

বুধবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৩ , ০৪ মাঘ ১৪২৯, ২৫ জমাদিউল সানি ১৪৪৪

কোথায় সেই পিঠেপুলি

image

একটা সময় পিঠে-পুলি তৈরির চল ছিল গ্রামবাংলায় ঘরে ঘরে। নানারকম পিঠে তৈরি করতে দেখা যেত গ্রামে। পিঠেপুলি খাওয়ার অতীত যেন আজ মিথ্যে হয়ে গেল! তবে আজ শীতের পিঠেপুলির বিষয়টা কতটা পরিবারের রসনাতৃপ্তির জন্য আর কতটা রোজগারের জন্য সেই প্রশ্ন রয়েই যায়। কারণ বর্তমান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্য দামের জেরে বাড়িতে পিঠেপুলি তৈরি করাটা অনেকের কাছেই বিলাসিতা। তাই দোকান থেকে কেজি বা পিস হিসেবে কিনেই পৌষ-পার্বণের নিয়ম রক্ষা করেন বেশিরভাগ বাঙালি।

সময়ের পরিক্রমায় অনেক পুরাতন অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটেছে। বর্তমান নাগরিক জীবনে এখন আর সেই উৎসব আমেজ নেই। কৃষকের ঘরে হেমন্তের পাকা ধান ওঠে; কিন্তু হয় না সেই পিঠের আয়োজন। পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় খুঁজেও পাওয়া যাবে না শিউলিদের। খেজুরের রসের হাঁড়ির সন্ধানও পাওয়া এখন দুষ্কর। এভাবেই অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি পিঠে উৎসব। যেসব বাহারি স্বাদের পিঠে ছাড়া গ্রামবাংলার মানুষ বিয়ে, উৎসবের কথা চিন্তা করত না, এখন সেখানে জায়গা করে নিচ্ছে বিদেশি খাবার। পেস্ট্রি, কেক খাবারে নতুন প্রজন্ম মজে আছে। তবে পিঠে, পাটিসাপটার জায়গা কি কোনভাবে দখল করে নিচ্ছে কেক, পেস্ট্রি? এভাবে কি কোথাও বর্তমান প্রজন্মের শিশু মন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পিঠেপুলি পাটিসাপটা, চিতই? কিছুটা হলেও এই আশঙ্কা অনেকটাই সত্যি।

বর্তমান সময়ের চোখ রাঙানিতে হয়তো দিন দিন উধাও হয়ে যাবে বাঙালির পাত আলো করা চপলাদির মতো অনেক দিদিদের হাতে তৈরি করা পিঠেপুলি।

লিয়াকত হোসেন খোকন