নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের ‘অবস্থান পরিষ্কার’, বললেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব

দেশের সব নির্বাচনেই প্রশাসনের তরফ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেছেন, আগামী নির্বাচনের বিষয়েও প্রশাসনের অবস্থান ‘পরিষ্কার’। নির্বাচনে সহযোগিতা করার জন্য তাদের ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতা আছে। সেই অভিজ্ঞতা ও ঐতিহ্যকে কাজে লাগানো হবে এবং সেই অভিজ্ঞতার আলোকেই নির্বাচনে সহযোগিতা করা হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব গতকাল সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনের সহযোগিতা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

২৪ জানুয়ারি সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘ডিসি সম্মেলন-২০২৩’ এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ সম্মেলনের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরতেই গতকাল সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২০-২০২১ সালে ডিসি সম্মেলন হয়নি। এরপর গত বছরের ১৮-২০ জানুয়ারি ডিসি সম্মেলন হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই সম্মেলন ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী এবার সরাসরি উপস্থিত হয়ে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।

এবার তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলন হচ্ছে। এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ডিসিরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুষ্ঠান শেষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কার্য-অধিবেশনে অংশ নেবেন ডিসিরা।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সঙ্গে এবং তৃতীয় দিনে (২৬ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ডিসিরা। সবকটি অনুষ্ঠানেই ডিসিদের সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনাররা।

ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা এবারের সম্মেলনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পর্কে আলোচনার জন্য ২৪৫টি প্রস্তাব দিয়েছেন জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার মতো কিছু বিষয় বেশি গুরুত্ব পাবে সম্মেলনে।

২০২৪ সালের প্রথম দিকে সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এটাই শেষ ডিসি সম্মেলন। এ কারণে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের পাশাপাশি মন্ত্রী ও সচিবরা সরাসরি ডিসিদের সঙ্গে কথা বলা ও বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে হয়তো এটা শেষ ডিসি সম্মেলন নাও হতে পারে। কারণ একাধিকবার ডিসি সম্মেলনের নজির আছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছরের ডিসি সম্মেলনে মোট ২৪২টি প্রস্তাব গ্রহণ অর্থাৎ সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ১৭৭টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়েছে। সিন্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৭৩ শতাংশ। বাকি ৬৬টি প্রস্তাব বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

এবার সম্মেলনে মোট ২৬টি অধিবেশন হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এরমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য অধিবেশন ২০টি। সম্মেলনে মোট ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশ নেবে। কার্য অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকবেন।’

মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এ বছর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রস্তাব পাওয়া গেছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সংক্রান্ত,... ২৩টি। এরপর ভূমি মন্ত্রণালয় (১৫টি) ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত (১৩টি), সুরক্ষা সেবা বিভাগ সংক্রান্ত (১১টি), গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত (১০টি) প্রস্তাব বেশি পাওয়া গেছে।’

এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রধান আলোচ্য বিষয় কী হতে পারে-জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জোরদারকরণ, ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা-ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসৃজন ও দারিদ্র্যবিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসূচি বাস্তবায়ন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্ন্যান্স, শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণরোধ, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়। এসব বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে।’

সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩ , ০৮ মাঘ ১৪২৯, ২৮ জমাদিউল সানি ১৪৪৪

ডিসি সম্মেলন কাল

নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের ‘অবস্থান পরিষ্কার’, বললেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

দেশের সব নির্বাচনেই প্রশাসনের তরফ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেছেন, আগামী নির্বাচনের বিষয়েও প্রশাসনের অবস্থান ‘পরিষ্কার’। নির্বাচনে সহযোগিতা করার জন্য তাদের ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতা আছে। সেই অভিজ্ঞতা ও ঐতিহ্যকে কাজে লাগানো হবে এবং সেই অভিজ্ঞতার আলোকেই নির্বাচনে সহযোগিতা করা হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব গতকাল সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনের সহযোগিতা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

২৪ জানুয়ারি সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘ডিসি সম্মেলন-২০২৩’ এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ সম্মেলনের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরতেই গতকাল সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২০-২০২১ সালে ডিসি সম্মেলন হয়নি। এরপর গত বছরের ১৮-২০ জানুয়ারি ডিসি সম্মেলন হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই সম্মেলন ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী এবার সরাসরি উপস্থিত হয়ে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।

এবার তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলন হচ্ছে। এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ডিসিরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুষ্ঠান শেষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কার্য-অধিবেশনে অংশ নেবেন ডিসিরা।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সঙ্গে এবং তৃতীয় দিনে (২৬ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ডিসিরা। সবকটি অনুষ্ঠানেই ডিসিদের সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনাররা।

ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা এবারের সম্মেলনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পর্কে আলোচনার জন্য ২৪৫টি প্রস্তাব দিয়েছেন জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার মতো কিছু বিষয় বেশি গুরুত্ব পাবে সম্মেলনে।

২০২৪ সালের প্রথম দিকে সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এটাই শেষ ডিসি সম্মেলন। এ কারণে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের পাশাপাশি মন্ত্রী ও সচিবরা সরাসরি ডিসিদের সঙ্গে কথা বলা ও বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে হয়তো এটা শেষ ডিসি সম্মেলন নাও হতে পারে। কারণ একাধিকবার ডিসি সম্মেলনের নজির আছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছরের ডিসি সম্মেলনে মোট ২৪২টি প্রস্তাব গ্রহণ অর্থাৎ সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ১৭৭টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়েছে। সিন্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৭৩ শতাংশ। বাকি ৬৬টি প্রস্তাব বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

এবার সম্মেলনে মোট ২৬টি অধিবেশন হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এরমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য অধিবেশন ২০টি। সম্মেলনে মোট ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশ নেবে। কার্য অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকবেন।’

মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এ বছর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রস্তাব পাওয়া গেছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সংক্রান্ত,... ২৩টি। এরপর ভূমি মন্ত্রণালয় (১৫টি) ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত (১৩টি), সুরক্ষা সেবা বিভাগ সংক্রান্ত (১১টি), গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত (১০টি) প্রস্তাব বেশি পাওয়া গেছে।’

এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রধান আলোচ্য বিষয় কী হতে পারে-জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জোরদারকরণ, ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা-ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসৃজন ও দারিদ্র্যবিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসূচি বাস্তবায়ন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্ন্যান্স, শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণরোধ, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়। এসব বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে।’