বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানাকে নির্বাচনী এলাকায় ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা আ’লীগের

রুমিনকে নিয়ে মুখ খুললেন উকিল সাত্তার

বিএনপির আর্ন্তজাতিকবিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) নির্বাচনী এলাকায় অবাঞ্চিত করে তাকে প্রতিহতের ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। সেই সঙ্গে নির্বাচনী পরিবেশ বিঘিœত করার শঙ্কায় তাকে নির্বাচনী এলাকায় আসতে না দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। গতকাল দুপুরে আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার এই ঘোষণা দেন।

সভায় আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ছফিউল্লাহর সভাপতিত্বে আল মামুন সরকার বলেন, আশুগঞ্জ-সরাইলে যে উপ-নির্বাচন হচ্ছে এতে দলীয়ভাবে আমাদের কোন প্রার্থী নাই। এরপরও আসনটি যেহেতু বিএনপির ছিল, সেই প্রেক্ষাপটে বিএনপির নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা আশুগঞ্জে এসে একটি মিটিংয়ে তিনি নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের সময়ে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে যারা বিঘœ সৃষ্টি করে, দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার প্রয়োজনে তাদের প্রতিহত করা আবশ্যক। সেই প্রেক্ষাপটে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সরাইল-আশুগঞ্জে যে উপ-নির্বাচন হবে, সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষার প্রয়োজনে এবং প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তার প্রয়োজনে প্রশাসনকে আমরা সহযোগিতা করবো।

তিনি উপ-নির্বাচনের সময়কাল পর্যন্ত ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে নির্বাচনী এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা যদি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রতিহত, বানচাল বা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টির কোন অপচেষ্টা করে তাহলে তাদের প্রতিহত করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

মত বিনিময়সভায় আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান আনসারী প্রমুখ।

এদিকে দল ছাড়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তিনি জানান, আমার হাত ধরেই সরাইল-আশুগঞ্জে বিএনপির জন্ম। এখন যদি মানসম্মান না থাকে দল করবো কীভাবে? মানুষ মানসম্মানের জন্যই দল করে। দল থেকে কয়েক বছর ধরে সম্মান পাইনি। দলের কেউ কোন কিছুর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন মনে করেনি। দল ও দলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে যথাযথ মূল্যায়ন পাইনি। তাই দল থেকে পদত্যাগ করেছি।

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা কর্তৃক উকিল সাত্তারকে নিয়ে করা বিভিন্ন মন্তব্যের রেশ টেনে তিনি আরও বলেন, আমার বাপদাদা চৌদ্দ গোষ্ঠীও তাকে চিনতো না। তবে তার বাবাকে আমরা চিনতাম। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুরোধে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য পদে রুমিন ফারহানার নাম প্রস্তাব করেছিলাম। আমার প্রস্তাবে রুমিন ফারহানা এমপি সংসদ সদস্য হয়েছেন। এখন আমার বিরুদ্ধে কথা বলেন।

উল্লেখ্য আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন। এই আসনটি উম্মুক্ত রেখেছে আওয়ামীলীগ। উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপি থেকে পদত্যাগকারী এই আসনের পাঁচ বারের সাবেক এমপি উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ‘কলারছড়ি’ প্রতীক, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ ‘মটর গাড়ি (কার)’ প্রতীক, জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুল হামিদ ভাসানী ‘লাঙ্গল’ প্রতীক ও জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল ‘গোলাপ’ ফুল প্রতীক।

আবদুস সাত্তার দলীয় সিদ্ধান্তে গত ১১ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসনের পদ থেকে পদত্যাগ করে উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।

উপ-নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ কোন প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগের তিনজন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। পরে তারা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।

আরও খবর
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা কলকাতা বন্দর থেকে ফেরত গেল রূপপুরের সরঞ্জাম
চার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বন্ধ, সময় পেল ১২টি
মানব পাচার রোধে যৌথভাবে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ
টিসিবির জন্য ২৭৪ কোটি টাকার তেল-ডাল কিনবে সরকার
কিউআর কোড : ক্যাশলেস দুনিয়ায় স্বস্তিতে সবুজ, জগদিস, বাবুল, নাজিমরা
বিএনপি বড় ধরনের নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছে, গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে : কাদের
১৯ দফা সামনে রেখে বিএনপি পথ চলছে : ফখরুল
রঙে মাত্রাতিরিক্ত সিসা, এসডোর গবেষণা
দেশে প্রথম ‘ব্রেন ডেথ’ রোগীর অঙ্গ প্রতিস্থাপন, সারা ইসলাম হলেন প্রথম অঙ্গদাতা
সারাদেশে এখনও পৌঁছেনি সব পাঠ্যবই
শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫.৬ ডিগ্রি
রমজানের আগেই নিত্যপণ্যের বাজার ‘চড়া’
জিএম কাদেরের কার্যালয়ে গিয়ে ক্ষমা চাইলেন রাঙ্গা
আমাদের গণতন্ত্র বিদেশিদের ফরমায়েশে চলবে না : কাদের
দুই বছরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র
সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আ’লীগের পরাজয় নিশ্চিত : মির্জা ফখরুল
তৃতীয় লিঙ্গের প্রথম ইউপি চেয়ারম্যান রিতুর জীবনচিত্র এখন পাঠ্যবইয়ে

শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৩ , ০৬ মাঘ ১৪২৯, ২৬ জমাদিউল সানি ১৪৪৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) উপনির্বাচন

বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানাকে নির্বাচনী এলাকায় ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা আ’লীগের

রুমিনকে নিয়ে মুখ খুললেন উকিল সাত্তার

জেলা বার্তা পরিবেশক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বিএনপির আর্ন্তজাতিকবিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) নির্বাচনী এলাকায় অবাঞ্চিত করে তাকে প্রতিহতের ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। সেই সঙ্গে নির্বাচনী পরিবেশ বিঘিœত করার শঙ্কায় তাকে নির্বাচনী এলাকায় আসতে না দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। গতকাল দুপুরে আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার এই ঘোষণা দেন।

সভায় আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ছফিউল্লাহর সভাপতিত্বে আল মামুন সরকার বলেন, আশুগঞ্জ-সরাইলে যে উপ-নির্বাচন হচ্ছে এতে দলীয়ভাবে আমাদের কোন প্রার্থী নাই। এরপরও আসনটি যেহেতু বিএনপির ছিল, সেই প্রেক্ষাপটে বিএনপির নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা আশুগঞ্জে এসে একটি মিটিংয়ে তিনি নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের সময়ে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে যারা বিঘœ সৃষ্টি করে, দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার প্রয়োজনে তাদের প্রতিহত করা আবশ্যক। সেই প্রেক্ষাপটে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সরাইল-আশুগঞ্জে যে উপ-নির্বাচন হবে, সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষার প্রয়োজনে এবং প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তার প্রয়োজনে প্রশাসনকে আমরা সহযোগিতা করবো।

তিনি উপ-নির্বাচনের সময়কাল পর্যন্ত ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে নির্বাচনী এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা যদি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রতিহত, বানচাল বা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টির কোন অপচেষ্টা করে তাহলে তাদের প্রতিহত করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

মত বিনিময়সভায় আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান আনসারী প্রমুখ।

এদিকে দল ছাড়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তিনি জানান, আমার হাত ধরেই সরাইল-আশুগঞ্জে বিএনপির জন্ম। এখন যদি মানসম্মান না থাকে দল করবো কীভাবে? মানুষ মানসম্মানের জন্যই দল করে। দল থেকে কয়েক বছর ধরে সম্মান পাইনি। দলের কেউ কোন কিছুর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন মনে করেনি। দল ও দলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে যথাযথ মূল্যায়ন পাইনি। তাই দল থেকে পদত্যাগ করেছি।

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা কর্তৃক উকিল সাত্তারকে নিয়ে করা বিভিন্ন মন্তব্যের রেশ টেনে তিনি আরও বলেন, আমার বাপদাদা চৌদ্দ গোষ্ঠীও তাকে চিনতো না। তবে তার বাবাকে আমরা চিনতাম। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুরোধে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য পদে রুমিন ফারহানার নাম প্রস্তাব করেছিলাম। আমার প্রস্তাবে রুমিন ফারহানা এমপি সংসদ সদস্য হয়েছেন। এখন আমার বিরুদ্ধে কথা বলেন।

উল্লেখ্য আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন। এই আসনটি উম্মুক্ত রেখেছে আওয়ামীলীগ। উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপি থেকে পদত্যাগকারী এই আসনের পাঁচ বারের সাবেক এমপি উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ‘কলারছড়ি’ প্রতীক, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ ‘মটর গাড়ি (কার)’ প্রতীক, জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুল হামিদ ভাসানী ‘লাঙ্গল’ প্রতীক ও জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল ‘গোলাপ’ ফুল প্রতীক।

আবদুস সাত্তার দলীয় সিদ্ধান্তে গত ১১ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসনের পদ থেকে পদত্যাগ করে উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।

উপ-নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ কোন প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগের তিনজন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। পরে তারা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।