মহাসড়কে শৃঙ্খলায় প্রযুক্তি প্রকল্প, বিশেষজ্ঞদের সন্দেহ

সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট নিয়ন্ত্রণে গড়ে তোলা হচ্ছে ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (আইটিএস)। এই নতুন উদ্যোগের ফলে রাস্তায় চলা গাড়িকে ‘প্রয়োজন’ মতো ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে’ দেয়া হবে ট্রাফিক সংকেত। গাড়ি সেই সংকেত অমান্য করলে ‘শনাক্ত’ করা যাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এটি কার্যকর হলে ‘নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য, টেকসই ও উন্নত’ সড়ক পরিবহন অবকাঠামো এবং পরিচালন ব্যবস্থা ‘নিশ্চিত’ হবে বলে কর্মকর্তারা বলছেন। তবে, যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষ লোকের অভাবে এসব প্রকল্প খুব একটা কাজে আসে না।

গত বছরের ১১ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় ১২২ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ইমপ্রুভিং দ্যা রিলায়েবিলিটি অ্যান্ড সেফটি অন ন্যাশনাল হাইওয়ে করিডোরস অব বাংলাদেশ বাই ইনট্রোডাকশন অব ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (আইটিএস)’ শীর্ষক প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

সংশ্লিষ্টদের আশা, আইটিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে মহাসড়কে যানবাহনে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি চালকদের গতি নিয়ন্ত্রণে বাধ্য করা ও নিয়ম ভাঙার বিরুদ্ধে ত্বরিৎ ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে। সেইসঙ্গে, দুর্ঘটনার পর ‘তাৎক্ষণিক সহায়তা’ কার্যক্রমে এই ব্যাবস্থা ‘বড় ধরনের ভূমিকা’ রাখবে।

আইটিএস প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. তানভীর সিদ্দিকী সংবাদকে বলেন, ‘এই প্রজেক্ট বাস্তবায়নের ফলে একটি নেটওয়ার্ক ডেভলপ কারা সম্ভব হবে। এর ফলে ট্রাফিক নজরদারি, এনফোর্সমেন্ট (প্রয়োগ), দুর্ঘটনা নজরদারি ও ট্রাফিক জ্যাম সম্পর্কে জানা সম্ভব হবে।’

প্রকল্পের আওতায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে স্থাপন করা হবে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সেন্টার। যেখান থেকে এ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে দেশের সবচেয়ে দ্রুতগতির সড়ক ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে এই পদ্ধতি চালু করা হবে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই সড়কে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে দুর্ঘটনাও বেড়েছে। এটি সফল হলে পর্যায়ক্রমে সারাদেশের প্রধান সড়কগুলো এই পদ্ধতির আওতায় আসবে।

তানভীর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের এই প্রোজেক্টে তিনটা কম্পোনেন্ট। প্রথমত পাইলট প্রোজেক্ট, দ্বিতীয়ত মাস্টার প্ল্যান, তৃতীয়ত ক্যাপাসিটি বিল্ডিং।’

বিষয়টির ব্যাখা করে তিনি বলেন, ‘পাইলট প্রজেক্টে আছে আমাদের এন-৮ রোডে (ঢাকা থেকে মাওয়া রোড) বেশ কিছু ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বসাবো। সেগুলো হলো সিসিটিভি, ইবিএস, ইএমএস এরকম কিছু ক্যামেরা বসাবো। এমন প্রায় একশ’টি ডিভাইস বসবে। এই একশ’টি ডিভাইসকে কানেক্ট করে আমাদের আরএইচডি হেড কোয়ার্টারে ট্যাফিক ম্যানেজমেন্ট সেন্টার করা হবে। এই ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সেন্টার (টিএমসি) হতে আমরা ওই রোডটাকে মনিটর করবো।’

অর্থাৎ এর মাধ্যমে ওই সড়কের যানবাহনের মুভমেন্ট বা চলাচল, ওভার স্পিডিং অর্থাৎ দ্রুত গতিসহ যত কম্পোনেন্ট বা বিষয় আছে সব মনিটর বা পর্যবেক্ষণ করা হবে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা জোন) মো. সবুজ উদ্দিন খান সংবাদকে বলেন, ‘এটি একটি আধুনিক ও নতুন সিস্টেম। এর মাধ্যমে যানবাহনগুলোকে রিয়েল টাইম মনিটরিং করা হবে। ফলে কোথায় যানজট আছে বা কোন সমস্যা আছে কি না সেসব নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে। ফলে দুর্ঘটনা অনেক কমে আসবে।’

‘এছাড়া কোন গাড়ির গতিবিধি সন্দেহজনক কি না সেটা মনিটরিং করা হবে। সেই অনুযায়ী হাইওয়ে পুলিশকে এবং আমাদের যে মনিটরিং সেন্টার আছে তাদের কাছে খবর চলে যাবে। আমাদের যারা প্যাট্রল টিম থাকবে তারা সঙ্গে সঙ্গে অর্থাৎ ৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে চলে যাবে। আমাদের এই মনিটরিং ২৪ ঘণ্টা থাকবে।’

এ ব্যবস্থা চালু হলে নির্ধারিত সড়কে নির্দিষ্ট গতিসীমার মধ্যে যান চলাচল এবং নির্দিষ্ট লেইন মেনে চলতে চালকদের বাধ্য করার সুযোগ তৈরি হবে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।

তবে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশে প্রযুক্তিনির্ভর অবকাঠামোগুলোর ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত নাজুক। সেইসঙ্গে আইটিএসের মতো অত্যাধুনিক ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি ‘সঠিকভাবে’ চালনা করার মতো ‘দক্ষ’ লোকের অভাবের কারণে খুব একটা কাজে আসবে না। তাদের মতে, এ ধরনের প্রযুক্তি তখনই কাজ করবে যখন সড়ক অবকাঠামো থাকবে উন্নতমানের। চালকরা হবে শিক্ষিত ও দক্ষ। চালকদের মধ্যে শৃঙ্খলা মেনে গাড়ি চালানোর প্রবণতা থাকবে। সড়কে কোন ধরনের ‘অবৈধ’ ও ‘ফিটনেসবিহীন’ যানবাহন চলাচল করবে না।

আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগে পৃথিবীর প্রতিটা দেশই প্রযুক্তিনির্ভর ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের যত সুবিধা সেটাকে কাজে লাগিয়ে সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে সেটা ‘ইনিস্টিটিশানাল কালচার’ বা ‘প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতি’ হিসেবে গড়ে ওঠেনি বলে মনে করেন সড়ক যোগাযোগ খাতের বিশেষজ্ঞ বুয়েটের পুর কৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামসুল হক। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘প্রযুক্তিনির্ভর জিনিসগুলোর ইনফাস্ট্রাকচারটা (অবকাঠামো) অত্যন্ত নাজুক। সড়কে যখন একটা সিসি টিভি লাগানো হয় তখন সেটি বছরের পর বছর থাকে না, কিছুদিন পরেই নষ্ট হতে থাকে। নষ্ট হওয়ার পর মেইনটেইনেন্স (রক্ষণাবেক্ষণ) দরকার হয়, কিন্তু সেগুলো করা হয় না। এরপর চুরি হতে থাকে। আমাদের এনালগ সিস্টেমেই যদি এমন অবহেলার সাক্ষী হয় তাহলে পরের ধাপটা তো আরও বেশি পেশাদার হতে হবে, কিন্তু সেই চিন্তা আমাদের নেই।’

প্রকল্পটির মোট ব্যয়ের সরকারি তহবিল থেকে আসবে ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং কোরিয়া ঋণ সহায়তা দেবে ৮৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতীয় মহাসড়কের (এন-৮) ৪০ কিলোমিটার সড়কে পরীক্ষামূলক চালুর জন্য প্রকল্প নিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।

সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩ , ০৮ মাঘ ১৪২৯, ২৮ জমাদিউল সানি ১৪৪৪

মহাসড়কে শৃঙ্খলায় প্রযুক্তি প্রকল্প, বিশেষজ্ঞদের সন্দেহ

শাফিউল ইমরান

সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট নিয়ন্ত্রণে গড়ে তোলা হচ্ছে ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (আইটিএস)। এই নতুন উদ্যোগের ফলে রাস্তায় চলা গাড়িকে ‘প্রয়োজন’ মতো ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে’ দেয়া হবে ট্রাফিক সংকেত। গাড়ি সেই সংকেত অমান্য করলে ‘শনাক্ত’ করা যাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এটি কার্যকর হলে ‘নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য, টেকসই ও উন্নত’ সড়ক পরিবহন অবকাঠামো এবং পরিচালন ব্যবস্থা ‘নিশ্চিত’ হবে বলে কর্মকর্তারা বলছেন। তবে, যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষ লোকের অভাবে এসব প্রকল্প খুব একটা কাজে আসে না।

গত বছরের ১১ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় ১২২ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ইমপ্রুভিং দ্যা রিলায়েবিলিটি অ্যান্ড সেফটি অন ন্যাশনাল হাইওয়ে করিডোরস অব বাংলাদেশ বাই ইনট্রোডাকশন অব ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (আইটিএস)’ শীর্ষক প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

সংশ্লিষ্টদের আশা, আইটিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে মহাসড়কে যানবাহনে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি চালকদের গতি নিয়ন্ত্রণে বাধ্য করা ও নিয়ম ভাঙার বিরুদ্ধে ত্বরিৎ ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে। সেইসঙ্গে, দুর্ঘটনার পর ‘তাৎক্ষণিক সহায়তা’ কার্যক্রমে এই ব্যাবস্থা ‘বড় ধরনের ভূমিকা’ রাখবে।

আইটিএস প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. তানভীর সিদ্দিকী সংবাদকে বলেন, ‘এই প্রজেক্ট বাস্তবায়নের ফলে একটি নেটওয়ার্ক ডেভলপ কারা সম্ভব হবে। এর ফলে ট্রাফিক নজরদারি, এনফোর্সমেন্ট (প্রয়োগ), দুর্ঘটনা নজরদারি ও ট্রাফিক জ্যাম সম্পর্কে জানা সম্ভব হবে।’

প্রকল্পের আওতায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে স্থাপন করা হবে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সেন্টার। যেখান থেকে এ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে দেশের সবচেয়ে দ্রুতগতির সড়ক ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে এই পদ্ধতি চালু করা হবে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই সড়কে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে দুর্ঘটনাও বেড়েছে। এটি সফল হলে পর্যায়ক্রমে সারাদেশের প্রধান সড়কগুলো এই পদ্ধতির আওতায় আসবে।

তানভীর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের এই প্রোজেক্টে তিনটা কম্পোনেন্ট। প্রথমত পাইলট প্রোজেক্ট, দ্বিতীয়ত মাস্টার প্ল্যান, তৃতীয়ত ক্যাপাসিটি বিল্ডিং।’

বিষয়টির ব্যাখা করে তিনি বলেন, ‘পাইলট প্রজেক্টে আছে আমাদের এন-৮ রোডে (ঢাকা থেকে মাওয়া রোড) বেশ কিছু ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বসাবো। সেগুলো হলো সিসিটিভি, ইবিএস, ইএমএস এরকম কিছু ক্যামেরা বসাবো। এমন প্রায় একশ’টি ডিভাইস বসবে। এই একশ’টি ডিভাইসকে কানেক্ট করে আমাদের আরএইচডি হেড কোয়ার্টারে ট্যাফিক ম্যানেজমেন্ট সেন্টার করা হবে। এই ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সেন্টার (টিএমসি) হতে আমরা ওই রোডটাকে মনিটর করবো।’

অর্থাৎ এর মাধ্যমে ওই সড়কের যানবাহনের মুভমেন্ট বা চলাচল, ওভার স্পিডিং অর্থাৎ দ্রুত গতিসহ যত কম্পোনেন্ট বা বিষয় আছে সব মনিটর বা পর্যবেক্ষণ করা হবে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা জোন) মো. সবুজ উদ্দিন খান সংবাদকে বলেন, ‘এটি একটি আধুনিক ও নতুন সিস্টেম। এর মাধ্যমে যানবাহনগুলোকে রিয়েল টাইম মনিটরিং করা হবে। ফলে কোথায় যানজট আছে বা কোন সমস্যা আছে কি না সেসব নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে। ফলে দুর্ঘটনা অনেক কমে আসবে।’

‘এছাড়া কোন গাড়ির গতিবিধি সন্দেহজনক কি না সেটা মনিটরিং করা হবে। সেই অনুযায়ী হাইওয়ে পুলিশকে এবং আমাদের যে মনিটরিং সেন্টার আছে তাদের কাছে খবর চলে যাবে। আমাদের যারা প্যাট্রল টিম থাকবে তারা সঙ্গে সঙ্গে অর্থাৎ ৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে চলে যাবে। আমাদের এই মনিটরিং ২৪ ঘণ্টা থাকবে।’

এ ব্যবস্থা চালু হলে নির্ধারিত সড়কে নির্দিষ্ট গতিসীমার মধ্যে যান চলাচল এবং নির্দিষ্ট লেইন মেনে চলতে চালকদের বাধ্য করার সুযোগ তৈরি হবে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।

তবে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশে প্রযুক্তিনির্ভর অবকাঠামোগুলোর ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত নাজুক। সেইসঙ্গে আইটিএসের মতো অত্যাধুনিক ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি ‘সঠিকভাবে’ চালনা করার মতো ‘দক্ষ’ লোকের অভাবের কারণে খুব একটা কাজে আসবে না। তাদের মতে, এ ধরনের প্রযুক্তি তখনই কাজ করবে যখন সড়ক অবকাঠামো থাকবে উন্নতমানের। চালকরা হবে শিক্ষিত ও দক্ষ। চালকদের মধ্যে শৃঙ্খলা মেনে গাড়ি চালানোর প্রবণতা থাকবে। সড়কে কোন ধরনের ‘অবৈধ’ ও ‘ফিটনেসবিহীন’ যানবাহন চলাচল করবে না।

আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগে পৃথিবীর প্রতিটা দেশই প্রযুক্তিনির্ভর ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের যত সুবিধা সেটাকে কাজে লাগিয়ে সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে সেটা ‘ইনিস্টিটিশানাল কালচার’ বা ‘প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতি’ হিসেবে গড়ে ওঠেনি বলে মনে করেন সড়ক যোগাযোগ খাতের বিশেষজ্ঞ বুয়েটের পুর কৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামসুল হক। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘প্রযুক্তিনির্ভর জিনিসগুলোর ইনফাস্ট্রাকচারটা (অবকাঠামো) অত্যন্ত নাজুক। সড়কে যখন একটা সিসি টিভি লাগানো হয় তখন সেটি বছরের পর বছর থাকে না, কিছুদিন পরেই নষ্ট হতে থাকে। নষ্ট হওয়ার পর মেইনটেইনেন্স (রক্ষণাবেক্ষণ) দরকার হয়, কিন্তু সেগুলো করা হয় না। এরপর চুরি হতে থাকে। আমাদের এনালগ সিস্টেমেই যদি এমন অবহেলার সাক্ষী হয় তাহলে পরের ধাপটা তো আরও বেশি পেশাদার হতে হবে, কিন্তু সেই চিন্তা আমাদের নেই।’

প্রকল্পটির মোট ব্যয়ের সরকারি তহবিল থেকে আসবে ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং কোরিয়া ঋণ সহায়তা দেবে ৮৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতীয় মহাসড়কের (এন-৮) ৪০ কিলোমিটার সড়কে পরীক্ষামূলক চালুর জন্য প্রকল্প নিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।