কৃষির আধুনিকায়নে দিন দিন বাড়ছে যন্ত্রপাতি ব্যবহার

বাড়ছে উৎপাদন, কমছে খরচ

সিরাজগঞ্জে কৃষিতে আধুনিকায়ন যান্ত্রীকিকরনে বাড়ছে উৎপাদন, কমছে খরচ। শ্রমিক সংকট দূর, ফসল কর্তন ও মাড়াই, বীজ বোপন, চারা রোপন ও সময় সাশ্রয়ে যন্ত্রের ব্যাবহার দিন দিন বাড়ছে । এতে করে কৃষকদের যেমন কম সময় লাগছে পাশপাশি অর্থেরও সাশ্রয় হচ্ছে । প্রতি বছরই সরকার কৃষকদের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে আসছে । জেলার কৃষকরা ভর্তুকী মূল্যে এই সব যন্ত্র পেয়ে বেশ খুশি বলে জানা গেছে । জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায় প্রতি বছরই কৃষকদের মধ্যে পাওয়ার টিলার, হারভেষ্টার মেশিন, ধান, গম মরাইয়ের মেশিনসহ নানা ধরনের কৃষিযন্ত্র কৃষকদের মধ্যে ভুর্তুকি মুল্যে সরকারিভাবে বিক্রী করা হয়ে থাকে । স্থানীয় কৃষকরা এই সব মেশিন ভাড়া নিয়ে চাষাবাদ করছেন । এতে কম সময়ে কম খরচের পাশপাশি কৃষিতে উৎপাদন অনেক গুন বৃদ্ধি পেছে । কৃষিতে আধুনিকায়ন কৃষিতে নতুন দিগন্তের সুচনা করেছে । এবারই জেলাতে পলিনেট পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও ট্রে পদ্ধাততে চারা উৎপাদন শুরু হয়েছে । এর ফলে কৃষকরা আর্থিভাবে লাভবান হচ্ছে ।

উল্লাপাড়া উপজেলার মাছিয়াকান্দি গ্রামের কৃষক চাঁদ আলী দেওয়ান বলেন, ‘এ পদ্ধতিতে ধানের চারা আগে কখনো চাষ করতে দেখিনি। প্রথমবারের মতো কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধান বীজতলা করেছি। আশা করি ভালো ফলন হবে। এ বছর ফলন ভালো হলে কৃষকেরা ভবিষ্যতে আরও বেশি চাষাবাদ করবে। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার একডালা গ্রামের কৃষক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘পলিনেট হাউসে চাষাবাদ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নিরাপদ থাকা যাচ্ছে। বৃষ্টির মধ্যে উন্নতমানের টমেটো, ক্যাপসিকাম, লেটুস, ফুলকপি, বাঁধাকপি চাষাবাদ করা যায়। এতে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পলিটেন আসার পর এখন আর জমি পতিত থাকে না। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বনবাড়িয়া গ্রামের কৃষক শরীফুল ইসলাম জানান আগে আমরা গরু দিয়ে জমি চাষ করতাম তখন এক বিঘা জমি চাষ করতে দিনই চলে যেত । এখন ট্রাকটর আসায় দিনে ৮/১০ বিঘা জমি চাষ করা যায় । এতে আমাদের খরচ ও সময় কম হচ্ছে । পাশাপাশি উৎপাদিত ফসল বিক্রী করে লাভ হচ্ছে । উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সূবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন কৃষিকে আধুনিকায়নের আওতায় বীজতলা করার জন্য কৃষিবিভাগ থেকে ২১ শ প্লাষ্টিক ট্রে ও বোরো ধান বীজ সরবরাহ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় ১শ বিঘা জমিতে ট্রেতে করা বীজতলার চারা লাগানো যাবে। পলিনেট হাউসে বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফুল চাষ সিরাজগঞ্জে এই প্রথম। পলিনেট হাউসে দীর্ঘমেয়াদী সবজি ও ফুল চাষ করা যায়। শীতের সবজি ও ফুল গরমে এবং গরমের সবজি ও ফুল শীতে চাষাবাদ করা যায়।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার সাদাত বলেন, কৃষিতে আধুনিকায়ন ও যান্ত্রিকি করনের ফলে মানসম্মত বীজ ও প্রযুক্তি ব্যাবহারের কারনে মানসম্মত ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া অল্প জায়গায় বেশী ফসল উৎপাদন করে কৃষক লাভবান হচ্ছে । এই সব প্রযুক্তি ব্যাবহারের মাধ্যমে কৃষকরা সারা বছরই কোন না কোন ফসল উৎপাদন করছে।

এবিষয়ে সিরাজগঞ্জ কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ - পরিচালক বাবলু কুমার সুত্রধর জানান, কৃষি আধুনিকায়ন ও যান্ত্রিকি করণের ফলে ফসল উৎপাদনে সময় কম লাগে, উৎপাদন খরচ কম হয় । পাশাপাশি কৃষকেরাও আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে।

image

সিরাজগঞ্জ : আধুনিক কৃষিযন্ত্রের মাধ্যমে ধান মাড়াই করছেন কৃষকরা -সংবাদ

আরও খবর
কর্মসৃজনের শ্রমিক দিয়ে ফসলি জমির উর্বর মাটি লুটের মহোৎসব
সীতাকুন্ডে ২০ স্বর্ণের বারসহ গ্রেপ্তার ২
বিএসএফের মারধরে এক যুবক আহত
লালমাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
ইয়াবা-গাঁজাসহ ৩ ব্যবসায়ী আটক
হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি ধাক্কায় আহত ২
শরণখোলায় একরাতে পাঁচ বাড়িতে চুরি
শ্রীনগরে বাঘড়া চরের মাটি লুটপাট মেম্বার বাহিনীর
ভুরুঙ্গামারীতে ৩ দোকান ছাই
অবৈধভাবে মজুদ এসিআই’র সাড়ে চার হাজার টন ধান-চাল জব্দ
৩৬৬ বর্ষী ঘোড়দৌড়ে ১০ গ্রামের মিলনমেলা
তিন ফসলি জমির উর্বর মাটি ভাটায় : বেপরোয়া মাটিখেকোরা
পাসপোর্ট করতে এসে দুই রোহিঙ্গা নারী আটক
কুমিল্লায় ভারতীয় বাজিসহ আটক ১
ভেজাল গুড় কারখানায় অভিযান, জরিমানা লাখ টাকা
মাথা গোঁজার ঠাঁই পেল দুই প্রতিবন্ধী পরিবার
ইয়াবা ও জাল টাকাসহ মাদক কারবারি আটক
৮ দিনেও গ্রেফতার নেই বিচার দাবিতে বিক্ষোভ
বাবার সম্পত্তিতে অধিকার দাবিতে অবস্থান ছেলের
৩০ প্রজাতির ফল বাগানে সফল সিদ্দিক

শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৩ , ০৬ মাঘ ১৪২৯, ২৬ জমাদিউল সানি ১৪৪৪

কৃষির আধুনিকায়নে দিন দিন বাড়ছে যন্ত্রপাতি ব্যবহার

বাড়ছে উৎপাদন, কমছে খরচ

জেলা বার্তা পরিবেশক, সিরাজগঞ্জ

image

সিরাজগঞ্জ : আধুনিক কৃষিযন্ত্রের মাধ্যমে ধান মাড়াই করছেন কৃষকরা -সংবাদ

সিরাজগঞ্জে কৃষিতে আধুনিকায়ন যান্ত্রীকিকরনে বাড়ছে উৎপাদন, কমছে খরচ। শ্রমিক সংকট দূর, ফসল কর্তন ও মাড়াই, বীজ বোপন, চারা রোপন ও সময় সাশ্রয়ে যন্ত্রের ব্যাবহার দিন দিন বাড়ছে । এতে করে কৃষকদের যেমন কম সময় লাগছে পাশপাশি অর্থেরও সাশ্রয় হচ্ছে । প্রতি বছরই সরকার কৃষকদের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে আসছে । জেলার কৃষকরা ভর্তুকী মূল্যে এই সব যন্ত্র পেয়ে বেশ খুশি বলে জানা গেছে । জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায় প্রতি বছরই কৃষকদের মধ্যে পাওয়ার টিলার, হারভেষ্টার মেশিন, ধান, গম মরাইয়ের মেশিনসহ নানা ধরনের কৃষিযন্ত্র কৃষকদের মধ্যে ভুর্তুকি মুল্যে সরকারিভাবে বিক্রী করা হয়ে থাকে । স্থানীয় কৃষকরা এই সব মেশিন ভাড়া নিয়ে চাষাবাদ করছেন । এতে কম সময়ে কম খরচের পাশপাশি কৃষিতে উৎপাদন অনেক গুন বৃদ্ধি পেছে । কৃষিতে আধুনিকায়ন কৃষিতে নতুন দিগন্তের সুচনা করেছে । এবারই জেলাতে পলিনেট পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও ট্রে পদ্ধাততে চারা উৎপাদন শুরু হয়েছে । এর ফলে কৃষকরা আর্থিভাবে লাভবান হচ্ছে ।

উল্লাপাড়া উপজেলার মাছিয়াকান্দি গ্রামের কৃষক চাঁদ আলী দেওয়ান বলেন, ‘এ পদ্ধতিতে ধানের চারা আগে কখনো চাষ করতে দেখিনি। প্রথমবারের মতো কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধান বীজতলা করেছি। আশা করি ভালো ফলন হবে। এ বছর ফলন ভালো হলে কৃষকেরা ভবিষ্যতে আরও বেশি চাষাবাদ করবে। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার একডালা গ্রামের কৃষক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘পলিনেট হাউসে চাষাবাদ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নিরাপদ থাকা যাচ্ছে। বৃষ্টির মধ্যে উন্নতমানের টমেটো, ক্যাপসিকাম, লেটুস, ফুলকপি, বাঁধাকপি চাষাবাদ করা যায়। এতে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পলিটেন আসার পর এখন আর জমি পতিত থাকে না। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বনবাড়িয়া গ্রামের কৃষক শরীফুল ইসলাম জানান আগে আমরা গরু দিয়ে জমি চাষ করতাম তখন এক বিঘা জমি চাষ করতে দিনই চলে যেত । এখন ট্রাকটর আসায় দিনে ৮/১০ বিঘা জমি চাষ করা যায় । এতে আমাদের খরচ ও সময় কম হচ্ছে । পাশাপাশি উৎপাদিত ফসল বিক্রী করে লাভ হচ্ছে । উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সূবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন কৃষিকে আধুনিকায়নের আওতায় বীজতলা করার জন্য কৃষিবিভাগ থেকে ২১ শ প্লাষ্টিক ট্রে ও বোরো ধান বীজ সরবরাহ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় ১শ বিঘা জমিতে ট্রেতে করা বীজতলার চারা লাগানো যাবে। পলিনেট হাউসে বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফুল চাষ সিরাজগঞ্জে এই প্রথম। পলিনেট হাউসে দীর্ঘমেয়াদী সবজি ও ফুল চাষ করা যায়। শীতের সবজি ও ফুল গরমে এবং গরমের সবজি ও ফুল শীতে চাষাবাদ করা যায়।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার সাদাত বলেন, কৃষিতে আধুনিকায়ন ও যান্ত্রিকি করনের ফলে মানসম্মত বীজ ও প্রযুক্তি ব্যাবহারের কারনে মানসম্মত ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া অল্প জায়গায় বেশী ফসল উৎপাদন করে কৃষক লাভবান হচ্ছে । এই সব প্রযুক্তি ব্যাবহারের মাধ্যমে কৃষকরা সারা বছরই কোন না কোন ফসল উৎপাদন করছে।

এবিষয়ে সিরাজগঞ্জ কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ - পরিচালক বাবলু কুমার সুত্রধর জানান, কৃষি আধুনিকায়ন ও যান্ত্রিকি করণের ফলে ফসল উৎপাদনে সময় কম লাগে, উৎপাদন খরচ কম হয় । পাশাপাশি কৃষকেরাও আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে।